ঢাকা ০৩:৩৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৭ মে ২০২৫, ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

গাজায় ইসরায়েলি হামলা একদিনে ১৪৩ জন নিহত, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার

উত্তর গাজা উপত্যকার জাবালিয়ায় ইসরায়েলি হামলার স্থানটি পরিদর্শন করছেন ফিলিস্তিনিরা। ছবি : এএফপি

নাকবা দিবসের ৭৭তম বার্ষিকীতে গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ভোর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় কমপক্ষে ১৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আল-তাওবা ক্লিনিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ক্লিনিকের উপরের তলা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে থাকা রোগীরা ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। হামলায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটল যখন ফিলিস্তিনিরা তাদের ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় নাকবা দিবস পালন করছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় সাত লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত বা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সেই জাতিগত নির্মূল অভিযানের প্রতীক এই দিনটি। দীর্ঘকাল ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের এটি একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও এক লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

অন্য দিকে হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক এক হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি জিম্মি হয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশেও কঠোর বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলছে, যেখানে গাজায় চালানো যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মোদিকে শরীফের কড়া হুঁশিয়ারি

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

গাজায় ইসরায়েলি হামলা একদিনে ১৪৩ জন নিহত, মৃতের সংখ্যা ছাড়াল ৫৩ হাজার

আপডেট সময় ১০:৪১:৫৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ মে ২০২৫

নাকবা দিবসের ৭৭তম বার্ষিকীতে গাজায় ভয়াবহ হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি বাহিনী। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (১৫ মে) ভোর থেকে শুরু হওয়া এই হামলায় কমপক্ষে ১৪৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (১৬ মে) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে আল-তাওবা ক্লিনিকে ইসরায়েলি বিমান হামলায় সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। ক্লিনিকের উপরের তলা সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। সেখানে থাকা রোগীরা ছিন্নভিন্ন অবস্থায় পড়ে ছিলেন। হামলায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে শিশুরাও রয়েছে।

এই হামলা এমন এক সময়ে ঘটল যখন ফিলিস্তিনিরা তাদের ইতিহাসের এক কালো অধ্যায় নাকবা দিবস পালন করছে। ১৯৪৮ সালে ইসরায়েলি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় প্রায় সাত লাখ ফিলিস্তিনি তাদের ঘরবাড়ি থেকে বিতাড়িত বা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সেই জাতিগত নির্মূল অভিযানের প্রতীক এই দিনটি। দীর্ঘকাল ধরে চলা ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের এটি একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ইসরায়েলের হামলায় এ পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৩ হাজার ১০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া আরও এক লাখ ১৯ হাজার ৯১৯ জন আহত হয়েছেন। ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও বহু নিখোঁজ রয়েছেন।

তবে সরকারি মিডিয়া অফিসের দাবি মৃতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়িয়ে গেছে।

অন্য দিকে হামাসের ওই হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক এক হাজার ১৩৯ জন নিহত এবং ২০০ জনেরও বেশি জিম্মি হয়েছিলেন।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে এবং অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে।

তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু স্পষ্ট জানিয়েছেন যে, হামাসকে নির্মূল না করা পর্যন্ত তাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত থাকবে। গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশেও কঠোর বাধা দেওয়া হচ্ছে, যা দুর্ভিক্ষের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ করে তুলেছে।

গাজায় ইসরায়েলি হামলার ঘটনায় ২০২৩ সালের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং তৎকালীন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গ্যালান্টের বিরুদ্ধে গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছিল।

এছাড়া, আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলাও চলছে, যেখানে গাজায় চালানো যুদ্ধকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে।

মোদিকে শরীফের কড়া হুঁশিয়ারি