ঢাকা ০১:৫১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সরকার জনসমর্থনের বাইরে গেলে এক সপ্তাহও টিকতে পারবে না: নুর

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এ সরকারের প্রতি আমাদের ক্ষোভ আছে, রাগ আছে। প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। আমাদের দাবি আদায়ে বাধ্য করব। কিন্তু এখনই ফেলে দিতে হবে, এ সরকারকে চলে যেতে হবে, এ লাইনে যাওয়া যাবে না। এ সরকারের জনগণের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। জনগণের বাইরে গেলে, জনসমর্থনের বাইরে গেলে তারা এক সপ্তাহও টিকে থাকতে পারবে না।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্য বিরোধী’ শীর্ষক জাতীয় যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূর বলেন, আজ বাংলাদেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সংকট তৈরি হয়েছে, আমরা মনে করি এই সংকটের জন্য ভারত দায়ী। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বার্তা ছিল এবং রাজনৈতিক দলগুলো বলেছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে কূটনৈতিক সম্পর্ক সেটি স্বাভাবিকভাবেই চলবে। তবে আওয়ামী লীগকে তারা (ভারত) দাস-দাসীর মতো ব্যবহার করেছে, এই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের সরকারকে সেভাবে দাস-দাসীর মতো ব্যবহার করতে পারবে না। ভারতের দিক থেকে আমরা এ চরিত্রগুলো দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম, তাদের আন্তর্জাতিক মানের নেতারা এবং নাগরিক সমাজ সংঘবদ্ধভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা বলছে, বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন এবং নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, যা একেবারেই ভিত্তিহীন এবং অসত্য।

‘আমরা ভারতসহ সব বিদেশি মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানাব; আপনারা বাংলাদেশে এসে গ্রামগঞ্জে ঘুরে দেখুন কোথায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, কোথায় মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে। যে দু’একটি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো রাজনৈতিকভাবে নয়, আওয়ামী লীগ হয়ে যারা হিন্দু কিংবা মুসলমানদের ওপরে নির্যাতন চালিয়েছে, জনরোষে ও জনক্ষোভে তাদের নামে মামলা হচ্ছে। কোথাও বিচ্ছিন্ন হামলা-মামলার ঘটনা ঘটছে। এটি কোনো সামগ্রিক ঘটনা নয়। কাজেই আমরা ভারতের মিডিয়াসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলব বিষয়টি সঠিকভাবে আপনারা তুলে ধরবেন।’

নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশে আজ সমগ্র রাজনৈতিক দল দাবি জানিয়েছে, বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সঙ্গে যেসব অন্যায্য এবং দেশবিরোধী চুক্তি হয়েছে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা। একইসঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি ভারতকে জানিয়ে দেওয়া। ভারত যদি আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়, বন্ধুত্ব করতে চায়, সেই সম্পর্ক হবে দু’দেশের মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে।

তিনি বলেন, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে গোটা জাতি তাকিয়ে আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সরকার জাতির মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারছে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনে সমস্ত রাজনৈতিক দল, শিল্পী, সাহিত্যিক সবার প্রত্যাশা ছিল এই বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করার জন্য হাসিনার পতন পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য আন্দোলনের অংশীজনদেরকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। রাষ্ট্র সংস্কার করা হবে। কিন্তু দুঃখজনক আমরা দেখলাম, যাদের আমরা সরকার গঠনের দায়িত্ব দিলাম, তারা তাদের বন্ধুবান্ধব এবং লোকজনকে নিয়ে সরকার গঠন করলেন। মানুষকে হতাশ করলেন। আন্দোলনে থাকা নেতারা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মনে আঘাত দিলেন। যার ফলে এখন রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সময়ে নির্বাচন চাইছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন সরকারের কর্মকাণ্ডে সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করছে।

