ঢাকা ০৭:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের আহ্বান উপদেষ্টা আসিফের সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা : গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের কাছেও হার বাংলাদেশের; কঠিন সমীকরণে বিশ্বকাপ ভাগ্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হাসিনাসহ ১২ জনের নামে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন মুসলিম সংখ্যলঘুদের নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের প্রত্যাখ্যান সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন নয় : গোলাম পরওয়ার সরকারের কাজ-কামে দেশবাসী খুবই উদ্বিগ্ন : শামসুজ্জামান দুদু দর্শনায় পুলিশ কনস্টেবলের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার ইয়েমেনে যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা; নিহত ৩৮

ওরা আমাদের গর্বিত করেছে

ইভা আলমাস
আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের গর্বিত করেছে। অথচ এই কিছুদিন আগেও ওদের কত তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছি, কত বকাঝকা করেছি! মোবাইল হাতে দেখলেই মেজাজ খারাপ করেছি। আমার বড় মেয়ে তো আরেক ধাপ এগিয়ে মেয়েকে ইন্টার পাশের আগে মোবাইলই দিলো না! কারণ ঐ যে একটাই, মেয়ে গোল্লায় যাবে। এখন কী হলো?
ওরা নেট দুনিয়ায় শুধু এডাল্ট ফিল্ম, টিকটক, ইমো, ভাইভার নিয়ে ব্যস্ত বলে যে অন্ধকারে আমরা ছিলাম, এতোদিনের মুখ বুজে থাকা পোলাপানগুলা আমাদের সঠিক সময়ে সঠিক উত্তরটা দিয়ে দিলো, তাও আবার মুখে নয় কাজে। আমি যখনই ওদের চোখমুখ দেখছি তখনই নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে মা-বাবা হিসেবে আমরা ব্যর্থ, আমরা আমাদের সন্তানদের বুঝতেই পারিনি!
ওরা আসলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিখেছে কী করে দেশকে ভালবাসতে হয়, কী করে স্বচ্ছ জীবন যাপন করতে হয়, কী করে অযথা সময় নষ্ট না করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, কী করে বন্ধুর মুখে হাসি ফোটাতে হয়। আমরা ওদের এসব কিচ্ছুই শেখাইনি ওরা নিজেরাই নিজেদের মূল্যবোধটা গ্রো করেছে। কারণ আমরা তো বাচ্চাদের বেশিরভাগ সময়ই “না” শেখাই। ওর সাথে চলবি না, ঐ কথা বলবি না, ওখানে যাবি না, সেখানে খাবি না ইত্যাদি। কিন্তু ওরা আমাদের এই “না”এর বাউন্ডারিতে থেকেও শিখে নিয়েছে কী করে ন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়, কী করে সহপাঠীকে বুকে জড়িয়ে রেখে বিপদে পাশে দাঁড়াতে হয়, কী করেই বা ছোট্ট বুকটাকে প্রসারিত করে একাই প্রাচীর হতে হয়। আমরা তো ওদের এসব শিখাইনি, এমনকি আমাদের শিক্ষা কারিকুলামেও এসব নেই। তাহলে ওরা কোথায় পেলো এই সিলেবাস? ইন্টারনেট ওদের শিখিয়েছে দূরত্ব বলে কিছু নেই পৃথিবীতে। উত্তর মেরুতে ঢেউ উঠলে সেই ঢেউ দক্ষিণ মেরুতেও আছড়ে পড়বে। আজ বুঝতে পারছি নেট দুনিয়া আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কত বড় সহায়ক উপকরণ। আজ এই নেট দুনিয়ার জন্য বাচ্চারা জেনে গেছে বায়ান্নতে কী হয়েছিলো, একাত্তরে কী হয়েছিলো, এমনকি আমাদের মূল সংবিধানে কী ছিলো। তারা আজ সত্য-মিথ্যার ফারাকটা বুঝে গেছে গুগল সার্চ করেই। আমরা কখনো বাচ্চাদের সঠিক ইতিহাস জানাতে পারিনি। ওরা নিজ তাগিদেই জেনে নিয়েছে। ওরা যখন এসব জানছে আমরা তখন বেডরুমে হায় হায় করছি নেট আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিলো ভেবে। কোথায় আছি আমরা! ছেলেমেয়েদের শান্তিতে ব্রাউজিংও করতে দেই না!
আহা পোলাপান, তোমাদের নিয়ে বড় গর্ব হয় আমার। আমাদের আগের জেনারেশন ছিলো তোমাদের মতো বীর বাঙালি আর আমরা হলাম ভীতুর ডিম জেনারেশন। মার খেয়েও মলম দেয়ার কথা ভাবতে পারিনি ভয়ে। আর সেই ডিমের ভেতর থেকেই কী না আবার তোমরা বীর হয়ে বেরিয়ে এলে!
আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন, আমরা তোমাদের সাথে আছি। ন্যায়সংগত অধিকারকে আল্লাহ কখনো হারতে দেননি। নিশ্চয়ই আল্লাহ এই অন্ধকার দূর করবেন। প্রাণ ভরে দোয়া করছি তোমাদের, আমার সোনার টুকরা সন্তানদের। আল্লাহর হাতে সোপর্দ করলাম আমার কলিজার টুকরাদের…
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

