ঢাকা ১২:৩৯ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদসহ ৫ জনের নামে মামলা সাড়ে ৯ লাখ টাকার জুতা পরেন সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান মেগা প্রজেক্টের নামে দেশটাকে শেষ করে দিয়েছে শেখ হাসিনা সরকার : বিএনপি মহাসচিব জার্মানিতে ব্যাটারিচালিত ট্রেনের যুগে টেসলার অভিষেক সেনাবাহিনীকে সবখানে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেওয়া ঠিক হবে না: ফখরুল অর্পিত দায়িত্ব পালনে সবার সহযোগিতা চাইলেন সংবিধান সংস্কার কমিশনের প্রধান দেশে গ্যাস-বিদ্যুতের ঘাটতি হবে না : উপদেষ্টা ফাওজুল কবির যুক্তরাষ্ট্রে ইউনূস-মোদি বৈঠক হচ্ছে না চয়নিকার সিনেমায় দেবকে নায়ক হিসেবে চান , নায়িকা কে হবেন? ঢাবিতে যুবক ও জাবিতে ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যা: আইন হাতে তুলে না নিতে আহ্বান

এক নজরে হযরত মোহাম্মদ স.

জন্ম: ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আওয়াল, সোমবার, সুবেহ সাদেকের সময়।
জন্মস্থান: বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরী
বংশ: তৎকালীন প্রখ্যাত কোরাইশ বংশে
পিতা নাম: আবদুল্লাহ
মাতার নাম: আমেনা
দাদার নাম: আব্দুল মুত্তালেব, আসল নাম-আমের। এছাড়া তিনি অনেকের কাছে শায়বা নামেও পরিচিতি ছিলেন।
দাদির নাম: ফাতেমা বিনতে আমর ইবনুল আয়েয
নানার নাম: ওহাব
নানীর নাম: বাররা
ধাত্রীমাতার নাম: ফাতেমা বিনতে আবদুল্লাহ। উনি ছিলেন ওসমান ইবনে আবু আ’সের মাতা।
দুধমাতার নাম: হালিমা
নবীজির নাম: নবীজির প্রধান নাম ছিলেন ৫টি- মোহাম্মদ (সর্বাধিক প্রশংসিত, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীদের সবচেয়ে আখেরী নবীর প্রশংসা করতেন), আহমদ (সর্বাধিক প্রশংসাকারী, নবীজি সবচেয়ে বেশি আল্লাহর প্রশংসা করতেন), আক্কেব (কুফুরীকে ধ্বংসের যাঁর আবির্ভাব), মাহী (সর্বশেষ আগমনকারী, উনার পর আর কোন নবী পৃথিবীতে আসবেন না) এবং হাশের (হাশরের মাঠে অগ্রবর্তী ব্যক্তি। নবীজি কিয়ামতের দিন হাশরের মাঠে এই নাম ধারণ করে উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন)। এছাড়া উপনাম আছে অনেক, যেমন-আলামিন, আবুল কাসেম।
যবান মোবরকের প্রথম বাক্য: হযরত হালীমা (রা:) বর্ণনা করেন, যে আমি মহানবী স. এর দুধ ছাড়ালাম, তখন তাঁর যবান মোবরকে এই কয়টি বাক্য উচ্চারিত হয়েছিল। “আল্লাহু আকবার কাবীরা ওয়ালহামদুলিল্লাহি হামদান কাছিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়াঅসিলা”।
নবীজির চৌদ্দ পূরুষের নাম: আবদুল্লাহ, আবদুল মুত্তালেব, হাশেম, আবদে মুনাফ, কুসাই, কেলাব, মুররাহ, কাব, লুয়াই, গালব, ফেহর (কোরায়েশ), মালেক, নজর, কেনানা।
পিতার মৃত্যু: নবীজির জন্মের পূর্বে পিতা আবদুল্লাহ মাত্র ২৫ পঁচিশ বছর বয়সে এবং বিয়ের মাত্র এক বছর পর মৃত্যুবরণ করেন। সিরিয়া থেকে বাণিজ্য থেকে ফেরার পথে বনী আদী ইবনে নাজ্জারের আবাসস্থলে কাছাকাছি একটি স্থানে কবর দেয়া হয়। (বর্তমান মসজিদে নববীর পাশে চিহ্নিত করা আছে)।
মাতার মৃত্যু: পিতৃহারা নবীর বয়স যখন মাত্র ছয় বছর তখন পিতার কবর দেখতে গিয়েছিলেন মায়ের সাথে। কবর দেখে ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে মা আমেনা মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।