নুর আরও বলেন,”অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ভাষা বুঝতে পারছে না। তারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ না করে তারা তাদের চায়ের আড্ডার লোকদের নিয়ে সরকার গঠন করছে। তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন না করে রাজনৈতিক দলগুলোর কথা না শুনে তারা তাদের মত কাজ করছে। আমরা আগেও বলেছি আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকার কে আন্তরিক হতে হবে। তারা যদি সবার কথা না শুনে নির্দিষ্ট একটা গোষ্ঠী কিংবা সার্কেলের কথা শুনে তাহলে তো সবাই সরকার কে সন্দেহ করবেই। উপদেষ্টাদের বুঝতে হবে তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা কি,জনগণের পার্লস না বুঝে কাজ করলে জনগণ তো সরকারের বিপক্ষে যাবে। বিগত সময়ে আমরা দেখে যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা তাদের নিজেদের কথা চিন্তা করেছে, নিজেদের দলের কথা চিন্তা করেছে। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল গুলোর সংস্কারও জরুরি।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ডাকসুতে আমাদের উপর কুখ্যাত সাদ্দাম ও সনজিতের নেতৃত্বে এদেশীয় র এর এজেন্টরা হামলা করে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানালে আমরা প্রতিবাদ করি। তখন আমাদের ৬৪ জন সহযোদ্ধাকে গ্রেফতার করা হয়। এদেশের রাজপথে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই আমরাই শুরু করি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা টানা লড়াই করেছি। ২০২৪ সালে আমাদের সভাপতি নুরুল হক নুর আটক হন। অসংখ্য সহযোদ্ধা ত্যাগ শিকার করেছেন।

গণঅভ্যুত্থানের বীজ ২০১৮ সালো আমরা বপন করেছি। কিন্তু যে সরকার গঠিত হলো, এখানে সকল বিপ্লবীদের প্রতিনিধি কোথায়? ৭১ এর পরে যেভাবে একপাক্ষিক সরকার গঠিত হয়েছিলো। ঠিক এবারও তাই হয়েছে। বিপ্লব বেহাত হয়ে গেছে। অন্যথায় শহীদের তালিকা কোথায়, শহীদ পরিবারের ক্ষতিপূরণ কোথায়, আহতদের কেন সুচিকিৎসা হচ্ছে না? কেন শেখ পরিবার ও আওয়ামী হাইকমান্ডের কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না? বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ সকল দল আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান ক্লিয়ার করেছে। কিন্তু কেন সরকার আ.লীগকে নিষিদ্ধ করছেনা? আমাদের স্পষ্ট কথা, গণহত্যার বিচারের আগে নামে-বেনামে, ডামি-মামি, স্বতন্ত্র কোনভাবেই আ.লীগ, জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের প্রেতাত্মাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেনা।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতার থাকার জন্য ভারতকে খুশি করতে যে অসম চুক্তি করেছেন, তা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।ভারতের সাথে আমরা বৈরিতা চাই না, তাদের সাথে সম্পর্ক হবে নায্যতা ও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে। ভারত তার আগ্রাসন ও অপপ্রচার বন্ধ না করলে বাংলাদেশের জনগণ ভারতের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বিষয়ে ভারতের সাথে কোন আপোষ নয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সঞ্চালনা করেন সহ সভাপতি রাহুল ইসলাম, এছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, এডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ হাসান আল মামুন, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, সহ সভাপতি শাকিল আহমেদ তিয়াস, হোসাইন নুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মুন,অর্থ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, পেশাজীবি অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খালিদ হাসান, মহানগর দক্ষিণ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

সরকার জনসমর্থনের বাইরে গেলে এক সপ্তাহও টিকতে পারবে না: নুর

আপডেট সময় ১২:০৫:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেছেন, এ সরকারের প্রতি আমাদের ক্ষোভ আছে, রাগ আছে। প্রয়োজনে সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করব। আমাদের দাবি আদায়ে বাধ্য করব। কিন্তু এখনই ফেলে দিতে হবে, এ সরকারকে চলে যেতে হবে, এ লাইনে যাওয়া যাবে না। এ সরকারের জনগণের বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। জনগণের বাইরে গেলে, জনসমর্থনের বাইরে গেলে তারা এক সপ্তাহও টিকে থাকতে পারবে না।

শুক্রবার (১৩ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদ আয়োজিত ‘ভারতীয় আগ্রাসন ও আধিপত্য বিরোধী’ শীর্ষক জাতীয় যুব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

নূর বলেন, আজ বাংলাদেশে যে সংকট তৈরি হয়েছে, বিশেষ করে শেখ হাসিনার পতনের পর ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে সংকট তৈরি হয়েছে, আমরা মনে করি এই সংকটের জন্য ভারত দায়ী। সরকারের পক্ষ থেকে সুস্পষ্ট বার্তা ছিল এবং রাজনৈতিক দলগুলো বলেছে, ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে কূটনৈতিক সম্পর্ক সেটি স্বাভাবিকভাবেই চলবে। তবে আওয়ামী লীগকে তারা (ভারত) দাস-দাসীর মতো ব্যবহার করেছে, এই অভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশের সরকারকে সেভাবে দাস-দাসীর মতো ব্যবহার করতে পারবে না। ভারতের দিক থেকে আমরা এ চরিত্রগুলো দেখতে পাচ্ছি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের গণমাধ্যম, তাদের আন্তর্জাতিক মানের নেতারা এবং নাগরিক সমাজ সংঘবদ্ধভাবে অপপ্রচার চালাচ্ছে। তারা বলছে, বাংলাদেশে নাকি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন এবং নিপীড়ন চালানো হচ্ছে, যা একেবারেই ভিত্তিহীন এবং অসত্য।

‘আমরা ভারতসহ সব বিদেশি মিডিয়াকে আমন্ত্রণ জানাব; আপনারা বাংলাদেশে এসে গ্রামগঞ্জে ঘুরে দেখুন কোথায় হিন্দুদের ওপর আক্রমণ হয়েছে, কোথায় মন্দিরে আক্রমণ হয়েছে। যে দু’একটি ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো রাজনৈতিকভাবে নয়, আওয়ামী লীগ হয়ে যারা হিন্দু কিংবা মুসলমানদের ওপরে নির্যাতন চালিয়েছে, জনরোষে ও জনক্ষোভে তাদের নামে মামলা হচ্ছে। কোথাও বিচ্ছিন্ন হামলা-মামলার ঘটনা ঘটছে। এটি কোনো সামগ্রিক ঘটনা নয়। কাজেই আমরা ভারতের মিডিয়াসহ আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকে বলব বিষয়টি সঠিকভাবে আপনারা তুলে ধরবেন।’

নুরুল হক নুর বলেন, বাংলাদেশে আজ সমগ্র রাজনৈতিক দল দাবি জানিয়েছে, বিগত ১৬ বছরে শেখ হাসিনার আমলে ভারতের সঙ্গে যেসব অন্যায্য এবং দেশবিরোধী চুক্তি হয়েছে তা জনসম্মুখে প্রকাশ করা। একইসঙ্গে বাংলাদেশের মানুষের যে আকাঙ্ক্ষা সেটি ভারতকে জানিয়ে দেওয়া। ভারত যদি আমাদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখতে চায়, বন্ধুত্ব করতে চায়, সেই সম্পর্ক হবে দু’দেশের মানুষের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে।

তিনি বলেন, অনেক আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের দিকে গোটা জাতি তাকিয়ে আছে। কিন্তু দুঃখজনক হলো, সরকার জাতির মনের আশা-আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারছে না। জুলাই-আগস্ট বিপ্লবে ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতনে সমস্ত রাজনৈতিক দল, শিল্পী, সাহিত্যিক সবার প্রত্যাশা ছিল এই বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করার জন্য হাসিনার পতন পরবর্তী নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণ করার জন্য আন্দোলনের অংশীজনদেরকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। রাষ্ট্র সংস্কার করা হবে। কিন্তু দুঃখজনক আমরা দেখলাম, যাদের আমরা সরকার গঠনের দায়িত্ব দিলাম, তারা তাদের বন্ধুবান্ধব এবং লোকজনকে নিয়ে সরকার গঠন করলেন। মানুষকে হতাশ করলেন। আন্দোলনে থাকা নেতারা এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মনে আঘাত দিলেন। যার ফলে এখন রাজনৈতিক দলগুলো দ্রুত সময়ে নির্বাচন চাইছে। রাজনৈতিক দলগুলো এখন সরকারের কর্মকাণ্ডে সন্দেহ-সংশয় প্রকাশ করছে।