রাজশাহীতে সোনালী ব্যাংকের বিভাগীয় ব্যবসায়িক সম্মেলন অনুষ্ঠিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ওরা আমাদের গর্বিত করেছে

আপডেট সময় ১২:১৪:০৬ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩ অগাস্ট ২০২৪
ইভা আলমাস
আমাদের ছেলেমেয়েরা আমাদের গর্বিত করেছে। অথচ এই কিছুদিন আগেও ওদের কত তুচ্ছতাচ্ছিল্য করেছি, কত বকাঝকা করেছি! মোবাইল হাতে দেখলেই মেজাজ খারাপ করেছি। আমার বড় মেয়ে তো আরেক ধাপ এগিয়ে মেয়েকে ইন্টার পাশের আগে মোবাইলই দিলো না! কারণ ঐ যে একটাই, মেয়ে গোল্লায় যাবে। এখন কী হলো?
ওরা নেট দুনিয়ায় শুধু এডাল্ট ফিল্ম, টিকটক, ইমো, ভাইভার নিয়ে ব্যস্ত বলে যে অন্ধকারে আমরা ছিলাম, এতোদিনের মুখ বুজে থাকা পোলাপানগুলা আমাদের সঠিক সময়ে সঠিক উত্তরটা দিয়ে দিলো, তাও আবার মুখে নয় কাজে। আমি যখনই ওদের চোখমুখ দেখছি তখনই নিজেকে অপরাধী মনে হচ্ছে। মনে হচ্ছে মা-বাবা হিসেবে আমরা ব্যর্থ, আমরা আমাদের সন্তানদের বুঝতেই পারিনি!
ওরা আসলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিখেছে কী করে দেশকে ভালবাসতে হয়, কী করে স্বচ্ছ জীবন যাপন করতে হয়, কী করে অযথা সময় নষ্ট না করে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে হয়, কী করে বন্ধুর মুখে হাসি ফোটাতে হয়। আমরা ওদের এসব কিচ্ছুই শেখাইনি ওরা নিজেরাই নিজেদের মূল্যবোধটা গ্রো করেছে। কারণ আমরা তো বাচ্চাদের বেশিরভাগ সময়ই “না” শেখাই। ওর সাথে চলবি না, ঐ কথা বলবি না, ওখানে যাবি না, সেখানে খাবি না ইত্যাদি। কিন্তু ওরা আমাদের এই “না”এর বাউন্ডারিতে থেকেও শিখে নিয়েছে কী করে ন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে হয়, কী করে সহপাঠীকে বুকে জড়িয়ে রেখে বিপদে পাশে দাঁড়াতে হয়, কী করেই বা ছোট্ট বুকটাকে প্রসারিত করে একাই প্রাচীর হতে হয়। আমরা তো ওদের এসব শিখাইনি, এমনকি আমাদের শিক্ষা কারিকুলামেও এসব নেই। তাহলে ওরা কোথায় পেলো এই সিলেবাস? ইন্টারনেট ওদের শিখিয়েছে দূরত্ব বলে কিছু নেই পৃথিবীতে। উত্তর মেরুতে ঢেউ উঠলে সেই ঢেউ দক্ষিণ মেরুতেও আছড়ে পড়বে। আজ বুঝতে পারছি নেট দুনিয়া আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য কত বড় সহায়ক উপকরণ। আজ এই নেট দুনিয়ার জন্য বাচ্চারা জেনে গেছে বায়ান্নতে কী হয়েছিলো, একাত্তরে কী হয়েছিলো, এমনকি আমাদের মূল সংবিধানে কী ছিলো। তারা আজ সত্য-মিথ্যার ফারাকটা বুঝে গেছে গুগল সার্চ করেই। আমরা কখনো বাচ্চাদের সঠিক ইতিহাস জানাতে পারিনি। ওরা নিজ তাগিদেই জেনে নিয়েছে। ওরা যখন এসব জানছে আমরা তখন বেডরুমে হায় হায় করছি নেট আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ শেষ করে দিলো ভেবে। কোথায় আছি আমরা! ছেলেমেয়েদের শান্তিতে ব্রাউজিংও করতে দেই না!
আহা পোলাপান, তোমাদের নিয়ে বড় গর্ব হয় আমার। আমাদের আগের জেনারেশন ছিলো তোমাদের মতো বীর বাঙালি আর আমরা হলাম ভীতুর ডিম জেনারেশন। মার খেয়েও মলম দেয়ার কথা ভাবতে পারিনি ভয়ে। আর সেই ডিমের ভেতর থেকেই কী না আবার তোমরা বীর হয়ে বেরিয়ে এলে!
আল্লাহ তোমাদের সাথে আছেন, আমরা তোমাদের সাথে আছি। ন্যায়সংগত অধিকারকে আল্লাহ কখনো হারতে দেননি। নিশ্চয়ই আল্লাহ এই অন্ধকার দূর করবেন। প্রাণ ভরে দোয়া করছি তোমাদের, আমার সোনার টুকরা সন্তানদের। আল্লাহর হাতে সোপর্দ করলাম আমার কলিজার টুকরাদের…
আরো পড়ুন : কোটা সংস্কার: বেকারত্বের সমস্যা সমাধান কী আদৌ হবে?