বাল্যজীবন: মহানবীর প্রথম দুধ-মা হন সুয়াইবাহ নামক এক মহিলা। পরে হালীমাহ আস সাদীয়াহ শিশু মুহাম্মদ স. কে নিয়ে এলেন চির স্বাধীন মরু বেদুইনদের মাঝে। ছয় বছর বয়সে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। নবীজির বয়স যখন আট বছর তখন দাদা আবদুল মুত্তালিবও মারা যান। এবার চাচা আবু তালিব মুহাম্মদ স. লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
হিলফুল ফুজুল: যুদ্ধ ছিলো আরবদের নেশা। শত শত পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো। মানুষের কোন নিরাপত্তা ছিলো না। সবাই আতংকের মধ্যে দিন কাটাতো। আয যুবাইর ইবনু আবদিল মুত্তালিব ছিলেন একজন কল্যাণকামী ব্যক্তি। তিনি এই অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে মত বিনিময় করেন। অনুকুল সাড়াও পেলেন। গড়ে উঠলো একটি সংগঠন। নাম তার হিলফুল ফুজুল। মহানবীর বয়স তখন সতের বছর। তিনি সানন্দে এই সংগঠনের অন্তর্ভূক্ত হন।
হিলফুল ফুজুলের পাঁচ দফা: ১। আমরা দেশ থেকে অশান্তি দূর করবো। ২। পথিকের জান-মালের হিফাজাত করবো। ৩। অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করবো। ৪। মাযলুমের সাহায্য করবো। ৫। কোন যালিমকে মক্কায় আশ্রয় দেবো না।
ব্যবসায়ী মুহাম্মদ স.: মুহাম্মদ স. এর চাচা আবু তালিব একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিশোর মুহাম্মদ স. চাচার সাথে ব্যবসা উপলক্ষে সিরিয়া সফর করেন। যৌবনে তিনি নিজে ব্যবসা শুরু করেন। লোকেরা তাঁর সততায় মুগ্ধ ছিলো। অনেকেই মূলধন দিয়ে তাঁর সাথে ব্যবসায় শরীক হতে লাগলো। ব্যবসায়িক প্রয়োজন তিনি সিরিয়া, বসরা, বাহরাইন ও ইয়েমেন গমন করেন।
ছিনাচাক: হুজুর পাক স. এর মোট চারবার ছিনাচাক করা হয়। ১ম বার চার বছর বয়সে, ২য় বার দশ বছর বয়সে, ৩য় বার ওহী নাজিলের পূর্বে এবং ৪র্থ বার মেরাজ গমনের পূর্বমুহুর্তে।
কর্মজীবন: কর্মজীবনে নবীজি চাচা আবু তালেবের সাথে ব্যবসার উদ্দেশ্যে মাত্র ১২ বৎসর বয়সে সিরিয়া গমন করেন।
বৈবাহিক বিবরণ: ১ম স্ত্রী: বিবি খাদিজা (রা.), ২য় স্ত্রী: সাওদা (রা.), ৩য় স্ত্রী: আয়েশা (রা.), ৪র্থ স্ত্রী: হাফসা (রা.), ৫ম স্ত্রী: যয়নব (রা.), ৬ষ্ঠ স্ত্রী: উম্মে সালমা (রা.), ৭ম স্ত্রী: যয়নব বিনতে জাহ্্শ (রা.), ৮ম স্ত্রী: জুয়াইবিরয়্যা (রা.)। ৯ম স্ত্রী: উম্মে হাবীবা (রা.), ১০ম স্ত্রী: সাফিয়্যা (রা.), ১১তম স্ত্রী: মায়মুনা (রা.), ১২তম স্ত্রী: রায়হানা বিনতে শামউন (রা.) এবং ১৩তম স্ত্রী: মিসরের কিবতী নারী মারিয়া কিবতিয়া (রা.)।
সন্তানাদির পরিচয়: হযরত নবী করিম স, এর মোট আওলাদের সংখ্যা ছিল সাত জন। তিন পুত্র ও চার কন্যা। এঁদের মধ্যে প্রথম ছয়জনই ছিলেন হযরত খাদীজার রা. গর্ভজাত।
পুত্র: ১ম পুত্র: আবুল হযরত কাসেম। এঁর নামানুসারে নবীজীকে স. আবুল কাসেম অর্থাৎ কাসেমের পিতা নামে ডাকা হতো। হযরত কাসেম যখন সবেমাত্র হাঁটতে শিখেছেন তখনই তাঁর ইন্তেকাল হয়। ২য় পুত্র: আব্দুল্লাহ। তাঁকে তৈয়াব এবং তাহের নামেও ডাকা হতো। নবুওত প্রাপ্তির পর এঁর জন্ম হয়। কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন এ বয়সেই তিনি ইন্তেকাল করেন। দুজনের মাতা ছিলেন খাদীজা (রা.)। ৩য় পুত্র: ইবরাহীম। মাতার নাম হযরত মারিয়া কিবতিয়্যা। হিজরী ৯ সালের জামাদিউল আওয়াল মাসে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮ মাস বয়সে হিজরী ১০ সালের ২৯ শাওয়াল তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।
