ঢাকা ০৫:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১৫ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-কলম্বিয়ার পাল্টাপাল্টি  হুমকি

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো। ছবি: এএফপি

কলম্বিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। খবর বিবিসির।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কলম্বিয়ার “সব পণ্যে” ২৫ শতাংশ শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে এই শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

আর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো পাল্টা ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো যখন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত অভিবাসীবাহী দুইটি মার্কিন সামরিক বিমানকে তার দেশে অবতরণ নিষিদ্ধ করেন।

গতকাল রোববার (২৬ জানুয়ারি) পেত্রো জানান, তিনি মার্কিন সামরিক বিমানের মাধ্যমে অভিবাসী ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেননি। তিনি বলেন, “আমাদের নাগরিকদের সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ না করে বেসামরিক বিমানের মাধ্যমে সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে।”

মার্কিন কর্মকর্তারা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, দুইটি সামরিক বিমান সান ডিয়েগো থেকে কলম্বিয়ায় অবতরণের কথা ছিল, তবে জটিলতার কারণে এই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে “তাৎক্ষণিক ও কঠোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ” ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কলম্বিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের মিত্র ও সমর্থকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেন, “জাতীয় নিরাপত্তার কারণে” কলম্বিয়ার পণ্য ও নাগরিকদের ওপর কাস্টমস এবং বর্ডার প্রটেকশনে অতিরিক্ত পরিদর্শন চালানো হবে।

ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, “এই পদক্ষেপ শুধু শুরু।” তিনি বলেন, কলম্বিয়ার সরকার তাদের আইনগত দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে “অপরাধীদের জোরপূর্বক পাঠানোর” জন্য দায়ী।

পেত্রো এর জবাবে টুইটারে কলম্বিয়ার ঐতিহ্য এবং শক্তিমত্তার প্রশংসা করে বলেন, “আপনার অবরোধ আমাকে ভয় জাগায় না। কলম্বিয়া সৌন্দর্যের দেশ, পৃথিবীর হৃদয়।”

পেত্রো অভিবাসীদের “সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর” জন্য নিজের বিমান ব্যবহারেরও প্রস্তাব দেন। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে কলম্বিয়ায় ১৫ হাজার ৬৬৬ জন অবৈধ মার্কিন নাগরিক অবস্থান করছে, যদিও এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

পেত্রো আরও বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের মতো অবৈধ মার্কিন নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য কোনো অভিযান পরিচালনা করবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়া থেকে প্রায় ২০ শতাংশ কফি আমদানি করে, যার মূল্য প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। শুল্ক আরোপের ফলে কফিসহ কলম্বিয়ার অন্যান্য পণ্য যেমন কলা, অপরিশোধিত তেল, অ্যাভোকাডো এবং ফুলের দাম বাড়তে পারে, যা মার্কিন ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

এদিকে, এই শুল্কের কারণে কলম্বিয়ার উৎপাদকরা তাদের প্রধান বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ কেবল বাণিজ্য যুদ্ধই নয়, বরং কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে।

উল্লেখ্য, পেত্রো এবং ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই উত্তপ্ত। পেত্রো এর আগেও ট্রাম্পের অভিবাসন ও পরিবেশ নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প “লোভের কারণে মানবজাতিকে ধ্বংস করতে চান” এবং কলম্বিয়ানদের “নিম্নতর জাতি” বলে বিবেচনা করেন।

তবে ট্রাম্প তার সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

সিক্রেট সার্ভিস প্রধানের নাম ঘোষণা করলেন ট্রাম্প

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

শুল্ক আরোপ নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র-কলম্বিয়ার পাল্টাপাল্টি  হুমকি

আপডেট সময় ১২:৪৭:১০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৭ জানুয়ারী ২০২৫

কলম্বিয়ার ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক এবং নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। একই সঙ্গে কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রোও যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন। খবর বিবিসির।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করা কলম্বিয়ার “সব পণ্যে” ২৫ শতাংশ শুল্ক অবিলম্বে কার্যকর হবে এবং এক সপ্তাহের মধ্যে এই শুল্ক ৫০ শতাংশে উন্নীত করা হবে।

আর কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো পাল্টা ঘোষণা দিয়েছেন, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের পণ্যের ওপর ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবেন।

এই সিদ্ধান্ত এমন এক সময় এলো যখন কলম্বিয়ার প্রেসিডেন্ট গুস্তাভো পেত্রো যুক্তরাষ্ট্র থেকে বহিষ্কৃত অভিবাসীবাহী দুইটি মার্কিন সামরিক বিমানকে তার দেশে অবতরণ নিষিদ্ধ করেন।

