ঢাকা ০৬:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০২ জুলাই ২০২৪, ১৮ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রাম্য বিয়ের সেকাল-একাল

গ্রাম্য বিয়ের সেকাল-একাল
মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

বিয়ের দিন সকাল বেলা সাজ সাজ রব বাড়িতে
মা-চাচি দিতেন বরের গোসল কাপড় ধোঁয়া পিঁড়িতে।
গোসলে দিতেন হলুদ বাটা, সাথে দুবলা ধান
তাতে নাকি জামাই বাবুর বাড়তো অনেক মান।
যদি থাকতো ভাবিরা, পানি ঢালতো গায়
দেবরকে দিতেন কাতুকুতু আদর স্নেহ মায়ায়।
যাবার আগে পাঞ্জাবী পড়ায় দিতেন বাপ-মায়
আশির্বাদের চুম্বন এঁকে দিতেন বিদায় বেলায়।
বর যেতো পাল্কী চড়ে, বরযাত্রীরা পায়ে
বর্ষাকালে যেত সবাই পালতোলা নায়ে।
কলাগাছের গেট বানাতো কনের পরিবার
বর গেলে কিশোর কিশোরী ধরতো আবদার।
পাচ’শ টাকা পেলেই হতো খুশিতে আটখানা
পাটালী গুড়ের নাস্তা দিয়ে শুরু হতো খানা।
শামিয়ানার নিচে চাদর বিছায়ে বসতো লোকজন
সারি সারি বসে সবাই সেরে নিতো ভোজন।
গোস্ত ভাত ডাল দিয়ে আহার করার পর
পাল্কী করে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরতো বর।

এ সব এখন অতীত স্মৃতি আধুনিক ছোঁয়ায়
সাজানো দামি গাড়ি চড়ে এখন বর যায়।
কনেকে সাজায় না বান্ধবীরা, যায় পার্লারে
শেরওয়ানী বর নিজেই পড়ে ডাকে না বাপ-মারে।
সামনে পিছে গাড়ির বহর জৌলুসে ভরা
কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে হয়, নিয়ে সেটি ভাড়া।
বিয়েতে এখন বেলেল্লাপনা- এটাই নাকি রীতি
আগের মতো নেই যদিও ভালবাসা-সম্প্রীতি।
গায়ে হলুদে নাচানাচি- অশ্লীল সব সাজ
বিয়ে বাড়িতে গানে মাতে হারায়ে সব লাজ।
রোস্ট রেজালা কোর্মা পোলাও সাথে বোরহানী
মিষ্টি পান আইস ক্রীম, আরো ফুস পানি।
আহার শেষে রাত দুপুরে বউ নিয়ে ফেরে বর
অপেক্ষায় থাকে তখন আলোকময় বাসর।

ধুমধাম যতই হোক নেই আগের সে প্রাণ
আগের দিনের বিয়ের স্মৃতি রয়েছে অম্লান।

আরো পড়ুন : কত কিছুই না ইচ্ছে করে…

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

গ্রাম্য বিয়ের সেকাল-একাল

আপডেট সময় ১১:২৬:১১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪

গ্রাম্য বিয়ের সেকাল-একাল
মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

বিয়ের দিন সকাল বেলা সাজ সাজ রব বাড়িতে
মা-চাচি দিতেন বরের গোসল কাপড় ধোঁয়া পিঁড়িতে।
গোসলে দিতেন হলুদ বাটা, সাথে দুবলা ধান
তাতে নাকি জামাই বাবুর বাড়তো অনেক মান।
যদি থাকতো ভাবিরা, পানি ঢালতো গায়
দেবরকে দিতেন কাতুকুতু আদর স্নেহ মায়ায়।
যাবার আগে পাঞ্জাবী পড়ায় দিতেন বাপ-মায়
আশির্বাদের চুম্বন এঁকে দিতেন বিদায় বেলায়।
বর যেতো পাল্কী চড়ে, বরযাত্রীরা পায়ে
বর্ষাকালে যেত সবাই পালতোলা নায়ে।
কলাগাছের গেট বানাতো কনের পরিবার
বর গেলে কিশোর কিশোরী ধরতো আবদার।
পাচ’শ টাকা পেলেই হতো খুশিতে আটখানা
পাটালী গুড়ের নাস্তা দিয়ে শুরু হতো খানা।
শামিয়ানার নিচে চাদর বিছায়ে বসতো লোকজন
সারি সারি বসে সবাই সেরে নিতো ভোজন।
গোস্ত ভাত ডাল দিয়ে আহার করার পর
পাল্কী করে বউ নিয়ে বাড়ি ফিরতো বর।

এ সব এখন অতীত স্মৃতি আধুনিক ছোঁয়ায়
সাজানো দামি গাড়ি চড়ে এখন বর যায়।
কনেকে সাজায় না বান্ধবীরা, যায় পার্লারে
শেরওয়ানী বর নিজেই পড়ে ডাকে না বাপ-মারে।
সামনে পিছে গাড়ির বহর জৌলুসে ভরা
কমিউনিটি সেন্টারে বিয়ে হয়, নিয়ে সেটি ভাড়া।
বিয়েতে এখন বেলেল্লাপনা- এটাই নাকি রীতি
আগের মতো নেই যদিও ভালবাসা-সম্প্রীতি।
গায়ে হলুদে নাচানাচি- অশ্লীল সব সাজ
বিয়ে বাড়িতে গানে মাতে হারায়ে সব লাজ।
রোস্ট রেজালা কোর্মা পোলাও সাথে বোরহানী
মিষ্টি পান আইস ক্রীম, আরো ফুস পানি।
আহার শেষে রাত দুপুরে বউ নিয়ে ফেরে বর
অপেক্ষায় থাকে তখন আলোকময় বাসর।

ধুমধাম যতই হোক নেই আগের সে প্রাণ
আগের দিনের বিয়ের স্মৃতি রয়েছে অম্লান।

আরো পড়ুন : কত কিছুই না ইচ্ছে করে…