শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালায় গতকাল শনিবার (২ নভেম্বর) সন্ধ্যায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার ব্যানারে একদল তরুণ অবস্থানের মুখে ‘দেশ নাটক’ এর প্রযোজনা নিত্যপুরাণ এর প্রদর্শনী মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়। এ ঘটনা এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সমালোচনার মুখে পড়ে শিল্পকলা একাডেমি।
আজ সকালে ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসে নাটক বন্ধের কারণ, ওই সময়ের পরিস্থিতি এবং করণীয় নিয়ে কথা বলেন শিল্পকলার মহাপরিচালক অধ্যাপক জামিল আহমেদ।
জামিল আহমেদ বলেন, ‘সাম্প্রতিক সময়ে দেশের ২২ জায়গায় শিল্পকলা একাডেমিতে হামলা হয়েছে। সেসব মাথায় ছিল। আর এখানে ভেতরে দর্শক ছিল। উত্তেজিত কেউ গিয়ে যদি দর্শকদেরও আক্রমণ করে বসে। দর্শকের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে আমরা প্রদর্শনী বন্ধ করি। আমি ভেতরে গিয়ে দর্শকের কাছে ক্ষমা চেয়েছি।’
মহাপরিচালক জামিল আহমেদ আরও বলেন, ‘গতকাল আমি একটা খণ্ডযুদ্ধ করেছি। অনেক চেষ্টা করেছি নাটকের প্রদর্শনী যেন হয়। কিন্তু আমি হেরে গেছি। একটা খণ্ডযুদ্ধে হেরে গেছি। কিন্তু মূল যুদ্ধটা এখনো হারিনি।’
একাডেমির ভেতরে সেনাবাহিনীর সদস্যরা অবস্থান করলেও তাদের সহযোগিতা কেন নেওয়া হয়নি জানতে চাইলে পাল্টা প্রশ্নে তুলে জামিল আহমেদ বলেন, ‘বল প্রয়োগ করে থামাবেন? নাকি কথা দিয়ে থামাবেন?’
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন বলেছেন, বিকাল থেকে নাটকের টিকেট বিক্রি শুরু হয়। এরপর সন্ধ্যা ৬টার দিকে একদল লোক শিল্পকলার গেইটের সামনে দেশ নাটকের সদস্য এহসানুল আজিজ বাবুকে ‘আওয়ামী লীগের দোসর’ আখ্যা দিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন।
পরে একাডেমির মহাপরিচালক জামিল আহমেদ গিয়ে বিক্ষোভকারীদের শান্ত করলে যথারীতি নাটকের প্রদর্শনী শুরু হয়। কিন্তু পরে বিক্ষোভকারীরা ফের সংগঠিত হয়ে নাট্যশালার গেইটের সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। এক পর্যায়ে তারা গেইট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করলে মহাপরিচালক ‘দেশ নাটকের’ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে প্রদর্শনী বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেন।
নিত্যপুরাণ নাটকের নির্দেশক ও নাট্যকার মাসুম রেজা বলেন, ‘‘আমরা থিয়েটারটা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু থিয়েটারকে রাজনীতির মধ্যে ফেলে আমাদেরকে নাটক বন্ধ করতে বাধ্য করা হল। আমরা বন্ধ করে চলে এসেছি। ‘জামিল ভাই তো খুবই চেষ্টা করেছেন যেন নাটকটা শেষ করা যায়। কিন্তু আমাদেরকে বন্ধ করতে হল, এটা খুবই দুঃখজনক।’’
তাওহিদি জনতা’র বাধায় শো-রুম উদ্বোধন না করেই ঢাকায় ফিরলেন মেহজাবীন