গতকাল রোববার (২৬ জানুয়ারি) পেত্রো জানান, তিনি মার্কিন সামরিক বিমানের মাধ্যমে অভিবাসী ফেরত পাঠানোর অনুমতি দেননি। তিনি বলেন, “আমাদের নাগরিকদের সঙ্গে অপরাধীর মতো আচরণ না করে বেসামরিক বিমানের মাধ্যমে সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠাতে হবে।”

মার্কিন কর্মকর্তারা সিবিএস নিউজকে জানিয়েছেন, দুইটি সামরিক বিমান সান ডিয়েগো থেকে কলম্বিয়ায় অবতরণের কথা ছিল, তবে জটিলতার কারণে এই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়।

এর প্রতিক্রিয়ায় ডোনাল্ড ট্রাম্প ট্রুথ সোশ্যাল প্ল্যাটফর্মে “তাৎক্ষণিক ও কঠোর প্রতিশোধমূলক পদক্ষেপ” ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, কলম্বিয়ার সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা এবং তাদের মিত্র ও সমর্থকদের ওপর ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে।

ট্রাম্প আরও ঘোষণা করেন, “জাতীয় নিরাপত্তার কারণে” কলম্বিয়ার পণ্য ও নাগরিকদের ওপর কাস্টমস এবং বর্ডার প্রটেকশনে অতিরিক্ত পরিদর্শন চালানো হবে।

ট্রাম্প সতর্ক করে বলেন, “এই পদক্ষেপ শুধু শুরু।” তিনি বলেন, কলম্বিয়ার সরকার তাদের আইনগত দায়িত্ব লঙ্ঘন করেছে এবং যুক্তরাষ্ট্রে “অপরাধীদের জোরপূর্বক পাঠানোর” জন্য দায়ী।

পেত্রো এর জবাবে টুইটারে কলম্বিয়ার ঐতিহ্য এবং শক্তিমত্তার প্রশংসা করে বলেন, “আপনার অবরোধ আমাকে ভয় জাগায় না। কলম্বিয়া সৌন্দর্যের দেশ, পৃথিবীর হৃদয়।”

পেত্রো অভিবাসীদের “সম্মানের সঙ্গে ফেরত পাঠানোর” জন্য নিজের বিমান ব্যবহারেরও প্রস্তাব দেন। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে কলম্বিয়ায় ১৫ হাজার ৬৬৬ জন অবৈধ মার্কিন নাগরিক অবস্থান করছে, যদিও এই সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

পেত্রো আরও বলেন, তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের মতো অবৈধ মার্কিন নাগরিকদের ফেরত পাঠানোর জন্য কোনো অভিযান পরিচালনা করবেন না।

যুক্তরাষ্ট্র কলম্বিয়া থেকে প্রায় ২০ শতাংশ কফি আমদানি করে, যার মূল্য প্রায় দুই বিলিয়ন ডলার। শুল্ক আরোপের ফলে কফিসহ কলম্বিয়ার অন্যান্য পণ্য যেমন কলা, অপরিশোধিত তেল, অ্যাভোকাডো এবং ফুলের দাম বাড়তে পারে, যা মার্কিন ভোক্তাদের ওপর প্রভাব ফেলবে।

এদিকে, এই শুল্কের কারণে কলম্বিয়ার উৎপাদকরা তাদের প্রধান বাজারে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারেন।

ট্রাম্প প্রশাসনের এ পদক্ষেপ কেবল বাণিজ্য যুদ্ধই নয়, বরং কূটনৈতিক উত্তেজনার ইঙ্গিত বহন করে।

উল্লেখ্য, পেত্রো এবং ট্রাম্পের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই উত্তপ্ত। পেত্রো এর আগেও ট্রাম্পের অভিবাসন ও পরিবেশ নীতির কঠোর সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেছেন, ট্রাম্প “লোভের কারণে মানবজাতিকে ধ্বংস করতে চান” এবং কলম্বিয়ানদের “নিম্নতর জাতি” বলে বিবেচনা করেন।

তবে ট্রাম্প তার সীমান্ত নিরাপত্তার প্রতিশ্রুতি পূরণের লক্ষ্যে অভিবাসন নীতিকে আরও কঠোর করার উদ্যোগ নিয়েছেন।

সিক্রেট সার্ভিস প্রধানের নাম ঘোষণা করলেন ট্রাম্প