পঞ্জিকার পাতা থেকে গত হতে বসেছে আরেকটি বছর। শেষ বেলায় এসে জীবনের খাতায় যেমন চলছে সাফল্য-ব্যর্থতার হিসেব-নিকেশ, তেমনি ক্রীড়াঙ্গনেও আছে প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির নানা গল্প।
এবছর স্প্যানিশ ফুটবলের সাফল্য এমনই আকাশছোঁয়া যে, পেছন ফিরে তাকালে দলটির সমর্থকরা হয়তো বিস্মিত হবে। বিশ্ব ফুটবলের আরেক কোণায়, সাফল্যের মাপকাঠিতে আর্জেন্টাইনদের অর্জন অতটা পাহাড়সম না হলেও, তৃপ্তির ঢেকুর তুলতেই পারে তারা।
আর্জেন্টিনার ঠিক উল্টো অবস্থানে তাদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল। ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বছরটা তাদের এতটাই বাজে কেটেছে যে, সম্ভব হলে ভুলে যেতে চাইত তারা।
ফুটবলের সবুজ আঙিনায় ২০২৪ জন্ম দিয়েছে কতশত ঘটনা, আনন্দ-বেদনার মুহূর্ত। বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোরের পাঠকদের জন্য সেসবের উল্লেখযোগ্য অংশ তুলে ধরা হলো:
স্পেনের সাফল্যে রাঙা বছর
স্প্যানিশ ফুটবলের সোনালী যুগ কোনটি? উত্তর খুঁজতে গেলে শুরুতেই হয়তো মনের কোণে ভেসে উঠবে শাভি-ইনিয়েস্তা-কাসিয়াসদের সেই সর্বজয়ী দলের সেই সময়। তবে, আরেকটু নিবিড়ভাবে ভাবলে মনের পর্দায় উঁকি মারবে বর্তমান। সত্যিই তাই! এই বছরেই দেশের ফুটবল ইতিহাসে সবচেয়ে বেশি সাফল্য পেয়েছে স্পেন।
আন্তর্জাতিক ফুটবল থেকে ক্লাব ফুটবল, দলগত থেকে ব্যক্তিগত- সবখানে স্প্যানিশদের জয়জয়কার। এসবের মাঝে এবার অলিম্পিক ফুটবলেও সোনার হাসি হেসেছে স্প্যানিয়ার্ডরা।
সাফল্যের প্রতিটি পাতায় দিনশেষে কেবল জয়ের গল্পই লেখেনি তারা, আধিপত্য ছড়িয়ে কোথাও নিজেদের পুরোনো দাপটকে পোক্ত করেছে আরও, আবার কোথাও লিখেছে নতুনের জয়গান।
বিশ্ব ফুটবলে এবছর স্প্যানিশদের প্রথম উৎসব হয় মে মাসের ২৫ তারিখে, বার্সেলোনার সাফল্যের হাসি দিয়ে।
মেয়েদের ক্লাব ফুটবলের মহাদেশীয় পর্যায়ে সেরার কাতারে কাতালান ক্লাবটির উঠে আসার গল্প খুব পুরোনো নয়। ঘরোয়া ফুটবলে তারা নিয়মিত সাফল্য পেলেও দেশের বাইরে সেরা হয়ে উঠতে পারছিল না।
বলা যায়, সেই বাধা তারা টপকাতে শুরু করে ২০১৯ সালে। উয়েফা উইমেন’স চ্যাম্পিয়ন্স লিগে ওই বছরই প্রথমবার ফাইনালে ওঠে বার্সেলোনা। এরপর কেবলই সামনের পানে ছুটেছে দলটি।
একবছর পর তারা পরে ইউরোপ সেরা মুকুট। পরের মৌসুমে হয় রানার্সআপ এবং গত দুই মৌসুমে ফের চ্যাম্পিয়ন। সবশেষ গত মের ওই ফাইনালে টুর্নামেন্টের রেকর্ড চ্যাম্পিয়ন ফরাসি ক্লাব লিওঁকে হারিয়ে শিরোপা ধরে রাখে দলটি।
