ঢাকা ১১:০৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫, ১৩ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভূরুঙ্গামারীতে আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা

কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চলতি মৌসমে শুরু হয়েছে আমন ধান রোপণের ব্যস্ততা। আমন চারা রোপণের পূর্ণাঙ্গ বয়স হওয়ায় ধান চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।  ইতিমধ্যে আমন চারা রোপণের জোর প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন তারা। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে কাঙ্খিত পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উপজেলার অনেক স্থানে কৃষকরা সেচ যন্ত্রের সাহায্যে জমিতে সেচ প্রয়োগ করে আমনের জমি তৈরি করতে হালচাষ, আইল কাটা ও বাঁধা আইলের সাইড কেটে জমিকে আমন ধান চাষের উপযোগী করছেন।
কৃষকরা জানান, দু’এক দিনের বৃষ্টিতে নিচু জমিতে কিছুটা পানি জমেছে তাতে আমরা জমি প্রস্তুত করছি। আবার কেউ কেউ চারা রোপন শুরু করেছেন। তীব্র রোদকে উপেক্ষা করে কৃষকরা সকাল-সন্ধ্যা মাঠে কাজ করছেন। তারা জানান, সামনে বৃষ্টি না হলে আমন রোপনে সেচ দিতে হবে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান রোপন শেষ হবে।
উপজেলার  সদর ইউনিয়নের কৃষক রিয়াজুল হক, মনিরুজ্জামান ও জিয়াউল হক জানান, সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমরা সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে জমিতে পানি দিয়ে এমন ধনের চারা রোপন করেছি।
জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিবুর বিলের কৃষক আমিন ডাক্তার , রফিকুল ইসলাম ও মাহাবুর বলেন, এক মাস আগে আমন ধান বীজ তলায় ছিটানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে সেই চারা তুলে পুনরায় অন্য জমিতে রোপণ করা হয়। সেই চারা আমনের জমিতে রোপণ করা হয়। এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা আমন চাষের জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলাই গ্রামের আনন্দ বাজার এলাকার কৃষক হাফেজ আলী ও জহুরুল ইসলাম জানান, আমরা এবার চার /পাঁচ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবো। চারা প্রস্তুত করা আছে। জমিতে পানি কম থাকায় চারা রোপণে দেরি হচ্ছে। মর্টার দিয়ে জমিতে শেষ দিচ্ছি এবং চারা রোপনের উপযোগী করে তুলছি। দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে সব জমিতে সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণ শুরু করবো।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের হাসেম আলী বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগাবো। এসব জমিতে বিঘা প্রতি চারা রোপণে দিনমুজুর খরচ ২৫০০-৩০০০ টাকা, হালচাষ ১২০০ টাকা, সেচ, সার, বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা প্রর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে ভালো ফলন আর নিজে শ্রম দিতে পারলে চাষের খরচ বাদে কিছু লাভ থাকবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৯০০হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 জয়মনিরহাট ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান,  সার্বক্ষণিক মাঠে তদারকি চলছে। কৃষকদের সুপরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল রেখে জয়মনিরহাট ফার্মার গ্রুপ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ চালু করা হয়েছে। এখানে সকলের মতামত গ্রহণ ফসলের সমস্যা ও সমাধান এবং সুপরামর্শ প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় লক্ষা মাত্রায় কিছুটা পিছিয়ে আছি।
এ পর্যন্ত ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপণ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের প্রণোদনার উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী আমন ধান বীজ ও সার দিয়েছি। এছাড়াও প্রদর্শনী দেয়া আছে। এসব আগাম জাতের ধান কর্তন করে করে কৃষকরা যাতে আগাম জাতের সরিষার ও সবজির চাষাবাদ করতে পারেন তার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। মাঠে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ আছেন তারা কৃষকদের উদ্বদ্ধু করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

‘জুলাই সনদের’ খসড়া সব রাজনৈতিক দলকে দেওয়া হয়েছে: আলী রীয়াজ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভূরুঙ্গামারীতে আমন ধান রোপণে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকেরা

আপডেট সময় ০৬:৪২:৪৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫
কুড়িগ্রাম জেলার ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় চলতি মৌসমে শুরু হয়েছে আমন ধান রোপণের ব্যস্ততা। আমন চারা রোপণের পূর্ণাঙ্গ বয়স হওয়ায় ধান চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা।  ইতিমধ্যে আমন চারা রোপণের জোর প্রস্তুতি নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছেন তারা। আষাঢ় শ্রাবণ মাসে কাঙ্খিত পরিমাণ বৃষ্টিপাত না হওয়ায় উপজেলার অনেক স্থানে কৃষকরা সেচ যন্ত্রের সাহায্যে জমিতে সেচ প্রয়োগ করে আমনের জমি তৈরি করতে হালচাষ, আইল কাটা ও বাঁধা আইলের সাইড কেটে জমিকে আমন ধান চাষের উপযোগী করছেন।
কৃষকরা জানান, দু’এক দিনের বৃষ্টিতে নিচু জমিতে কিছুটা পানি জমেছে তাতে আমরা জমি প্রস্তুত করছি। আবার কেউ কেউ চারা রোপন শুরু করেছেন। তীব্র রোদকে উপেক্ষা করে কৃষকরা সকাল-সন্ধ্যা মাঠে কাজ করছেন। তারা জানান, সামনে বৃষ্টি না হলে আমন রোপনে সেচ দিতে হবে। আগামী ১৫-২০ দিনের মধ্যে ধান রোপন শেষ হবে।
উপজেলার  সদর ইউনিয়নের কৃষক রিয়াজুল হক, মনিরুজ্জামান ও জিয়াউল হক জানান, সঠিক সময়ে বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমরা সেচ যন্ত্র ব্যবহার করে জমিতে পানি দিয়ে এমন ধনের চারা রোপন করেছি।
জয়মনিরহাট ইউনিয়নের শিবুর বিলের কৃষক আমিন ডাক্তার , রফিকুল ইসলাম ও মাহাবুর বলেন, এক মাস আগে আমন ধান বীজ তলায় ছিটানো হয়। নির্দিষ্ট সময়ে সেই চারা তুলে পুনরায় অন্য জমিতে রোপণ করা হয়। সেই চারা আমনের জমিতে রোপণ করা হয়। এখন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কৃষকরা আমন চাষের জমিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন।
তিলাই ইউনিয়নের দক্ষিণ তিলাই গ্রামের আনন্দ বাজার এলাকার কৃষক হাফেজ আলী ও জহুরুল ইসলাম জানান, আমরা এবার চার /পাঁচ বিঘা জমিতে আমন চাষ করবো। চারা প্রস্তুত করা আছে। জমিতে পানি কম থাকায় চারা রোপণে দেরি হচ্ছে। মর্টার দিয়ে জমিতে শেষ দিচ্ছি এবং চারা রোপনের উপযোগী করে তুলছি। দু’একদিনের মধ্যে বৃষ্টি না হলে সব জমিতে সেচ দিয়ে জমি প্রস্তুত করে চারা রোপণ শুরু করবো।
পাইকেরছড়া ইউনিয়নের হাসেম আলী বলেন, আমি তিন বিঘা জমিতে আমন ধান লাগাবো। এসব জমিতে বিঘা প্রতি চারা রোপণে দিনমুজুর খরচ ২৫০০-৩০০০ টাকা, হালচাষ ১২০০ টাকা, সেচ, সার, বীজতলা তৈরি থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা প্রর্যন্ত বিঘা প্রতি প্রায় ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হয়। তবে ভালো ফলন আর নিজে শ্রম দিতে পারলে চাষের খরচ বাদে কিছু লাভ থাকবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এবার উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে ১৬ হাজার ৯০০হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
 জয়মনিরহাট ইউনিয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শহিদুল ইসলাম জানান,  সার্বক্ষণিক মাঠে তদারকি চলছে। কৃষকদের সুপরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সময়ের সঙ্গে তাল রেখে জয়মনিরহাট ফার্মার গ্রুপ নামে একটি মেসেঞ্জার গ্রুপ চালু করা হয়েছে। এখানে সকলের মতামত গ্রহণ ফসলের সমস্যা ও সমাধান এবং সুপরামর্শ প্রদান করা হয়।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল জব্বার বলেন, বৃষ্টিপাত না হওয়ায় লক্ষা মাত্রায় কিছুটা পিছিয়ে আছি।
এ পর্যন্ত ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চারা রোপণ করা হয়েছে। আমরা কৃষকদের প্রণোদনার উচ্চ ফলনশীল ও স্বল্পমেয়াদী আমন ধান বীজ ও সার দিয়েছি। এছাড়াও প্রদর্শনী দেয়া আছে। এসব আগাম জাতের ধান কর্তন করে করে কৃষকরা যাতে আগাম জাতের সরিষার ও সবজির চাষাবাদ করতে পারেন তার জন্য পরামর্শ দিচ্ছি। মাঠে উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ আছেন তারা কৃষকদের উদ্বদ্ধু করার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন।