ঢাকা ১২:২৬ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আটোয়ারীতে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ; প্রতিরোধে ক্যাম্পেইন

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। ভাইরাসজনিত এই রোগে কয়েকদিনে আক্রান্ত হয়েছে সহস্রাধিক গরু। কোন ঔষধে কাজ না হওয়ায় মারা গেছে শতাধিক গরু। এরমধ্যে বেশীর ভাগই বাছুর। লাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধে প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে জনসচেতনতামূলক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামানকে বিষয়টি অবগত করা হলে , তারই নির্দেশনায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর হতে লাম্পি রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মাইক দিয়ে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু কোন প্রচারপত্র বিতরণ করা হয় নি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ ও ভেটেরিনারি দপ্তরের জনৈক চিকিৎসক বলেন, আমাদের অফিসে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা না থাকায় দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া আমাদের প্রাণি সম্পদ অফিসে জনবল সংকট থাকায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। প্রতি কর্মদিবসে সকাল থেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গরু,ছাগল, হাঁস,মুরগীসহ নানা পশু-প্রাণি বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছে। অফিস চত্বরে চিকিৎসা দেওয়া এবং বাহিরে চিকিৎসা দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হচ্ছে। এর পরও মাঝে মাঝে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি দপ্তরের জনৈক চিকিৎসক বলেন, গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন মারাত্মক সংক্রামণ একটি রোগ। ছোঁয়াছে এই রোগ খুব দ্রুত এটি এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত গরুর জ্বর হয়, শরীর ফুলে যায়, ত্বকে গুটি দেখা দেয়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পশুর মৃত্যু ঘটে।

তিনি বলেন, যেহেতু ভাইরাস দ্বারা এ রোগ সৃস্টি হয় কাজেই কোন এন্টিবায়োটিক এ রোগে কোন কাজ করে না। উপরন্তু এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে প্রাণি দুর্বল হয়ে পড়ে। উপজেলায় সরকারি ভাবে এ রোগের ভ্যাক্সিন আসেনি। আপাদত বাজারে বেসরকারিভাবে বাজারজাত করা ভ্যাক্সিন দিতে বলা হচ্ছে। গরু আক্রান্ত হলে প্রথমে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে যেতে বলা হচ্ছে।

চিকিৎসক বলেন, এ রোগ বিস্তারের অন্যতম বাহক হলো মশা ও মাছি। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আক্রান্ত পশুদের আলাদা করে রাখা, কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়েও ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

লাম্পি চিকিৎসার পরামর্শ হিসেবে বলেন, যদি গরুর ওজন ১০০ কেজি হয়, তাহলে ভাইরো-এম পাউডার ১০ গ্রাম + প্যারাসিটামল ট্যাবলেট- ১টি, নিমপাতা বাটা-১০ গ্রাম, গুড়-২০ গ্রাম এক পোয়া পানিতে একত্রে মিশ্রিত করে সকাল বিকাল দিনে ২ বার ৭ দিন খাওয়াতে হবে। অথবা প্যারাসিটামল ট্যাবলেট- ২টি, খাবার সোডা-২০ গ্রাম, নিমপাতা বাটা-২০ গ্রাম, গুড়-২৫ গ্রাম আধা লিটার পানিতে একত্রে মিশ্রিত কওে সকাল বিকাল ১ পোয়া করে দিনে ২ বার ৭ দিন খাওয়াতে হবে।

রাধানগরের রফিকুল বলেন, কয়েকদিন আগে লাম্পি রোগে আমার একটি আড়িয়া গরু মারা গেছে। গরুটির পিছনে চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করেছি, কোন লাভ হয়নি।

অনেক গরু পালনকারী বলছেন, প্রাণি সম্পদের কিছু পল্লী চিকিৎসক কোন কিছু না বুঝে লাম্পি আক্রান্ত পশুকে ইনজেকশন পুশ করে পশু মালিকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে কোন ফল না পেয়ে পশু পালনকারী বা খামারিরা আতঙ্কে রয়েছে। সচেতন মহলের মতে উপজেলা প্রাণি সম্পদ ও ভেটেরিনারি দপ্তরের মাধ্যমে লাম্পি রোগে মালিক ও খামারিদের করণীয় বিষয়ে ক্যাম্পেইন,ব্যাপক মাইকিং ও জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করলে লাম্পি রোগ প্রতিরোধে অনেকটা সহায়ক হবে।

 

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

রানীশংকৈলে পৌর বিএনপির সদস্য সংগ্রহ কার্যক্রমের উদ্বোধন

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

আটোয়ারীতে ব্যাপক ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ; প্রতিরোধে ক্যাম্পেইন

আপডেট সময় ১১:১২:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ জুলাই ২০২৫

পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে ব্যাপক হারে ছড়িয়ে পড়ছে গরুর লাম্পি স্কিন রোগ। ভাইরাসজনিত এই রোগে কয়েকদিনে আক্রান্ত হয়েছে সহস্রাধিক গরু। কোন ঔষধে কাজ না হওয়ায় মারা গেছে শতাধিক গরু। এরমধ্যে বেশীর ভাগই বাছুর। লাম্পি স্কিন রোগ প্রতিরোধে প্রাণি সম্পদ দপ্তর থেকে জনসচেতনতামূলক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আরিফুজ্জামানকে বিষয়টি অবগত করা হলে , তারই নির্দেশনায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর হতে লাম্পি রোগ প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে মাইক দিয়ে প্রচার করা হয়েছিল। কিন্তু কোন প্রচারপত্র বিতরণ করা হয় নি।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ ও ভেটেরিনারি দপ্তরের জনৈক চিকিৎসক বলেন, আমাদের অফিসে প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা না থাকায় দ্রুত কোন সিদ্ধান্ত নেয়া যাচ্ছে না। তা ছাড়া আমাদের প্রাণি সম্পদ অফিসে জনবল সংকট থাকায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। প্রতি কর্মদিবসে সকাল থেকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত গরু,ছাগল, হাঁস,মুরগীসহ নানা পশু-প্রাণি বিভিন্ন এলাকা থেকে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসছে। অফিস চত্বরে চিকিৎসা দেওয়া এবং বাহিরে চিকিৎসা দেওয়া আমাদের জন্য কঠিন হচ্ছে। এর পরও মাঝে মাঝে বিভিন্ন গ্রামে গিয়ে ক্যাম্পেইন করা হচ্ছে।

উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি দপ্তরের জনৈক চিকিৎসক বলেন, গবাদি পশুর লাম্পি স্কিন মারাত্মক সংক্রামণ একটি রোগ। ছোঁয়াছে এই রোগ খুব দ্রুত এটি এক পশু থেকে অন্য পশুতে ছড়িয়ে পড়ে। প্রাথমিকভাবে আক্রান্ত গরুর জ্বর হয়, শরীর ফুলে যায়, ত্বকে গুটি দেখা দেয়, মুখ দিয়ে লালা ঝরে এবং ধীরে ধীরে পশুটি দুর্বল ও নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে পশুর মৃত্যু ঘটে।

তিনি বলেন, যেহেতু ভাইরাস দ্বারা এ রোগ সৃস্টি হয় কাজেই কোন এন্টিবায়োটিক এ রোগে কোন কাজ করে না। উপরন্তু এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে প্রাণি দুর্বল হয়ে পড়ে। উপজেলায় সরকারি ভাবে এ রোগের ভ্যাক্সিন আসেনি। আপাদত বাজারে বেসরকারিভাবে বাজারজাত করা ভ্যাক্সিন দিতে বলা হচ্ছে। গরু আক্রান্ত হলে প্রথমে উপজেলা প্রাণি সম্পদ দপ্তরে যেতে বলা হচ্ছে।

চিকিৎসক বলেন, এ রোগ বিস্তারের অন্যতম বাহক হলো মশা ও মাছি। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যেই মাঠ পর্যায়ে ক্যাম্পেইন শুরু করেছি। আক্রান্ত পশুদের আলাদা করে রাখা, কিভাবে পরিচর্যা করতে হবে এবং প্রাথমিক চিকিৎসার বিষয়েও ধারণা দেওয়া হচ্ছে।

লাম্পি চিকিৎসার পরামর্শ হিসেবে বলেন, যদি গরুর ওজন ১০০ কেজি হয়, তাহলে ভাইরো-এম পাউডার ১০ গ্রাম + প্যারাসিটামল ট্যাবলেট- ১টি, নিমপাতা বাটা-১০ গ্রাম, গুড়-২০ গ্রাম এক পোয়া পানিতে একত্রে মিশ্রিত করে সকাল বিকাল দিনে ২ বার ৭ দিন খাওয়াতে হবে। অথবা প্যারাসিটামল ট্যাবলেট- ২টি, খাবার সোডা-২০ গ্রাম, নিমপাতা বাটা-২০ গ্রাম, গুড়-২৫ গ্রাম আধা লিটার পানিতে একত্রে মিশ্রিত কওে সকাল বিকাল ১ পোয়া করে দিনে ২ বার ৭ দিন খাওয়াতে হবে।

রাধানগরের রফিকুল বলেন, কয়েকদিন আগে লাম্পি রোগে আমার একটি আড়িয়া গরু মারা গেছে। গরুটির পিছনে চিকিৎসা বাবদ প্রায় ৫ হাজার টাকা খরচ করেছি, কোন লাভ হয়নি।

অনেক গরু পালনকারী বলছেন, প্রাণি সম্পদের কিছু পল্লী চিকিৎসক কোন কিছু না বুঝে লাম্পি আক্রান্ত পশুকে ইনজেকশন পুশ করে পশু মালিকের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। মোটা অঙ্কের অর্থ খরচ করে কোন ফল না পেয়ে পশু পালনকারী বা খামারিরা আতঙ্কে রয়েছে। সচেতন মহলের মতে উপজেলা প্রাণি সম্পদ ও ভেটেরিনারি দপ্তরের মাধ্যমে লাম্পি রোগে মালিক ও খামারিদের করণীয় বিষয়ে ক্যাম্পেইন,ব্যাপক মাইকিং ও জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করলে লাম্পি রোগ প্রতিরোধে অনেকটা সহায়ক হবে।