কন্যা: ১ম কন্যা: হযরত সাইয়্যেদা যয়নব (রা.), ২য় কন্যা: হযরত রুকাইয়্যা (রা.)। ৩য় কন্যা: উম্মে কুলসুম (রা.) এবং ৪র্থ কন্যা: হযরত ফাতেমা (রা.)।
ওহী নাযিলের তারিখ ও স্থান: নবী করীম স. এর প্রতি হেরাগুহায় হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর আগমন হয় সর্বপ্রথম ১২ মতান্তরে ৯ রবিউল আওয়াল তারিখে। ঈসায়ী সন তারিখের হিসেবে দিনটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি, সোমবার। হিজরী বিগত শতাব্দীর একজন শীর্ষস্থানীয় হাদীস তত্ত্ববিদ হযরত আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (র:) এর তাওকীক অনুযায়ী চব্বিশ হাজার বার প্রিয় নবীর স. এর নিকট ওহী নিয়ে হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর আগমন ঘটেছিল। (মলফুযাতে মোহাদ্দেস কাশ্মীরী)।
নামায ও রোযা শুরুর তারিখ: হযরত উসানা ইবনে যায়েদ রা. তাঁর পিতা হযরত যায়েদ রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ ইরশাদ করেন, “আমার প্রতি ওহী নাযিল হওয়ার প্রাথমিক অবস্থাতেই হযরত জিবরাঈল (আঃ) আমাকে ওজুর নিয়ম শিক্ষা দেন এবং আমাকে দিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়েন। পরবর্তিতে সুরা গাফেরের ৫৫নং আয়াত নাযিল হওয়ার পর সূর্যোদয়ের আগেই দুই রাকাত এবং সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণে দুই রাকাত মোট দুই ওয়াক্তে চার রাকাত নামাজ ফরজ হয়। এর সাথে হুকুম নাযিল হয় তাহাজ্জুদের নামায পড়ার। পরবর্তিতে হিজরতের আগে মে’রাজের সময় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়। রোজা ফরজ হয় হিজরী ২য় সনের শাবান মাসের শেষ ভাগে।
হিজরত: মহানবী স. মোট দুইবার হিজরত করেছিলেন। প্রথমবার হিজরী ৫ম সনে হাবশায় এবং দ্বিতীয়বার হিজরী ১৩ সনে মদীনায়। যে কারণে নবীজিকে বলা হয় “ছাহেবুল হিজরাতাইন”। প্রথম হিজরতে তিনি নিজ দেশ ত্যাগ না করলেও এর বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনায় নেতৃত্ব ছিল তাঁরই।
মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত: নবুওয়াত প্রাপ্তি ত্রয়োদশ সনের ২৭শে সফর তারিখ রাতে হযরত মোহাম্মদ স. হযরত আবু বকর রা. কে সাথে নিয়ে মক্কা থেকে বের হন। দীর্ঘ এগার দিন পথ চলার পর ১২ই রবিউল আওয়াল সোমবার মদীনায় এসে উপস্থিত হন।
মদীনা শরীফের পূর্বের নাম : মদীনার পূর্ব নাম ছিল ইয়াসরব। হিজরতের পর নবীজি এই স্থানটি বেছে নিলে সেখানকার নামকরণ করা হয় মদীনাতুন নবী বা নবীর শহর।
নবীর জীবনে জেহাদ: নবী করীম স. এর জীবদ্দশায় মোট ২৭টি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। এছাড়া ছোট বড় অন্যান্য অভিযান মিলিয়ে সশস্ত্র অভিযানের সংখ্যা ছিল ৮২টি। তাঁর মধ্যে নবী স. স্বয়ং ৮টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৮২টি সশস্ত্র অভিযানে সর্বমোট লোক নিহত হয়েছিলেন ১০১৮ জন। তন্মধ্যে মুসলিম শহীদের সংখ্যা ছিল ২৫১ জন। প্রতিপক্ষের নিহতের পরিমাণ ৭৫৯ জন। কোন যুদ্ধেই হযরত রসূলে করীম স. প্রতিপক্ষের উপর অস্ত্র প্রয়োগ করেননি। ফলে তাঁর দ্বারা কেউ নিহত বা আহত হয়নি। ৮ম হিজরীতে হুনাইন যুদ্ধের সময় শত্রুপক্ষের এক ব্যক্তি হঠাৎ নবীজির স. এর উপর আক্রমণ করলে হুযুর স. একটা গাছের ডাল দিয়ে তার গায়ে আঘাত করেছিলেন। এছাড়া জীবনে তিনি কাউকে কখনও নিজ হাতে আঘাত করেননি।