বার্সেলোনার ওই সাফল্যগাঁথায় বিশ্ব ফুটবলে আরেক জায়গায়ও নিজেদের আধিপত্য পোক্ত হয় স্প্যানিশ ফুটবলের। ওই আসরের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত স্পেনের তারকা মিডফিল্ডার আইতানা বনমাতি পরে টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নেয় বর্ষসেরা নারী ফুটবলারের পুরস্কার ব্যালন দ’র।
বনমাতিদের ওই সাফল্যের পর সপ্তাহ ঘুরতেই ফুটবলের আঙিনায় নতুন গল্প রচনা করে রেয়াল মাদ্রিদ। স্পেনের তো বটেই, ইউরোপেরই সেরা ক্লাব তারা।
জুনের প্রথম দিনে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে বসে পুরুষ চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনাল। গ্রুপ পর্বের সবগুলো ম্যাচ জিতে, নকআউট পর্বেও সব লেগে অপরাজিত থেকে, ফাইনালে বরুশিয়া ডর্টমুন্ডকে হারিয়ে ইউরোপ সেরা প্রতিযোগিতাটিতে রেকর্ড পঞ্চদশবারের মতো শিরোপা উল্লাস করে মাদ্রিদের দলটি।
ক্লাব ফুটবলের ব্যস্ততা সেরে কদিন পরেই জার্মানিতে শুরু হয় ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ এবং সেখানেও স্প্যানিশদের দাপুটে বিচরণ আলাদাভাবে নজর কাড়ে।
এক যুগ আগের, শাভি এর্নান্দেস-আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা-ইকের কাসিয়াসদের মতো তারকাসমৃদ্ধ স্কোয়াড আর ডাগআউটে ভিসেন্তে দেল বস্কের উপস্থিতিতে ২০০৮ থেকে ২০১২ সময়ে স্পেন দলটি যেন হয়ে উঠেছিল অপ্রতিরোধ্য এক শক্তি। ২০০৮ ও্ ২০১২ সালের ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপ জয়ের মাঝে ২০১০ সালে বিশ্বকাপ জিতেছিল দলটি।
ওই সময়ে বার্সেলোনার পুরুষ দলটিও ছিল দারুণ শক্তিশালী, ২০০৯ ও ২০১১ সালে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিতেছিল তারা। কিন্তু, স্পেন জাতীয় দল আর বার্সেলোনার ওই সাফল্যগুলো একই পঞ্জিকা বর্ষে আসেনি। আবার ব্যক্তিগত সেরার পুরস্কারেও কোনো স্প্যানিয়ার্ড উঠে আসতে পারেনি সবাইকে ছাপিয়ে; শাভি-ইনিয়েস্তাদের উজ্জ্বল পারফরম্যান্স তখন চাপা পড়ে যায় লিওনেল মেসি আর ক্রিস্তিয়ানো রোনালদোর অবিশ্বাস্য লড়াইয়ে।
তবে, এবার সব সাফল্য মিলে গেছে একই বিন্দুতে। লুইস এনরিকের কোচিংয়ে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর, লু্ইস দে লা ফুয়েন্তেকে দায়িত্ব দেয় স্পেন। আন্তর্জাতিক ফুটবলে ‘অপরিচিত’ এই কোচ প্রায় এক দশক ধরে স্প্যানিশ ফুটবলের বয়সভিত্তিক পর্যায়ের সঙ্গে ছিলেন।
শীর্ষ পর্যায়ে তিনি কতটা সফল হতে পারবেন, তা নিয়ে সন্দিহান ছিলেন অনেকে। তবে দে লা ফুয়েন্তে নিজের কাছে ছিলেন পরিষ্কার, আত্মবিশ্বাসীও। আশেপাশে না তাকিয়ে, কে কী বলল না ভেবে, তার দেখানো পথে পাইপলাইনে নজর দেয় স্পেন ফুটবলের কর্তারাও।
একে একে দলে আসতে থাকে সম্ভাবনাময় সব মুখ। ক্লাব বার্সেলোনায় আলো ছড়িয়ে তারা জাতীয় দলেও দ্রুত জায়গা পাকা করে ফেলে এবং শুরু হয়ে যায় ইউরো-২০২৪ এ তাদের আলো ঝলমলে পদযাত্রা।
শাভি-ইনিয়েস্তারা চলে যাওয়ার পর ‘তিকি-তাকা’ ফুটবল অকার্যকর হয়ে পড়ায়, সময়ের প্রয়োজনে দে লা ফুয়েন্তে কৌশল বদলে ফেলেন। ধীরগতির ফুটবলকে গুডবাই জানিয়ে যোগ করেন গতিময় ফুটবলে আরও আক্রমণাত্মক হওয়ার কৌশল। লামিনে ইয়ামাল-নিকো উইলিয়ামস-দানি ওলমোদের নৈপুণ্যে দ্রুত ফলও মিলতে শুরু করে।
তারই ফসল, ইউরো-২০২৪ এ ছয় ম্যাচের সবগুলো জিতে উঁচিয়ে ধরে তারা ট্রফি। সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার জয় করেন রদ্রি আর আসরের সেরা তরুণ খেলোয়াড় নির্বাচিত হন ইয়ামাল।
তারুণ্যের শক্তিতে ভর করে অগাস্টে প্যারিস অলিম্পিকসেও বাজিমাত করে স্পেন। ফাইনালে ফ্রান্সকে হারিয়ে তারা গলায় পরে সোনার পদক।
অক্টোবরে এসে রদ্রি পান আরও বড় ব্যক্তিগত সাফল্য। ম্যানচেস্টার সিটির টানা চতুর্থ প্রিমিয়ার লিগ জয়েও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা তারকা এই মিডফিল্ডার ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো জয় করেন ব্যালন দ’র।
রিয়াল মাদ্রিদের পাঁচ শিরোপা
গত মৌসুম জুড়েই চোটসমস্যা খুব ভুগিয়েছে মাদ্রিদের ক্লাবটিকে। সমস্যা পিছু ছাড়েনি তাদের এই মৌসুমেও। বলা যায়, কোনো ম্যাচেই সেরা দল মাঠে নামাতে পারেনি তারা।
তবে কোনোকিছুই দলটির পথে বাধা হতে পারেনি। কার্লো আনচেলত্তি কার্যকর কৌশলে বছরটিকে সাফল্যে রাঙিয়েছে তারা। জানুয়ারিতে স্প্যানিশ সুপার কাপ জয়ের পর বছরের মাঝামাঝিতে তারা ঘরে তোলে লা লিগা ও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ ট্রফি। এরপর অগাস্টে উয়েফা সুপার কাপ এবং ডিসেম্বরে এসে ফিফা কন্টিনেন্টাল কাপ উঁচিয়ে ধরেন ভিনিসিউস-এমবাপেরা।
আর্জেন্টিনার আলোর পাশে ব্রাজিলের আঁধার
দীর্ঘ খরা কাটিয়ে তর্কসাপেক্ষে নিজেদের ইতিহাসের সেরা সময় কাটাচ্ছে আর্জেন্টিনা। লিওনেল স্কালোনির দুর্দান্ত কৌশল আর মাঠে লিওনেল মেসির অনুপ্রেরণাদায়ী নেতৃত্বের মিশেলে আরেকটি সোনা ফলানো বছর কাটিয়েছে তিনবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা।
চির প্রতিদ্বন্দ্বীরা যখন প্রাপ্তির একটি যুগ বিনির্মাণ করছে, সেই সময়ে এক ধরনের পালাবদলের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ব্রাজিল নিজেদের খুঁজে ফিরছে। ‘জোগো বোনিতো’ অনেক দূরে ঠেলে যে কোনো মূল্য জয়ের সন্ধানে নেমেও তারা খুঁজে ফিরছে সাফল্য। ঘরের মাঠে তাদেরকে এখন দুয়োও শুনতে হচ্ছে নিয়মিত।
