ঢাকা ০৯:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শুল্ক নীতিতে ট্রাম্পের অনড় অবস্থানের কারণে বিশ্ব শেয়ারবাজারে ধস

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ব্যাপক শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ববাজারে সৃষ্ট উত্তাপকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বরং এই পদক্ষেপকে তিনি চিকিৎসার ‘ওষুধের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি এমন এক সময় এই মন্তব্য করলেন, যখন আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি করে যাচ্ছেন। খবর আল- জাজিরার।

স্থানীয় সময় রোববার (৬ এপিল) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “আমি চাই না কিছুই নিচে নামুক, কিন্তু কখনো কখনো কিছু ঠিক করতে ওষুধ খেতে হয়।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা অন্য দেশগুলোর দ্বারা এতটাই খারাপভাবে ব্যবহার হয়েছি, কারণ আমাদের নেতৃত্ব ছিল নির্বোধ। তারা আমাদের ব্যবসা, অর্থ, চাকরি কেড়ে নিয়েছে।”

ট্রাম্প তার কথিত “পাল্টা শুল্ক” নিয়ে অনড় থাকবেন জানিয়ে বলেন, যতক্ষণ না অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রাখে, ততক্ষণ তিনি পিছু হটবেন না।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “অনেক দেশের নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, যারা চুক্তি করতে মরিয়া। আমি তাদের বলেছি, আমরা তোমাদের সঙ্গে ঘাটতি রাখব না। ঘাটতি মানে আমার কাছে ক্ষতি। আমরা উদ্বৃত্ত রাখব বা অন্তত সমান সমান চলব।”

এই বক্তব্যের মধ্যেই বিশ্ব শেয়ারবাজারে বড় ধস দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, একটি পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দা সামনে চলে আসছে।

আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) তাইওয়ানের টিএআইইএক্স এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ৯ শতাংশ পড়ে যায়।

সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমস সূচক ৭ শতাংশের বেশি কমে যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কসপির পতন ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায় এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ প্রায় ৬ শতাংশ হ্রাস পায়।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারও বড় ধরনের পতনের মুখে, যেখানে গত সপ্তাহের দুই দিনের ধসেই বাজার থেকে ছয় ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি হারিয়ে গেছে।

রোববারই যুক্তরাষ্ট্র আমদানির ওপর ১০ শতাংশের একটি ভিত্তিক শুল্ক আরোপ করেছে, যা বুধবার থেকে আরও বাড়িয়ে ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করা হবে।

চীন, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী, এর বিপরীতে ৩৪ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে।

জবাবে বেইজিংও ঘোষণা দিয়েছে, তারা সব মার্কিন আমদানির ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেবে।

এই অস্থিরতার মধ্যে বিশ্লেষকরা আগামী ১২ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে বলে মনে করছেন।

জেপি মরগান গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশে উন্নীত করেছে, আর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল এই সম্ভাবনা ৩০-৩৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

রোববার এনবিসির মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, “মন্দা হতেই হবে এমন কিছু নেই… কে জানে আগামী একদিন বা এক সপ্তাহে বাজার কেমন আচরণ করবে”।

বেসেন্ট আরও বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করছি, যেখানে আগের প্রশাসন আমাদের একটি আর্থিক বিপর্যয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিল।”

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

শুল্ক নীতিতে ট্রাম্পের অনড় অবস্থানের কারণে বিশ্ব শেয়ারবাজারে ধস

আপডেট সময় ১০:২৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ব্যাপক শুল্ক নীতির কারণে বিশ্ববাজারে সৃষ্ট উত্তাপকে তেমন গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বরং এই পদক্ষেপকে তিনি চিকিৎসার ‘ওষুধের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি এমন এক সময় এই মন্তব্য করলেন, যখন আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে শেয়ার বিক্রি করে যাচ্ছেন। খবর আল- জাজিরার।

স্থানীয় সময় রোববার (৬ এপিল) এয়ার ফোর্স ওয়ানে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, “আমি চাই না কিছুই নিচে নামুক, কিন্তু কখনো কখনো কিছু ঠিক করতে ওষুধ খেতে হয়।”

ট্রাম্প আরও বলেন, “আমরা অন্য দেশগুলোর দ্বারা এতটাই খারাপভাবে ব্যবহার হয়েছি, কারণ আমাদের নেতৃত্ব ছিল নির্বোধ। তারা আমাদের ব্যবসা, অর্থ, চাকরি কেড়ে নিয়েছে।”

ট্রাম্প তার কথিত “পাল্টা শুল্ক” নিয়ে অনড় থাকবেন জানিয়ে বলেন, যতক্ষণ না অন্য দেশগুলো যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ভারসাম্য বজায় রাখে, ততক্ষণ তিনি পিছু হটবেন না।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, “অনেক দেশের নেতার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, যারা চুক্তি করতে মরিয়া। আমি তাদের বলেছি, আমরা তোমাদের সঙ্গে ঘাটতি রাখব না। ঘাটতি মানে আমার কাছে ক্ষতি। আমরা উদ্বৃত্ত রাখব বা অন্তত সমান সমান চলব।”

এই বক্তব্যের মধ্যেই বিশ্ব শেয়ারবাজারে বড় ধস দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কা, একটি পূর্ণমাত্রার বাণিজ্য যুদ্ধ এবং অর্থনৈতিক মন্দা সামনে চলে আসছে।

আজ সোমবার (৭ এপ্রিল) তাইওয়ানের টিএআইইএক্স এবং হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচক প্রায় ১০ শতাংশ হ্রাস পায়। জাপানের নিক্কেই ২২৫ সূচক প্রায় ৯ শতাংশ পড়ে যায়।

সিঙ্গাপুরের স্ট্রেইটস টাইমস সূচক ৭ শতাংশের বেশি কমে যায়, দক্ষিণ কোরিয়ার কসপির পতন ৫ শতাংশ ছাড়িয়ে যায় এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ প্রায় ৬ শতাংশ হ্রাস পায়।

যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারও বড় ধরনের পতনের মুখে, যেখানে গত সপ্তাহের দুই দিনের ধসেই বাজার থেকে ছয় ট্রিলিয়ন ডলারের বেশি হারিয়ে গেছে।

রোববারই যুক্তরাষ্ট্র আমদানির ওপর ১০ শতাংশের একটি ভিত্তিক শুল্ক আরোপ করেছে, যা বুধবার থেকে আরও বাড়িয়ে ১১ থেকে ৫০ শতাংশ পর্যন্ত করা হবে।

চীন, যেটি যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম বাণিজ্য অংশীদার এবং কৌশলগত প্রতিদ্বন্দ্বী, এর বিপরীতে ৩৪ শতাংশ শুল্কের মুখে পড়েছে।

জবাবে বেইজিংও ঘোষণা দিয়েছে, তারা সব মার্কিন আমদানির ওপর ৩৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ করবে এবং কিছু গুরুত্বপূর্ণ খনিজ পদার্থের রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেবে।

এই অস্থিরতার মধ্যে বিশ্লেষকরা আগামী ১২ মাসে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার সম্ভাবনা অনেক বেড়েছে বলে মনে করছেন।

জেপি মরগান গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রে মন্দার সম্ভাবনা ৬০ শতাংশে উন্নীত করেছে, আর এসঅ্যান্ডপি গ্লোবাল এই সম্ভাবনা ৩০-৩৫ শতাংশ বলে জানিয়েছে।

তবে ট্রাম্প প্রশাসনের কর্মকর্তারা অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কাকে গুরুত্ব দিতে নারাজ।

রোববার এনবিসির মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট বেসেন্ট বলেন, “মন্দা হতেই হবে এমন কিছু নেই… কে জানে আগামী একদিন বা এক সপ্তাহে বাজার কেমন আচরণ করবে”।

বেসেন্ট আরও বলেন, “আমরা দীর্ঘমেয়াদে অর্থনীতির ভিত্তি তৈরি করছি, যেখানে আগের প্রশাসন আমাদের একটি আর্থিক বিপর্যয়ের পথে নিয়ে যাচ্ছিল।”

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ড. ইউনূসকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান