ঢাকা ১১:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫, ১ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি এই কথা বলেন।

ফেসবুক পোস্টে আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, ‘এনসিপি নেতাকর্মীদের রেস্কিউ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জের সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সড়ক অবরোধ করে তাদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড বাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা গেছে। এ সময় এনসিপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপির নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে।

এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গোপালগঞ্জের যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার মোজাম্মেল হোসেন মুন্না এবং ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি সুব্রত সাহা বাপ্পি আহত হয়েছেন।

হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তারা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন পরিস্থিতি ঠিক নেই।

দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যায়। এ সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময় মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতাকর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যারা হামলা চালান, তারা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে এনসিপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন।

হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে।

১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই : মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নাম দেওয়া হয়।

এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরের উলপুরে আজ সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা করা হয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতেও।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রা ও পথসভা বানচালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকেরা সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে।

এর আগে সকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির পদযাত্রাকে ঘিরে বরিশাল-গোপালগঞ্জ সড়কের কোটালীপাড়ার ওয়াপদারহাটে রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার সকাল থেকে নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধের প্রস্তুতি নেন। এক পর্যায়ে সড়কের গাছ কেটে ফেলে এবং পুরোনো কাঠ রাস্তায় বিছিয়ে অবরোধ করে সড়কে অবস্থান নেন।

এনসিপি’র সমাবেশে হামলা, সেনা-পুলিশ পাহারায় গোপালগঞ্জ ছাড়লেন নাহিদ-সারজিসরা

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

হামলার সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ

আপডেট সময় ০৬:৩২:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুলাই ২০২৫

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া বলেছেন, গোপালগঞ্জে এনসিপির নেতাকর্মীদের ওপর হামলায় জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। আজ বুধবার (১৬ জুলাই) বিকেলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে তিনি এই কথা বলেন।

ফেসবুক পোস্টে আসিফ মাহমুদ উল্লেখ করেন, ‘এনসিপি নেতাকর্মীদের রেস্কিউ করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এই ন্যাক্কারজনক সন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।’

এর আগে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীরা গোপালগঞ্জের সমাবেশ শেষে ফিরে যাওয়ার সময় সড়ক অবরোধ করে তাদের গাড়িবহরে হামলা চালিয়েছে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। দুপুর ২টা ৪৫ মিনিটের দিকে গোপালগঞ্জ জেলা শহরের লঞ্চঘাট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে।

পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে কয়েক রাউন্ড বাবার বুলেট ও সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়তে দেখা গেছে। এ সময় এনসিপি নেতাকর্মীদের গাড়িবহর লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এছাড়া বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করেছে তারা। এক পর্যায়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনীকে এনসিপির নেতাদের নিয়ে পিছু হটতে দেখা গেছে।

এ ঘটনার পর জেলা প্রশাসক মো. কামরুজ্জামান গোপালগঞ্জ জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করেন। জেলা প্রশাসনের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সাংবাদিকদের এ তথ্য জানিয়েছেন। সংঘর্ষের সময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে গোপালগঞ্জের যমুনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার মোজাম্মেল হোসেন মুন্না এবং ডিবিসির জেলা প্রতিনিধি সুব্রত সাহা বাপ্পি আহত হয়েছেন।

হামলার ঘটনার পর এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারী সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এই হামলা চালিয়েছেন। এ সময় পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। তাদের (এনসিপি) বলা হয়েছিল, সবকিছু ঠিক আছে। কিন্তু তারা সমাবেশস্থলে এসে দেখেন পরিস্থিতি ঠিক নেই।

দুপুর পৌনে দুইটার দিকে ২০০ থেকে ৩০০ লোক লাঠিসোটা নিয়ে এনসিপির সমাবেশস্থলে যায়। এ সময় মঞ্চের আশপাশে থাকা পুলিশ সদস্যরা সেখান থেকে দ্রুত আদালত চত্বরে ঢুকে পড়েন। একই সময় মঞ্চে ও মঞ্চের সামনে থাকা এনসিপির নেতাকর্মীরাও দৌড়ে সরে যান। যারা হামলা চালান, তারা সবাই আওয়ামী লীগের সমর্থক বলে এনসিপির নেতাকর্মীরা অভিযোগ করেছিলেন।

হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ভাঙচুর করেন, ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান ঘটনাস্থলে যান। এনসিপির নেতাকর্মী ও পুলিশ এক হয়ে ধাওয়া দিলে হামলাকারীরা পালিয়ে যান। বেলা ২টা ৫ মিনিটে সমাবেশস্থলে পৌঁছান এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন, মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আবদুল্লাহ, মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) সারজিস আলমসহ কেন্দ্রীয় নেতারা। সমাবেশ শেষে এনসিপির নেতাকর্মীদের ঘিরে হামলার ঘটনা ঘটে।

১ জুলাই থেকে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এর মধ্যে দেশের বেশ কয়েকটি জেলায় এই কর্মসূচি পালন করেছে দলটি। মাসব্যাপী এই কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জে পদযাত্রা করছে দলটি। গতকাল মঙ্গলবার দলের ভেরিফায়েড ফেসবুকে এই কর্মসূচিকে ‘১৬ জুলাই : মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ নাম দেওয়া হয়।

এই কর্মসূচি ঘিরে গোপালগঞ্জ সদরের উলপুরে আজ সকালে পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়েছে। হামলা করা হয়েছে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার গাড়িতেও।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মীর মো. সাজেদুর রহমান বলেন, জাতীয় নাগরিক পার্টির জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে আজ গোপালগঞ্জ শহরের পৌর পার্কে পদযাত্রা ও পথসভা বানচালের জন্য নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান পিয়ালের সমর্থকেরা সদর উপজেলার উলপুর এলাকায় পুলিশের ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা পুলিশের একটি গাড়িতে আগুন দিয়েছে।

এর আগে সকালে জাতীয় নাগরিক পার্টির পদযাত্রাকে ঘিরে বরিশাল-গোপালগঞ্জ সড়কের কোটালীপাড়ার ওয়াপদারহাটে রাস্তায় গাছ ফেলে অবরোধ করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আজ বুধবার সকাল থেকে নেতাকর্মীরা সড়ক অবরোধের প্রস্তুতি নেন। এক পর্যায়ে সড়কের গাছ কেটে ফেলে এবং পুরোনো কাঠ রাস্তায় বিছিয়ে অবরোধ করে সড়কে অবস্থান নেন।

এনসিপি’র সমাবেশে হামলা, সেনা-পুলিশ পাহারায় গোপালগঞ্জ ছাড়লেন নাহিদ-সারজিসরা