নুর আরও বলেন,”অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের ভাষা বুঝতে পারছে না। তারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ না করে তারা তাদের চায়ের আড্ডার লোকদের নিয়ে সরকার গঠন করছে। তারা রাজনৈতিক দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন না করে রাজনৈতিক দলগুলোর কথা না শুনে তারা তাদের মত কাজ করছে। আমরা আগেও বলেছি আগে সংস্কার তারপর নির্বাচন কিন্তু সেক্ষেত্রে সরকার কে আন্তরিক হতে হবে। তারা যদি সবার কথা না শুনে নির্দিষ্ট একটা গোষ্ঠী কিংবা সার্কেলের কথা শুনে তাহলে তো সবাই সরকার কে সন্দেহ করবেই। উপদেষ্টাদের বুঝতে হবে তাদের কাছে জনগণের প্রত্যাশা কি,জনগণের পার্লস না বুঝে কাজ করলে জনগণ তো সরকারের বিপক্ষে যাবে। বিগত সময়ে আমরা দেখে যারা ক্ষমতায় ছিলো তারা তাদের নিজেদের কথা চিন্তা করেছে, নিজেদের দলের কথা চিন্তা করেছে। ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছে। তাই রাষ্ট্র সংস্কারের পাশাপাশি রাজনৈতিক দল গুলোর সংস্কারও জরুরি।

গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ রাশেদ খাঁন বলেন, ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় ডাকসুতে আমাদের উপর কুখ্যাত সাদ্দাম ও সনজিতের নেতৃত্বে এদেশীয় র এর এজেন্টরা হামলা করে। স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীতে নরেন্দ্র মোদিকে আমন্ত্রণ জানালে আমরা প্রতিবাদ করি। তখন আমাদের ৬৪ জন সহযোদ্ধাকে গ্রেফতার করা হয়। এদেশের রাজপথে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই আমরাই শুরু করি। ২০১৮ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত আমরা টানা লড়াই করেছি। ২০২৪ সালে আমাদের সভাপতি নুরুল হক নুর আটক হন। অসংখ্য সহযোদ্ধা ত্যাগ শিকার করেছেন।

গণঅভ্যুত্থানের বীজ ২০১৮ সালো আমরা বপন করেছি। কিন্তু যে সরকার গঠিত হলো, এখানে সকল বিপ্লবীদের প্রতিনিধি কোথায়? ৭১ এর পরে যেভাবে একপাক্ষিক সরকার গঠিত হয়েছিলো। ঠিক এবারও তাই হয়েছে। বিপ্লব বেহাত হয়ে গেছে। অন্যথায় শহীদের তালিকা কোথায়, শহীদ পরিবারের ক্ষতিপূরণ কোথায়, আহতদের কেন সুচিকিৎসা হচ্ছে না? কেন শেখ পরিবার ও আওয়ামী হাইকমান্ডের কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না? বিএনপি, গণঅধিকার পরিষদসহ সকল দল আ.লীগের নিষিদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান ক্লিয়ার করেছে। কিন্তু কেন সরকার আ.লীগকে নিষিদ্ধ করছেনা? আমাদের স্পষ্ট কথা, গণহত্যার বিচারের আগে নামে-বেনামে, ডামি-মামি, স্বতন্ত্র কোনভাবেই আ.লীগ, জাতীয় পার্টি, ১৪ দলের প্রেতাত্মাদের নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবেনা।

বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন বলেন, “আওয়ামী লীগ ক্ষমতার থাকার জন্য ভারতকে খুশি করতে যে অসম চুক্তি করেছেন, তা অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে।ভারতের সাথে আমরা বৈরিতা চাই না, তাদের সাথে সম্পর্ক হবে নায্যতা ও অংশীদারত্বের ভিত্তিতে। ভারত তার আগ্রাসন ও অপপ্রচার বন্ধ না করলে বাংলাদেশের জনগণ ভারতের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার ভূমিকা পালন করবে।সার্বভৌমত্ব ও স্বাধীনতা বিষয়ে ভারতের সাথে কোন আপোষ নয়।

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সভাপতি মনজুর মোর্শেদ মামুন, সঞ্চালনা করেন সহ সভাপতি রাহুল ইসলাম, এছাড়াও বক্তব্য রাখেন গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য আবু হানিফ, এডভোকেট সরকার নুরে এরশাদ সিদ্দিকী, যুগ্ম সাধারণ হাসান আল মামুন, বাংলাদেশ যুব অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাদিম হাসান, সহ সভাপতি শাকিল আহমেদ তিয়াস, হোসাইন নুর, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাসেল মুন,অর্থ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি বিন ইয়ামিন মোল্লা, শ্রমিক অধিকার পরিষদের সভাপতি আব্দুর রহমান, পেশাজীবি অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট খালিদ হাসান, মহানগর দক্ষিণ গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নাজিমউদ্দীন, উত্তরের সভাপতি মিজানুর রহমান প্রমুখ।