হুদাইবিয়ার সন্ধি: হযরত রসুলে করীম স. এর সাথে মক্কার কাফেরদের সাথে হিজরী ৬ সালে হোদায়বিয়া নামক স্থানে একটি বাবলা গাছের নীচে সন্ধি করেন। ইতিহাসে যা হোদায়বিয়ার সন্ধি বা চুক্তি নামে পরিচিত।
মক্কা বিজয়: তের বছর মক্কার কাফেরদের জুলুম নির্যাতনের পর মক্কা বিজিত হয়। মক্কা বিজয়ের দিন কাবা শরীফ প্রাঙ্গনের সকল মূর্তি অপসারণ করা হয়।
প্রথম ঈদের নামায: হিজরী দ্বিতীয় সালে রোযা ফরজ হয়। এ বছরই রোযার পর মসজিদে নববীর অদূরে, বাসগৃহ থেকে হাজার গজ পশ্চিমে খোলা জায়গায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রিয় নবী স. জামাতের ইমামতি করেন। পরবর্তীতে সেখানে ‘মাসজিদুল গামামা’ নামে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
প্রথম জুমার নামায: ১ম হিজরীর ১২ই রবিউল আওয়াল, (হিজরতের চৌদ্দদিন পর) ৬২২ খৃষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখ শুক্রবার বনী সালেমের পল্লীতে নবী করীম স. প্রথম জুমার নামায আদায় করেন।
হজ্ব ও বিদায় হজ্ব: নবুওয়ত প্রাপ্তির আগে হযরত নবী করীম স. অনেকবার হজ্ব করেছেন। তবে তা করেছেন তদানীন্তন আরব রীতি অনুযায়ী। আর ইসলামের পরিশুদ্ধ রীতি অনুযায়ী হজ্ব একবারই করেছেন হিজরী দশ সনে অর্থাৎ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার তিন মাস পূর্বে যা বিদায় হজ্ব নামে পরিচিত।
নবীজির শেষ মসজিদের নামাজ: নবীজি স. ওফাতের দুইদিন পূর্বে অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ রবিউল আওয়াল শনিবার জোহরের নামায মসজিদে আদায় করেন। এ সময় তিনি অসুস্থতার জন্য দুই জনের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদে তাশরীফ আনেন। এ সময় হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. ইমামতি করেন। নবীর স. এর জীবদ্দশায় হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. নবীজির স. বিদায়ের চারদিন পূর্বে বৃহস্পতিবার এশার নামায থেকে মোট সতের ওয়াক্ত নামাযের ইমামতি করেন।
ওফাত: হিজরী ১১ সনের ১২ই রবিউল আওয়াল, ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন সোমবার আনুমানিক বেলা ১১ ঘটিকার সময় মহানবী স. পার্থিব জীবন শেষ করেন।
জানাযা: নবী পাকের কোন আনুষ্ঠানিক জানাযা হয়নি। ওফাতের আগে প্রদত্ত নির্দেশ অনযায়ী পবিত্র দেহ মোবারক গোসল ও কাফন পরানোর পর হুজরার মধ্যে রাখা হয়েছিল। লোকেরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে হুজরায় ভেতর প্রবেশ করতেন এবং প্রত্যেকেই নিজে নিজে ছালাত ও সালাম পেশ করতেন। এভাবে মদীনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজার লোক জানাযা পাঠ করেন।
কবর খনন: কবর খনন করেছিলেন হযরত আবু তালহা আনসারী রা.।
কবর মোবারকে কে নেমেছিলেন: ১৪ই রবিউল আওয়াল বুধবার মাগরিবের পূর্বে, ওফাতের আনুমানিক ৭২ ঘন্টা পর নবীজির স. পরিত্র দেহ মোবারক কবরে অবতরণ করা হয়। এতে অংশ নেন হযরত আলী (রা.), হযরত আব্বাস (রা.) এবং তাঁর ছেলে ফজল (রা) ও কাসাম (রা.)।

আরো পড়ুন : মীলাদুন্নবীর তাৎপর্য

 

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সাবেক সেনাপ্রধান আজিজ আহমেদসহ ৫ জনের নামে মামলা

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

এক নজরে হযরত মোহাম্মদ স.

