ইরানে হামলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, তবে তিনি এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেননি বলে জানিয়েছে মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএস।
একজন শীর্ষ গোয়েন্দা সূত্র সিবিএসকে জানিয়েছে, ইরান যদি তার পরমাণু কর্মসূচি পরিত্যাগ করে, সে আশায় ট্রাম্প এখনও হামলা চালাতে দেরি করছেন। হামলার লক্ষ্যে ইরানের ভূগর্ভস্থ ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কেন্দ্র ‘ফোরদো’ টার্গেট হতে পারে বলে জানা গেছে। খবর বিবিসির।
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বুধবার (১৮ জুন) এক ভাষণে ট্রাম্পের “নির্বিচার আত্মসমর্পণের” দাবি প্রত্যাখ্যান করেন এবং বলেন, “যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হস্তক্ষেপের চড়া মূল্য দিতে হবে। ইরানি জাতি কখনও আত্মসমর্পণ করবে না।”
জবাবে ট্রাম্প বলেন, “ভালই হয়েছে, শুভকামনা,” তবে আবারও স্পষ্ট কোনো পরিকল্পনা প্রকাশ করেননি। তিনি বলেন, “কেউই জানে না আমি কী করব।”
ইসরায়েল ইতোমধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটি ও পারমাণবিক স্থাপনাগুলিতে হামলা চালিয়েছে। জবাবে ইরান হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
ওয়াশিংটনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা জানায়, ইসরায়েলের হামলায় এখন পর্যন্ত ইরানে ৫৮৫ জন নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে ২৩৯ জন বেসামরিক এবং ১২৬ জন নিরাপত্তা কর্মী।
ইরান পাল্টা হামলায় ইসরায়েলে প্রায় ৪০০ ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে বলে জানিয়েছে দেশটির কর্তৃপক্ষ। এতে ২৪ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সিনেটে জানিয়েছেন, “প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যদি আদেশ দেন, পেন্টাগন সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে।”
ইতোমধ্যে ইউএসএস নিমিটজ ও ইউএসএস কার্ল ভিনসন নেতৃত্বাধীন দুটি বিমানবাহী রণতরী বাহিনী মধ্যপ্রাচ্যের দিকে এগিয়ে গেছে। ইউরোপ থেকে জ্বালানি ট্যাংকার ও এফ-২২, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানকেও মোতায়েন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামির সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও’র বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হবে ইরান সংকট।
তবে এখন পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র ব্রিটিশ সামরিক ঘাঁটি দিয়েগো গার্সিয়া বা সাইপ্রাস থেকে হামলা চালাতে আনুষ্ঠানিক অনুমতি চায়নি। ব্রিটিশ সূত্র বলছে, “ওয়াশিংটনে সব বিকল্প খোলা রাখা হয়েছে, তবে এখনো সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেই।”
এদিকে, ইসরায়েলস্থ মার্কিন দূতাবাস বুধবার মার্কিন নাগরিকদের জন্য একটি জরুরি অপসারণ পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে। কতজন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ইসরায়েল ছাড়তে চাইছেন, বা সেনাবাহিনী এই প্রক্রিয়ায় সহায়তা করবে কি না — তা এখনও স্পষ্ট নয়।
অপরদিকে, ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের স্যাটেলাইট সম্প্রচারে হ্যাকিংয়ের ঘটনা ঘটেছে। হ্যাকাররা একটি ভিডিও প্রচার করে জনগণকে ‘ভবিষ্যত নিজেদের হাতে তুলে নিতে’ আহ্বান জানায় এবং ২০২২ সালের সরকারবিরোধী বিক্ষোভের দৃশ্য দেখায়।
ইরানি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন বলেছে, “টিভি দেখতে গিয়ে কোনো অপ্রাসঙ্গিক বার্তা দেখলে বুঝবেন — শত্রুপক্ষ স্যাটেলাইট সিগনালে বাধা দিচ্ছে।”