বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুধু তা-ই নয়, সোমবার দুপুরে বিধানসভার শীতকালীন অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানোর জন্য কেন্দ্র সরকারকে জাতিসংঘের সঙ্গে কথা বলার আর্জি জানান। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আমাদের প্রস্তাব, কেন্দ্র সরকার জাতিসংঘের কাছে বাংলাদেশে শান্তিরক্ষী পাঠানোর আর্জি জানাক।”
একই সঙ্গে বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কিংবা বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের বিবৃতি দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ নিয়ে সংসদে বিবৃতি দিন প্রধানমন্ত্রী। যদি তাঁর কোনও অসুবিধা থাকে, তবে বিদেশমন্ত্রী বিবৃতি দিন।” বাংলাদেশের সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে আরও এক বার দল এবং সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে তিনি জানান, এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের নেই। তাই তাঁরা কেন্দ্রের পরামর্শ মেনে চলবেন বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী।
বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হলে তার সরকার তা সহ্য করবে না বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, “যদি বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হন, তবে আমরা তা সহ্য করব না। আমরা তাদের সেখান থেকে ফিরিয়ে আনতে পারি।”এই প্রসঙ্গেই তাঁর সংযোজন, “আমাদের পরিবার, সম্পত্তি এবং প্রিয় মানুষেরা বাংলাদেশে আছেন। ভারত সরকার এই বিষয়ে (বাংলাদেশ) যে অবস্থান নেবে, আমরা তা গ্রহণ করব। কিন্তু বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ধর্মীয় কারণে কেউ অত্যাচারিত হলে আমরা তার নিন্দা জানাই। আমরা এই বিষয়ে ভারত সরকার এবং প্রধানমন্ত্রীকে হস্তক্ষেপ করার আর্জি জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ নিয়ে কেন্দ্র চুপ করে রয়েছে বলেও অভিযোগ তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে বিজেপিকে বলেন, “আমি গত ১০ দিন ধরে দেখছি কেন্দ্রীয় সরকার চুপ করে রয়েছে। অথচ তাদের দল বলছে সব আটকে দেব। কিন্তু এই বিষয়ে আমাদের কোনও এক্তিয়ার নেই।” মুখ্যমন্ত্রী বিধানসভায় জানান, ওয়াকফ বিল নিয়ে বিধানসভায় আলোচনার পর যে লিখিত প্রস্তাব কেন্দ্রের কাছে যাবে, তার সঙ্গে থাকবে তাঁর শান্তিসেনা সংক্রান্ত প্রস্তাবও।
বৃহস্পতিবারও বিধানসভার অধিবেশনে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে মমতা জানিয়েছিলেন, বাংলাদেশ নিয়ে দেশের সরকার যে সিদ্ধান্ত নেবে তিনি তার সঙ্গে আছেন। বুধবার সংসদের বাইরে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ প্রসঙ্গে প্রায় একই কথা বলেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বাংলাদেশের ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলেও মন্তব্য করেছিলেন তিনি। সুত্র : আনন্দবাজার