লাতিন আমেরিকার ফুটবলের দুই পরাশক্তির এমনই ভিন্নভাবে কেটেছে ২০২৪।
কোপা আমেরিকার শিরোপা ধরে রাখার পাশপাশি ২০২৬ বিশ্বকাপ বাছাইয়ে লাতিন আমেরিকা অঞ্চলের টেবিলে শীর্ষে আছে আর্জেন্টিনা। আরেকটি বছর তারা শেষ করেছে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে থেকে। ফুটবল ইতিহাসের কেবল দ্বিতীয় দল হিসেবে টানা জিতেছে মহাদেশীয় প্রতিযোগিতা-বিশ্বকাপ-মহাদেশীয় প্রতিযোগিতার শিরোপা।
এই আসর দিয়ে মেসিবিহীন সময়েরও একটা আভাস পেয়েছে আর্জেন্টিনা। চোটের জন্য পেরুর বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে খেলেননি ৩৭ বছর বয়সী অধিনায়ক। ফাইনালে চোট পেয়ে চোখে জল নিয়ে ৬৬তম মিনিটে মাঠ ছাড়েন তিনি। তাকে ছাড়াই, আসরে দুর্দান্ত ফুটবল উপহার দেওয়া কলম্বিয়াকে অতিরিক্ত সময়ে লাউতারো মার্তিনেসের গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় সর্বোচ্চ শিরোপা জেতার রেকর্ড গড়ে আর্জেন্টিনা।
বিপরীতে, লাতিন আমেরিকার ফুটবল শ্রেষ্ঠত্বের লড়াইয়ে আরেকটি হতাশার আসর কেটেছে ব্রাজিলের। কোয়ার্টার-ফাইনাল থেকে বিদায় নিয়ে হয়েছে ষষ্ঠ। বিশ্বকাপ বাছাইয়ে ১২ ম্যাচে ৫ জয় আর তিন ড্রয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে আছে পাঁচে। এরই মধ্যে হেরেছে চার ম্যাচ।
চোটের জন্য লম্বা সময় ধরে মাঠের বাইরে আছেন নেইমার। নিজেদের ইতিহাসের সেরা গোলদাতার অভাব ভীষণভাবে অনুভূব করছে পাঁচবারের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নরা। চোটের সঙ্গে নেইমারের যেমন সখ্য, তাতে এই তারকা ফরোয়ার্ডকে ঘিরে অনিশ্চয়তা বাড়ছেই। দায়িত্ব নিতে হবে তাই ভিনিসিউস জুনিয়র, রাফিনিয়াদের। ক্লাব ফুটবলে নিজেদের সামর্থ্যের জানান দিয়েছেন তারা, নতুন বছরে সেই পারফরম্যান্স জাতীয় দলে বয়ে নেওয়ার চ্যালেঞ্জ থাকবে তাদের সামনে।
রেয়াল মাদ্রিদের হয়ে গত মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ, লা লিগা, স্প্যানিশ সুপার কাপ জিতে এবং দলের সবগুলো সাফল্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে বর্ষসেরা ফুটবলার হওয়ার সম্ভাবনায় সবচেয়ে এগিয়ে ছিলেন ভিনিসিউস জুনিয়র। কিন্তু গত ২৮ অক্টোবর, ব্যালন দ’রের লড়াইয়ে তাকে পেছনে ফেলে পুরস্কারটি জিতে নেন রদ্রি।
বর্ষসেরা ফুটবলারের সবচেয়ে বড় দুটি স্বীকৃতির আরেকটি হলো ‘ফিফা দা বেস্ট মেন’স প্লেয়ার’ পুরস্কার। ডিসেম্বরে এসে সেই অপূর্ণতা ঘোঁচে ভিনিসিউসের। এবার রদ্রিকেই দ্বিতীয় স্থানে রেখে সেরা নির্বাচিত হন তিনি।
এতে, ব্রাজিলিয়ান ফুটবলের এক অপেক্ষারও শেষ হয়। ২০০৭ সালে দেশটির সবশেষ ফুটবলার হিসেবে ফিফার বর্ষসেরা খেলোয়াড় হয়েছিলেন কাকা। ১৭ বছর পর সেই মঞ্চে বিজয়ীর বেশে উঠে দাঁড়ালেন ভিনিসিউস।
গত ১৭ ডিসেম্বর, ‘দা বেস্ট ফিফা ফুটবল অ্যাওয়ার্ড’ অনুষ্ঠানেও আছে স্প্যানিশ ফুটবলের জয়ের গল্প। নারী ফুটবলে টানা দুইবার ব্যালন দ’র জয়ী বার্সেলোনা তারকা বনমাতি এখানেও টানা দ্বিতীয়বারের মতো জিতে নেন বর্ষসেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার।
বর্ষসেরার মঞ্চে অনুপস্থিত লিওনেল মেসি ও ক্রিস্তিয়ানো রোনালদো। ২০০৭ সাল থেকে ব্যালন দ’র কিংবা ফিফার বর্ষসেরা এই দুই পুরস্কারের অন্তত কোনো একটার সেরা তিনে ছিলেনই ফুটবলের দুই মহাতারকার কোনো একজন। এবার নেই কেউই। ইউরোপের পাট চুকিয়ে দুই জন দুই মহাদেশে আলো ছড়াচ্ছেন এখনও। মেসিকে ঘিরে ফুটবলে জোয়ার এসেছে যুক্তরাষ্ট্রের মেজর লিগ সকারে। সৌদি প্রো লিগে বাড়তি দ্যুতি এনে দিয়েছে রোনালদোর উপস্থিতি।
ফুটবলকে কাঁদিয়ে জাগালো, বেকেনবাওয়ারের চিরবিদায়
বছরের শুরুটা ছিল বিশ্ব ফুটবলের জন্য বেদনার। ভক্ত সমর্থকদের কাঁদিয়ে দুই দিনের মধ্যে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন দুই কিংবদন্তি মারিও জাগালো ও ফ্রানৎস বেকেনবাউয়ার।
১৯৫৮ সালে ব্রাজিলের প্রথম বিশ্বকাপজয়ী দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন জাগালো। ফাইনালে নিজে গোল করার পাশাপাশি বানিয়ে দেন পেলের গোল। পরের বিশ্বকাপে শিরোপা ধরে রাখা দলেরও গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন এই লেফট উইঙ্গার। এরপর, ১৯৭০ সালে ডাগআউটে থেকে ব্রাজিলকে আরেকটি শিরোপা জিতিয়ে রচনা করেন ফুটবলার ও কোচ, দুই ভূমিকায় বিশ্বকাপ জয়ের প্রথম ইতিহাস।
পরে ২৪ বছরের খরা ঘুচিয়ে ১৯৯৪ বিশ্বকাপে শিরোপাজয়ী ব্রাজিল দলের সহকারী কোচও ছিলেন জাগালো। ফুটবলের অনেক অনেক গল্পে জড়িয়ে থাকা এই গ্রেট গত ৬ জানুয়ারি শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।
জাগালোকে হারানোর কষ্ট ভোলার আগেই আসে বেকেনবাউয়ারের প্রস্থানের খবর। তিনি জার্মানির হয়ে খেলোয়াড় ও কোচের ভূমিকায় জিতেছিলেন দুটি বিশ্বকাপ।
১৯৭৪ সালে সেই সময়ের পশ্চিম জার্মানির বিশ্বকাপ জয়ে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেন বেকেনবাউয়ার। পরে কোচ হিসেবে ১৯৯০ সালে জেতেন শিরোপা। অধিনায়ক ও কোচ হিসেবে বিশ্বকাপ জেতা প্রথম ফুটবল ব্যক্তিত্ব তিনি।
ইংলিশ লিগে টটেনহ্যামের মাঠে ৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়