আপডেট সময় ০৭:৪৯:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৪

জন্ম: ৫৭০ খ্রিষ্টাব্দে ১২ই রবিউল আওয়াল, সোমবার, সুবেহ সাদেকের সময়।
জন্মস্থান: বর্তমান সৌদি আরবের মক্কা নগরী
বংশ: তৎকালীন প্রখ্যাত কোরাইশ বংশে
পিতা নাম: আবদুল্লাহ
মাতার নাম: আমেনা
দাদার নাম: আব্দুল মুত্তালেব, আসল নাম-আমের। এছাড়া তিনি অনেকের কাছে শায়বা নামেও পরিচিতি ছিলেন।
দাদির নাম: ফাতেমা বিনতে আমর ইবনুল আয়েয
নানার নাম: ওহাব
নানীর নাম: বাররা
ধাত্রীমাতার নাম: ফাতেমা বিনতে আবদুল্লাহ। উনি ছিলেন ওসমান ইবনে আবু আ’সের মাতা।
দুধমাতার নাম: হালিমা
নবীজির নাম: নবীজির প্রধান নাম ছিলেন ৫টি- মোহাম্মদ (সর্বাধিক প্রশংসিত, আল্লাহ রাব্বুল আলামিন নবীদের সবচেয়ে আখেরী নবীর প্রশংসা করতেন), আহমদ (সর্বাধিক প্রশংসাকারী, নবীজি সবচেয়ে বেশি আল্লাহর প্রশংসা করতেন), আক্কেব (কুফুরীকে ধ্বংসের যাঁর আবির্ভাব), মাহী (সর্বশেষ আগমনকারী, উনার পর আর কোন নবী পৃথিবীতে আসবেন না) এবং হাশের (হাশরের মাঠে অগ্রবর্তী ব্যক্তি। নবীজি কিয়ামতের দিন হাশরের মাঠে এই নাম ধারণ করে উম্মতের জন্য সুপারিশ করবেন)। এছাড়া উপনাম আছে অনেক, যেমন-আলামিন, আবুল কাসেম।
যবান মোবরকের প্রথম বাক্য: হযরত হালীমা (রা:) বর্ণনা করেন, যে আমি মহানবী স. এর দুধ ছাড়ালাম, তখন তাঁর যবান মোবরকে এই কয়টি বাক্য উচ্চারিত হয়েছিল। “আল্লাহু আকবার কাবীরা ওয়ালহামদুলিল্লাহি হামদান কাছিরা ওয়া সুবহানাল্লাহি বুকরাতাও ওয়াঅসিলা”।
নবীজির চৌদ্দ পূরুষের নাম: আবদুল্লাহ, আবদুল মুত্তালেব, হাশেম, আবদে মুনাফ, কুসাই, কেলাব, মুররাহ, কাব, লুয়াই, গালব, ফেহর (কোরায়েশ), মালেক, নজর, কেনানা।
পিতার মৃত্যু: নবীজির জন্মের পূর্বে পিতা আবদুল্লাহ মাত্র ২৫ পঁচিশ বছর বয়সে এবং বিয়ের মাত্র এক বছর পর মৃত্যুবরণ করেন। সিরিয়া থেকে বাণিজ্য থেকে ফেরার পথে বনী আদী ইবনে নাজ্জারের আবাসস্থলে কাছাকাছি একটি স্থানে কবর দেয়া হয়। (বর্তমান মসজিদে নববীর পাশে চিহ্নিত করা আছে)।
মাতার মৃত্যু: পিতৃহারা নবীর বয়স যখন মাত্র ছয় বছর তখন পিতার কবর দেখতে গিয়েছিলেন মায়ের সাথে। কবর দেখে ফেরার পথে আবওয়া নামক স্থানে মা আমেনা মৃত্যুবরণ করেন এবং সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।
বাল্যজীবন: মহানবীর প্রথম দুধ-মা হন সুয়াইবাহ নামক এক মহিলা। পরে হালীমাহ আস সাদীয়াহ শিশু মুহাম্মদ স. কে নিয়ে এলেন চির স্বাধীন মরু বেদুইনদের মাঝে। ছয় বছর বয়সে ফিরে আসেন মায়ের কাছে। নবীজির বয়স যখন আট বছর তখন দাদা আবদুল মুত্তালিবও মারা যান। এবার চাচা আবু তালিব মুহাম্মদ স. লালন-পালনের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
হিলফুল ফুজুল: যুদ্ধ ছিলো আরবদের নেশা। শত শত পরিবার ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলো। মানুষের কোন নিরাপত্তা ছিলো না। সবাই আতংকের মধ্যে দিন কাটাতো। আয যুবাইর ইবনু আবদিল মুত্তালিব ছিলেন একজন কল্যাণকামী ব্যক্তি। তিনি এই অবস্থার পরিবর্তনের লক্ষ্যে বিভিন্ন ব্যক্তির সাথে মত বিনিময় করেন। অনুকুল সাড়াও পেলেন। গড়ে উঠলো একটি সংগঠন। নাম তার হিলফুল ফুজুল। মহানবীর বয়স তখন সতের বছর। তিনি সানন্দে এই সংগঠনের অন্তর্ভূক্ত হন।
হিলফুল ফুজুলের পাঁচ দফা: ১। আমরা দেশ থেকে অশান্তি দূর করবো। ২। পথিকের জান-মালের হিফাজাত করবো। ৩। অভাবগ্রস্থদের সাহায্য করবো। ৪। মাযলুমের সাহায্য করবো। ৫। কোন যালিমকে মক্কায় আশ্রয় দেবো না।
ব্যবসায়ী মুহাম্মদ স.: মুহাম্মদ স. এর চাচা আবু তালিব একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। কিশোর মুহাম্মদ স. চাচার সাথে ব্যবসা উপলক্ষে সিরিয়া সফর করেন। যৌবনে তিনি নিজে ব্যবসা শুরু করেন। লোকেরা তাঁর সততায় মুগ্ধ ছিলো। অনেকেই মূলধন দিয়ে তাঁর সাথে ব্যবসায় শরীক হতে লাগলো। ব্যবসায়িক প্রয়োজন তিনি সিরিয়া, বসরা, বাহরাইন ও ইয়েমেন গমন করেন।
ছিনাচাক: হুজুর পাক স. এর মোট চারবার ছিনাচাক করা হয়। ১ম বার চার বছর বয়সে, ২য় বার দশ বছর বয়সে, ৩য় বার ওহী নাজিলের পূর্বে এবং ৪র্থ বার মেরাজ গমনের পূর্বমুহুর্তে।
কর্মজীবন: কর্মজীবনে নবীজি চাচা আবু তালেবের সাথে ব্যবসার উদ্দেশ্যে মাত্র ১২ বৎসর বয়সে সিরিয়া গমন করেন।
বৈবাহিক বিবরণ: ১ম স্ত্রী: বিবি খাদিজা (রা.), ২য় স্ত্রী: সাওদা (রা.), ৩য় স্ত্রী: আয়েশা (রা.), ৪র্থ স্ত্রী: হাফসা (রা.), ৫ম স্ত্রী: যয়নব (রা.), ৬ষ্ঠ স্ত্রী: উম্মে সালমা (রা.), ৭ম স্ত্রী: যয়নব বিনতে জাহ্্শ (রা.), ৮ম স্ত্রী: জুয়াইবিরয়্যা (রা.)। ৯ম স্ত্রী: উম্মে হাবীবা (রা.), ১০ম স্ত্রী: সাফিয়্যা (রা.), ১১তম স্ত্রী: মায়মুনা (রা.), ১২তম স্ত্রী: রায়হানা বিনতে শামউন (রা.) এবং ১৩তম স্ত্রী: মিসরের কিবতী নারী মারিয়া কিবতিয়া (রা.)।
সন্তানাদির পরিচয়: হযরত নবী করিম স, এর মোট আওলাদের সংখ্যা ছিল সাত জন। তিন পুত্র ও চার কন্যা। এঁদের মধ্যে প্রথম ছয়জনই ছিলেন হযরত খাদীজার রা. গর্ভজাত।
পুত্র: ১ম পুত্র: আবুল হযরত কাসেম। এঁর নামানুসারে নবীজীকে স. আবুল কাসেম অর্থাৎ কাসেমের পিতা নামে ডাকা হতো। হযরত কাসেম যখন সবেমাত্র হাঁটতে শিখেছেন তখনই তাঁর ইন্তেকাল হয়। ২য় পুত্র: আব্দুল্লাহ। তাঁকে তৈয়াব এবং তাহের নামেও ডাকা হতো। নবুওত প্রাপ্তির পর এঁর জন্ম হয়। কথাবার্তা বলতে শুরু করেছেন এ বয়সেই তিনি ইন্তেকাল করেন। দুজনের মাতা ছিলেন খাদীজা (রা.)। ৩য় পুত্র: ইবরাহীম। মাতার নাম হযরত মারিয়া কিবতিয়্যা। হিজরী ৯ সালের জামাদিউল আওয়াল মাসে মদীনায় জন্মগ্রহণ করেন এবং ১৮ মাস বয়সে হিজরী ১০ সালের ২৯ শাওয়াল তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।
কন্যা: ১ম কন্যা: হযরত সাইয়্যেদা যয়নব (রা.), ২য় কন্যা: হযরত রুকাইয়্যা (রা.)। ৩য় কন্যা: উম্মে কুলসুম (রা.) এবং ৪র্থ কন্যা: হযরত ফাতেমা (রা.)।
ওহী নাযিলের তারিখ ও স্থান: নবী করীম স. এর প্রতি হেরাগুহায় হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর আগমন হয় সর্বপ্রথম ১২ মতান্তরে ৯ রবিউল আওয়াল তারিখে। ঈসায়ী সন তারিখের হিসেবে দিনটি ছিল ৬১০ খৃষ্টাব্দের ১২ ফেব্রুয়ারি, সোমবার। হিজরী বিগত শতাব্দীর একজন শীর্ষস্থানীয় হাদীস তত্ত্ববিদ হযরত আনওয়ার শাহ কাশ্মীরী (র:) এর তাওকীক অনুযায়ী চব্বিশ হাজার বার প্রিয় নবীর স. এর নিকট ওহী নিয়ে হযরত জিবরাঈল (আঃ) এর আগমন ঘটেছিল। (মলফুযাতে মোহাদ্দেস কাশ্মীরী)।
নামায ও রোযা শুরুর তারিখ: হযরত উসানা ইবনে যায়েদ রা. তাঁর পিতা হযরত যায়েদ রা. থেকে বর্ণনা করেন যে, রসুলুল্লাহ ইরশাদ করেন, “আমার প্রতি ওহী নাযিল হওয়ার প্রাথমিক অবস্থাতেই হযরত জিবরাঈল (আঃ) আমাকে ওজুর নিয়ম শিক্ষা দেন এবং আমাকে দিয়ে দুই রাকাত নামাজ পড়েন। পরবর্তিতে সুরা গাফেরের ৫৫নং আয়াত নাযিল হওয়ার পর সূর্যোদয়ের আগেই দুই রাকাত এবং সূর্যাস্তের পূর্বক্ষণে দুই রাকাত মোট দুই ওয়াক্তে চার রাকাত নামাজ ফরজ হয়। এর সাথে হুকুম নাযিল হয় তাহাজ্জুদের নামায পড়ার। পরবর্তিতে হিজরতের আগে মে’রাজের সময় দৈনিক পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরজ করা হয়। রোজা ফরজ হয় হিজরী ২য় সনের শাবান মাসের শেষ ভাগে।
হিজরত: মহানবী স. মোট দুইবার হিজরত করেছিলেন। প্রথমবার হিজরী ৫ম সনে হাবশায় এবং দ্বিতীয়বার হিজরী ১৩ সনে মদীনায়। যে কারণে নবীজিকে বলা হয় “ছাহেবুল হিজরাতাইন”। প্রথম হিজরতে তিনি নিজ দেশ ত্যাগ না করলেও এর বাস্তবায়ন ও পরিকল্পনায় নেতৃত্ব ছিল তাঁরই।
মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত: নবুওয়াত প্রাপ্তি ত্রয়োদশ সনের ২৭শে সফর তারিখ রাতে হযরত মোহাম্মদ স. হযরত আবু বকর রা. কে সাথে নিয়ে মক্কা থেকে বের হন। দীর্ঘ এগার দিন পথ চলার পর ১২ই রবিউল আওয়াল সোমবার মদীনায় এসে উপস্থিত হন।
মদীনা শরীফের পূর্বের নাম : মদীনার পূর্ব নাম ছিল ইয়াসরব। হিজরতের পর নবীজি এই স্থানটি বেছে নিলে সেখানকার নামকরণ করা হয় মদীনাতুন নবী বা নবীর শহর।
নবীর জীবনে জেহাদ: নবী করীম স. এর জীবদ্দশায় মোট ২৭টি যুদ্ধ সংঘঠিত হয়েছিল। এছাড়া ছোট বড় অন্যান্য অভিযান মিলিয়ে সশস্ত্র অভিযানের সংখ্যা ছিল ৮২টি। তাঁর মধ্যে নবী স. স্বয়ং ৮টি যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ৮২টি সশস্ত্র অভিযানে সর্বমোট লোক নিহত হয়েছিলেন ১০১৮ জন। তন্মধ্যে মুসলিম শহীদের সংখ্যা ছিল ২৫১ জন। প্রতিপক্ষের নিহতের পরিমাণ ৭৫৯ জন। কোন যুদ্ধেই হযরত রসূলে করীম স. প্রতিপক্ষের উপর অস্ত্র প্রয়োগ করেননি। ফলে তাঁর দ্বারা কেউ নিহত বা আহত হয়নি। ৮ম হিজরীতে হুনাইন যুদ্ধের সময় শত্রুপক্ষের এক ব্যক্তি হঠাৎ নবীজির স. এর উপর আক্রমণ করলে হুযুর স. একটা গাছের ডাল দিয়ে তার গায়ে আঘাত করেছিলেন। এছাড়া জীবনে তিনি কাউকে কখনও নিজ হাতে আঘাত করেননি।
হুদাইবিয়ার সন্ধি: হযরত রসুলে করীম স. এর সাথে মক্কার কাফেরদের সাথে হিজরী ৬ সালে হোদায়বিয়া নামক স্থানে একটি বাবলা গাছের নীচে সন্ধি করেন। ইতিহাসে যা হোদায়বিয়ার সন্ধি বা চুক্তি নামে পরিচিত।
মক্কা বিজয়: তের বছর মক্কার কাফেরদের জুলুম নির্যাতনের পর মক্কা বিজিত হয়। মক্কা বিজয়ের দিন কাবা শরীফ প্রাঙ্গনের সকল মূর্তি অপসারণ করা হয়।
প্রথম ঈদের নামায: হিজরী দ্বিতীয় সালে রোযা ফরজ হয়। এ বছরই রোযার পর মসজিদে নববীর অদূরে, বাসগৃহ থেকে হাজার গজ পশ্চিমে খোলা জায়গায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হয়। প্রিয় নবী স. জামাতের ইমামতি করেন। পরবর্তীতে সেখানে ‘মাসজিদুল গামামা’ নামে একটি মসজিদ নির্মিত হয়েছে।
প্রথম জুমার নামায: ১ম হিজরীর ১২ই রবিউল আওয়াল, (হিজরতের চৌদ্দদিন পর) ৬২২ খৃষ্টাব্দের ২৪ সেপ্টেম্বর তারিখ শুক্রবার বনী সালেমের পল্লীতে নবী করীম স. প্রথম জুমার নামায আদায় করেন।
হজ্ব ও বিদায় হজ্ব: নবুওয়ত প্রাপ্তির আগে হযরত নবী করীম স. অনেকবার হজ্ব করেছেন। তবে তা করেছেন তদানীন্তন আরব রীতি অনুযায়ী। আর ইসলামের পরিশুদ্ধ রীতি অনুযায়ী হজ্ব একবারই করেছেন হিজরী দশ সনে অর্থাৎ দুনিয়া থেকে বিদায় নেয়ার তিন মাস পূর্বে যা বিদায় হজ্ব নামে পরিচিত।
নবীজির শেষ মসজিদের নামাজ: নবীজি স. ওফাতের দুইদিন পূর্বে অর্থাৎ ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ১০ রবিউল আওয়াল শনিবার জোহরের নামায মসজিদে আদায় করেন। এ সময় তিনি অসুস্থতার জন্য দুই জনের কাঁধে ভর দিয়ে মসজিদে তাশরীফ আনেন। এ সময় হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. ইমামতি করেন। নবীর স. এর জীবদ্দশায় হযরত আবু বকর সিদ্দিক রা. নবীজির স. বিদায়ের চারদিন পূর্বে বৃহস্পতিবার এশার নামায থেকে মোট সতের ওয়াক্ত নামাযের ইমামতি করেন।
ওফাত: হিজরী ১১ সনের ১২ই রবিউল আওয়াল, ৬৩২ খ্রিষ্টাব্দের ৭ জুন সোমবার আনুমানিক বেলা ১১ ঘটিকার সময় মহানবী স. পার্থিব জীবন শেষ করেন।
জানাযা: নবী পাকের কোন আনুষ্ঠানিক জানাযা হয়নি। ওফাতের আগে প্রদত্ত নির্দেশ অনযায়ী পবিত্র দেহ মোবারক গোসল ও কাফন পরানোর পর হুজরার মধ্যে রাখা হয়েছিল। লোকেরা ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে হুজরায় ভেতর প্রবেশ করতেন এবং প্রত্যেকেই নিজে নিজে ছালাত ও সালাম পেশ করতেন। এভাবে মদীনা ও পার্শ্ববর্তী এলাকার প্রায় ত্রিশ হাজার লোক জানাযা পাঠ করেন।
কবর খনন: কবর খনন করেছিলেন হযরত আবু তালহা আনসারী রা.।
কবর মোবারকে কে নেমেছিলেন: ১৪ই রবিউল আওয়াল বুধবার মাগরিবের পূর্বে, ওফাতের আনুমানিক ৭২ ঘন্টা পর নবীজির স. পরিত্র দেহ মোবারক কবরে অবতরণ করা হয়। এতে অংশ নেন হযরত আলী (রা.), হযরত আব্বাস (রা.) এবং তাঁর ছেলে ফজল (রা) ও কাসাম (রা.)।

আরো পড়ুন : মীলাদুন্নবীর তাৎপর্য