পঞ্চগড়ের আটোয়ারী উপজেলার রাধানগর সরকারপাড়া জামে মসজিদের প্রবীণ ইমাম ও খতিব মৌলভী মোঃ নুরল হুদাকে অবসরজনিত বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে। শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জুম্মার নামাজের পর নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে তাঁকে এ বিদায়ী সংবর্ধনা দেয় স্থানীয় মুসল্লিরা।
সংবর্ধনা পাওয়া ইমাম মৌলভী মোঃ নুরল হুদা উপজেলার রাধানগর ইউনিয়নের সাহাপাড়া এলাকার মৃত মৌলভী ফয়েজ উদ্দীনের ছেলে।
স্থানীয়রা জানান, মৌলভী মোঃ নুরল হুদা ৪৩ বছরের অধিক কাল রাধানগর সরকার পাড়া জামে মসজিদে খতিবের দায়িত্ব পালন শেষে অবসরে যান। এ নিয়ে প্রিয় ইমামকে বিদায় জানাতে স্থানীয় মুসল্লিরা নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেন।
শুক্রবার জুম্মার নামাজের পর বিদায়ী ইমাম ও মুসল্লিদের মধ্যে দোয়া ও ভালোবাসার আদানপ্রদান হয়। মসজিদ কমিটির আয়োজনে এ উপলক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন, মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি মোঃ রজিক উদ্দীন। মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদক মোঃ মকবুল হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখেন বিদায়ী ইমাম মৌঃ মোঃ নুলল হুদা।
বিদায়ী ইমামের স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন, মসজিদ কমিটির সাবেক সভাপতি মোঃ ইউসুফ আলী (সাংবাদিক), সাবেক সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্যাহেল বাকী, মোঃ ফজলুল করিম, সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোঃ আব্দুল আলী (সাকি), মোঃ আব্দুল করিম, আব্দুস সামাদ, বর্তমান খতিব মোঃ সাকিল ইসলাম জনি প্রমুখ। আলোচনা শেষে বিদায়ী ইমামকে সম্মাননা সরূপ নিত্য ব্যবহার্য সরঞ্জাম তুলে দেন মুসল্লিরা।
এসময় স্থানীয় মুসল্লিরা পৃথকভাবে বিদায়ী ইমামের কাছ থেকে দোয়া গ্রহণ ও কুশল বিনিময় করেন। এতে ইমাম ও মুসল্লি উভয়েই আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন। এতে বিদায়ী ইমাম ও মুসল্লিদের মধ্যে ভালোবাসার এক অনন্য চিত্র ফুটে ওঠে।
মুসল্লিরা বলেন, বিদায়ী ইমাম মোঃ নুরল হুদা দীর্ঘ বছর ইমামতি করার সুবাদে তাঁর সাথে আমাদের আত্মার সম্পর্ক তৈরী হয়েছে। তাঁর পিছনে আমরা ও আমাদের বাপ-চাচারা নামাজ পড়েছেন।
মুসল্লিরা আরো বলেন, দীর্ঘ বছর যাবত রাধানগর সরকারপাড়া জামে মসজিদে ইমামতির কারণে এলাকার মুসল্লিরা ইমাম সাহেবকে ভালোবাসেন আর ইমাম সাহেবও মুসল্লিদের ভালোবাসেন। উভয়ের ভালোবাসার কারণে তাঁর বিদায়ের সময় আমরা আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছি।
বক্তারা বলেন, ইমাম সাহেবের অনাগত দিনগুলো সুখময় হোক। আমাদের মসজিদ থেকে বিদায় নিলেও আমাদের হৃদয়ে তিনি থাকবেন সম্মান ও ভালোবাসার জায়গায়। আমরা তাঁর সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
বিদায়ী ইমাম মৌলভী মোঃ নুরল হুদা বলেন, আমি এই এলাকারই সন্তান। এক সময় আমার বাবা এই মসজিদে ইমামতি করেছেন। বাবার বার্ধক্যতার কারণে অবসর গ্রহণ করলে তখন আমি এই মসজিদে ইমামতি শুরু করি।
তিনি বলেন, বিগত প্রায় ৪৩/৪৪ বছর ধরে আমি এই মসজিদে ইমামতি করেছি। এই এলাকার মানুষের সেবায় নিয়োজিত ছিলাম। মুসল্লিরা আমাকে ভালোবাসেন এবং আমিও মুসল্লিদের ভালোবাসি। মুসল্লিদের এতো ভালোবাসায় আমি সত্যিই মুগ্ধ ও আবেগাপ্লুত হয়েছি।