সিরিয়ার বিদ্রোহী জোটের নেতৃত্ব দেওয়া গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শামকে (এইচটিএস) সরাসরি দেশটির নেতৃত্ব গ্রহণ না করে তার বদলে অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রক্রিয়া পরিচালনার মাধ্যমে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
এইচটিএসের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম যোগাযোগের বিষয়ে অবহিত করে এসব কথা জানান বাইডেন প্রশাসনের দুই কর্মকর্তা ও মার্কিন কংগ্রেসের এক সহযোগী।
এইচটিএসের নেতৃত্বাধীন বিদ্রোহীরা রোববার সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক দখল করে প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদের দীর্ঘদিনের শাসনের অবসান ঘটায়।
রয়টার্স জানায়, তুরস্কসহ যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যপ্রাচ্যের মিত্রদের মধ্যস্থতায় ওয়াশিংটনের সঙ্গে এইচটিএসের যোগাযোগ হয়। এই হায়াত তাহরির আল-শাম গোষ্ঠীটি আগে আল কায়েদার সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল আর একে যুক্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসী সংগঠনের তকমা দিয়ে রেখেছে।
ওই মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে একজন জানান, এই যোগাযোগের বিষয়ে বাইডেন প্রশাসন নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের টিমকেও সবকিছু জানাচ্ছে।
গত কয়েকদিন ধরে এইচটিএসের সঙ্গে ওয়াশিংটনের আলোচনা হয়েছে। হঠাৎ করে আসাদের পতন হওয়ায় সিরিয়ায় যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তার মধ্যে দেশটির বিভিন্ন গোষ্ঠীর সঙ্গে সমন্বয় করার বড় ধরনের প্রচেষ্টা শুরু করছে ওয়াশিংটন। এইচটিএসের সঙ্গে আলোচনা সেই প্রচেষ্টারই অংশ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই মার্কিন কর্মকর্তা জানান, গোষ্ঠীটিকে সিরিয়ার জন্য একটি আনুষ্ঠানিক শাসন কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রাথমিক প্রচেষ্টায় পথ দেখিয়ে সহায়তা করার বার্তা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
তবে এসব বার্তা সরাসরি দেওয়া হয়েছে না মধ্যবর্তী কারও মাধ্যমে দেওয়া হয়েছে তা জানাতে রাজি হননি তিনি।
এই কর্মকর্তা জানান, আন্তর্বর্তী সরকারকে সিরিয়ার জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিনিধিত্ব করা উচিত বলে ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে এবং আনুষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নতুন নেতা বেছে নেওয়া ছাড়াই এইচটিএসের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেওয়াকে সমর্থন করবে না।
রয়টার্স জানায়, এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি।
যুক্তরাষ্ট্র ২০১৩ সালে এইচটিএসের নেতা আহমেদ আল-শারাকে (আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি নামেই বেশি পরিচিত) সন্ত্রাসীর তকমা দেয়। তারা বলেছিল, ইরাকের আল কায়েদা আসাদকে ক্ষমতা থেকে উচ্ছেদের জন্য শারাকে দায়িত্ব দিয়ে সিরিয়ায় ইসলামিক শরিয়া আইন প্রতিষ্ঠা করতে বলেছিল। এইচটিএসের পূর্বসূরী নুসরা ফ্রন্ট সিরিয়াজুড়ে আত্মঘাতী হামলা চালিয়ে বেসামরিকদের হত্যা করেছিল এবং সহিংস সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করতো।
ওই কর্মকর্তা জানান, ভবিষ্যৎ সিরিয়া সরকারে জোলানির ভূমিকা কী হবে এবং তিনি এখনও চরমপন্থি মতাদর্শ পোষণ করেন কি না বাইডেন প্রশাসনের এ বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা নেই।
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন সিরিয়ার রাজনৈতিক পরিবর্তনের বিষয়ে মঙ্গলবার বলেন, ওয়াশিংটন সিরিয়ার সেই ভবিষ্যৎ সরকারকে স্বীকৃতি দেবে যারা বিশ্বাসযোগ্য, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও অসাম্প্রদায়িক শাসক হবে।