মুসলমানদের জন্য পবিত্র মাহে রমজান মাস অনেক বেশি তাৎপর্যপূর্ণ। পবিত্র মাহে রমজান মাসে খাদ্যাভ্যাস, জীবন যাপন, পাশাপাশি খাবারের সময়—প্রতিটি বিষয়ে দেখা যায় পরিবর্তন। তাই আপনি যদি রমজান মাসে সকল রোজা রাখতে চান, তবে আপনাকে অবশ্যই একটি পরিমিত এবং পুষ্টিকর খাবার অনুসরণ করতে হবে। যা দেহে শক্তি ধরে রাখতে পারে।
রোজায় অধিকাংশ মানুষই পানিশূন্যতায় ভুগে অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু রোজার মধ্যে সারা দিনের সুস্থতা অনেকাংশে আপনার ওপরই নির্ভর করে। সাহ্রীতে সঠিকভাবে খাদ্য নির্বাচন এবং কিছু বিষয় মেনে চললে সারা দিন সুস্থভাবেই কাটাতে পারবেন রোজা। সে জন্য কিছু বিষয় মেনে চলতে হবে।
প্রচণ্ড রোদে ও গরমে দেহ পানিশূন্য হয়ে যায়। তাই সাহ্রীতে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন। প্রায় আধা লিটারের মতো পানি পান করবেন। প্রয়োজনে আরো বেশি পান করুন, কিন্তু এর চেয়ে কম করবেন না।
দেহ পানিশূন্যতা হয়ে গেলে এমনিতেই শক্তি কমে যায়। তাই এমন খাবার খেতে হবে, যা দেহে শক্তি ধরে রাখতে পারে। প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যেমন—মাছ, মাংস, ডিম, দুধ খাবেন পরিমাণমতো। এতে ক্ষুধার উদ্রেকও কম হবে এবং শক্তিও থাকবে অনেক।
এ ছাড়া পানিসমৃদ্ধ ফল রাখা যেতে পারে সাহ্রীর তালিকায়। আনারস, কমলা, তরমুজ ইত্যাদি ধরনের ফল খান প্রতিদিনের সাহ্রীতে। এতে করেও পুরো দিন সুস্থ থাকতে পারবেন।
অনেকেরই সকালে চা-কফি পানের অভ্যাস রয়েছে। তারা রোজা রাখার কারণে সকালে চা-কফি পানের অভ্যাসটি সাহ্রীতেই নিয়ে আসেন। কিন্তু এই কাজ করতে যাবেন না। চা-কফির ক্যাফেইন দেহকে পানিশূন্য করে ফেলে। তাই সাহ্রীতে চা-কফি পান করা থেকে বিরত থাকুন।
অনেকেই পাউরুটি বা শুকনো খাবার খেয়ে রোজা রাখেন। এগুলো খেলে প্রচুর পানি পিপাসা লাগে। তাই রোজার সময়ে এই খাবারগুলো একেবারেই খাবেন না। বিশেষ করে প্রসেসড কার্বোহাইড্রেট খাবার স্বাভাবিকভাবে আপনার দেহে শক্তি সরবরাহ করবে, কিন্তু খুব অল্প সময়ের জন্য। তারপর আপনার দেহকে পানিশূন্য করে একেবারেই শক্তিহীন করে তুলবে। সুতরাং শুকনো ও প্রসেসড কার্বোহাইড্রেট থেকে দূরে থাকুন।
মিষ্টিজাতীয় খাবার অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকুন। মিষ্টি খাবার আপনার দেহের শক্তির মাত্রা একেবারেই নষ্ট করে দেবে। এতে আপনি দুর্বলতা অনুভব করবেন পুরো দিন।
সাহ্রীতে ভারী খাবার এবং অতিরিক্ত তেল-চর্বি ধরনের খাবার একেবারেই খাবেন না। বিশেষ করে খিচুড়ি, পোলাও বা বিরিয়ানি ধরনের খাবার তো একেবারেই নয়। কারণ, এগুলো পুরো দিনই আপনার পেটের সমস্যা ও অস্বস্তির জন্য দায়ী থাকবে।
রোজায় খেজুর খেতে হবে। কারণ খেজুর দেহের শক্তি ধরে রাখার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি খাবার। খেজুর যে শুধু ইফতারেই খেতে হবে এমন কোনো কথা নেই। সাহ্রীর সময়েও দুটো খেজুর খেয়ে নিতে পারেন। এতে করে পুরো দিন দেহে শক্তি পাবেন।