অসুস্থতার কারণে জামিনে কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর ফের গ্রেপ্তার হয়েছেন রাজশাহী-৬ (বাঘা-চারঘাট) আসনের সাবেক এমপি ও আওয়ামী লীগ নেতা রাহেনুল হক। সোমবার (২৫ নভেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান এবং এরপরই জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা তাকে গ্রেফতার করেন।
জেলা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক রুহুল আমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘রাহেনুল হককে গ্রেফতারের জন্য চারঘাট থানা-পুলিশের রিকুইজিশন ছিল। সেই অনুযায়ী রাতে সাহেববাজার এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। এখন তিনি ডিবি হেফাজতে আছেন। ‘
এর আগে, গত ২১ সেপ্টেম্বর নিজ এলাকা চারঘাট বাজার থেকে রাহেনুল হক পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। গত ২০ আগস্ট চারঘাট থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। অসুস্থতার কারণে সোমবার আদালত তার জামিন মঞ্জুর করেছিলেন বলে জানান রাহেনুল হকের স্ত্রী ও চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র নার্গিস খাতুন।
এদিকে, রাহেনুল হকের স্ত্রী নার্গিস খাতুন চারঘাট পৌরসভার সাবেক মেয়র। তিনি অভিযোগ করেন, পিতাকে জেলগেটে নিতে এসে রাজশাহী নগরীর কিছু ছাত্রদলের নেতাকর্মী তার ছেলেকে রেজাউন উল হক (২৭) কারাগারের সামনে থেকে তুলে নিয়ে যান। সোমবার রাতে জেলগেটে আসেন নগরের রাজপাড়া থানার ওসি আশরাফুল আলম। তার কাছে ছেলেকে অপহরণের কথা জানান নার্গিস খাতুন।
এ সময় তিনি বলেন, সন্ধ্যার পর তিনি, তার ছেলে, একজন আত্মীয় ও তাদের আইনজীবী কারাগারের সামনে আসেন। কিন্তু কারাগারের সামনে বসার জায়গা না পেয়ে তিনি পাশের মোড়ের দিকে যান। আর কারাগারের সামনে অপেক্ষা করছিলেন তার ছেলে ও আইনজীবী। ওই সময় ছাত্রদলের কিছু নেতাকর্মী এসে আইনজীবীকে মারধর করে রেজাউনকে তুলে নিয়ে যান। এরপর তিনি (নার্গিস) ছেলের মুঠোফোনে কল দেন। তখন রেজাউন জানান, তাকে কারাগারসংলগ্ন পদ্মা নদীর ধারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। অপহরণকারী ব্যক্তিরা তার কাছে ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণ দাবি করেছেন।
নার্গিস খাতুন ওসিকে আরও জানান, কিছুক্ষণ পর কারাগারের সামনে যুবদল-ছাত্রদলের কয়েকজন আসেন। তারা তাদের এক আত্মীয়ের পরিচিত। ছাত্রদল-যুবদলের এই নেতাকর্মীরা রেজাউনকে উদ্ধারে মধ্যস্থতা করেন। পরে রাত সাড়ে ৯টার দিকে তাকে লালন শাহ মুক্তমঞ্চ এলাকায় তার এক মামাতো ভাইয়ের কাছে দেওয়া হয়। তারপর তারা দুজন নগরীর সিপাইপাড়া এলাকার বাড়িতে যান।
মহানগর ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মর্তুজা ফামিন বলেন, সাবেক এমপির ছেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে তুলে নেওয়াার অভিযোগ সঠিক নয়। ওই ছেলের মুঠোফোনে ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক অনেক তথ্য পাওয়া গেছে। এ জন্য ছাত্রদলের কয়েকজন ছেলে তাকে পুলিশে দেওয়াার জন্য ধরেছিলেন। পরে আত্মীয়তার একটা সূত্রে পরিচয় হওয়ায় ওই ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আশরাফুল আলম বলেন, ‘কেউ বিষয়টি আমাদের পুলিশ কমিশনার স্যারকে জানিয়েছিলেন। সেখান থেকে খবর পেয়ে আমি কারাগারের সামনে গিয়ে নার্গিস খাতুনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। এর মধ্যেই নার্গিসের মুঠোফোনে কল আসে যে তার ছেলেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। এ ঘটনায় তিনি কোনো অভিযোগ করেননি। অভিযোগ করলে তদন্ত করে দেখা হবে।’
বিএনপির সামনে অসম্ভব শক্তিশালী অদৃশ্য দেওয়াল অপেক্ষা করছে : তারেক রহমান