ঢাকা ০২:০৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৯ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভূরুঙ্গামারীতে জেঁকে বসেছে শীত, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ 

উত্তরের তিন দিকে সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় জেঁকে বসেছে আগাম শীত। যতই দিন যাচ্ছে এ জনপদে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া এবং ঘন কুয়াশার কারণে গত চার দিন ধরে  পাল্লা দিয়ে কনকনে শীত পড়তে শুরু করেছে। সূর্যের দেখা মেলেনি গত চার দিন। শীতে নাকাল গোটা উপজেলা। একদিকে  ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের গরিব মানুষের।
 ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার  সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস।   যদিও ১৩ ডিসেম্বর  শুক্রবার সকাল দশটার পর হতে  রোদ এবং তাপমাত্রা একটু বাড়ছে। তারপর শীতের তীব্র দাপট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে, সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত  থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সমগ্র ভূরুঙ্গামারী উপজেলা।
কমছে বাতাসের আর্দ্রতা। বইছে হিমেল হাওয়া। তাপমাত্রা থাকছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে ।  ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলা সকাল ১০টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে অসহায় গরিব মেহনতী  দিনমজুর, শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের তীব্রতায় অসহায় হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের ও নদী তীরবর্তী  মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে সময় মত কাজে যোগ দিতে পারছে না শ্রমিকরা।
শীতের তীব্রতা নিবারণে  বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।  ফলে এ অঞ্চলের ছিন্নমূলখেটে খাওয়া মানুষকে খড়কুটা দিয়ে  আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে  দেখা যাছে।  কমদামি পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের রেল কলনির সহিতন বেওয়া গুলজান / গুচ্ছগ্রামের মজিবর পাগলা ও রাহেলা বেগম বলেন, আমরা অসহায় দরিদ্র মানুষ, কোন আয় রোজগার টাকা পয়সা নেই শীতের কাপড় কিনবো দিয়ে ?  অপরদিকে সোনাহাট স্থলবন্দরের পাথর ভাঙার কাজ জরিত দিনমজুরের লেবাররা বলেন  সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে বন্দরে পৌঁছাতে হয়। ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে অটোরিকশা পাওয়া যায় না। প্রচণ্ড ঠান্ডায়  কাজ করতে  কষ্ট হচ্ছে।
অটোরিকশা চালক  হোসেন আলী, উজ্জল মিয়া, মাইদুল ইসলাম  বলেন, কুয়াশার কারণে সড়কে অটোরিকশা চালাতে সমস্যা হচ্ছে। সকাল বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। সমনে কি আছে কোন যানবাহন আসতেছে বুঝতে কষ্ট হয়। তাছাড়া যাত্রীও কমে গেছে। কুয়াশা আর শীত বাড়লে আয় কমে যায়। যাত্রী পাওয়া যায় না, খুবই সমস্যায় পড়তে হয় । একদিকে আয় রোজকার কমে যায় অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা বাজার ও চাউল কিনতে হিমশীম খেতে হয়। শীতের কাপড় কিনব কি দিয়ে ?
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলায় সরকারি ভাবে কোন শীতবস্ত্র বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ আসলে তা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২ সপ্তাহ থেকে  এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার মাঝারি ধরনের শত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার  সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৭ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা  রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভূরুঙ্গামারীতে জেঁকে বসেছে শীত, দুর্ভোগে নিম্ন আয়ের মানুষ 

আপডেট সময় ০৫:১৫:৫৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪
উত্তরের তিন দিকে সীমান্তবর্তী জেলা কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলায় জেঁকে বসেছে আগাম শীত। যতই দিন যাচ্ছে এ জনপদে শীতের তীব্রতা ততই বাড়ছে। উত্তরের হিমেল হাওয়া এবং ঘন কুয়াশার কারণে গত চার দিন ধরে  পাল্লা দিয়ে কনকনে শীত পড়তে শুরু করেছে। সূর্যের দেখা মেলেনি গত চার দিন। শীতে নাকাল গোটা উপজেলা। একদিকে  ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতে দুর্ভোগ বেড়েছে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের গরিব মানুষের।
 ১৩ ডিসেম্বর শুক্রবার  সকাল ৭টায় জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে বলে জানিয়েছে রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিস।   যদিও ১৩ ডিসেম্বর  শুক্রবার সকাল দশটার পর হতে  রোদ এবং তাপমাত্রা একটু বাড়ছে। তারপর শীতের তীব্র দাপট লক্ষ্য করা যাচ্ছে।
এদিকে, সন্ধ্যার আগ মুহূর্ত  থেকে পরদিন সকাল ১০টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশার চাদরে ঢাকা থাকছে সমগ্র ভূরুঙ্গামারী উপজেলা।
কমছে বাতাসের আর্দ্রতা। বইছে হিমেল হাওয়া। তাপমাত্রা থাকছে ১০ থেকে ১২ ডিগ্রির মধ্যে ।  ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেলা সকাল ১০টা পর্যন্ত হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহনগুলোকে চলাচল করতে দেখা গেছে। এতে চরম বিপাকে পড়েছে অসহায় গরিব মেহনতী  দিনমজুর, শিশু ও বৃদ্ধরা। শীতের তীব্রতায় অসহায় হয়ে পড়েছেন চরাঞ্চলের ও নদী তীরবর্তী  মানুষ। ঘন কুয়াশার কারণে সময় মত কাজে যোগ দিতে পারছে না শ্রমিকরা।
শীতের তীব্রতা নিবারণে  বেসরকারি সংস্থার পক্ষ থেকে যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।  ফলে এ অঞ্চলের ছিন্নমূলখেটে খাওয়া মানুষকে খড়কুটা দিয়ে  আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করতে  দেখা যাছে।  কমদামি পুরাতন কাপড়ের দোকানগুলোতে ভিড় বাড়ছে নিম্ন আয়ের মানুষের।
উপজেলার জয়মনিরহাট ইউনিয়নের রেল কলনির সহিতন বেওয়া গুলজান / গুচ্ছগ্রামের মজিবর পাগলা ও রাহেলা বেগম বলেন, আমরা অসহায় দরিদ্র মানুষ, কোন আয় রোজগার টাকা পয়সা নেই শীতের কাপড় কিনবো দিয়ে ?  অপরদিকে সোনাহাট স্থলবন্দরের পাথর ভাঙার কাজ জরিত দিনমজুরের লেবাররা বলেন  সকাল সাড়ে ৭টার মধ্যে বন্দরে পৌঁছাতে হয়। ঘন কুয়াশা ও শীতের কারণে অটোরিকশা পাওয়া যায় না। প্রচণ্ড ঠান্ডায়  কাজ করতে  কষ্ট হচ্ছে।
অটোরিকশা চালক  হোসেন আলী, উজ্জল মিয়া, মাইদুল ইসলাম  বলেন, কুয়াশার কারণে সড়কে অটোরিকশা চালাতে সমস্যা হচ্ছে। সকাল বেলা হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে হচ্ছে। সমনে কি আছে কোন যানবাহন আসতেছে বুঝতে কষ্ট হয়। তাছাড়া যাত্রীও কমে গেছে। কুয়াশা আর শীত বাড়লে আয় কমে যায়। যাত্রী পাওয়া যায় না, খুবই সমস্যায় পড়তে হয় । একদিকে আয় রোজকার কমে যায় অন্যদিকে নিত্য প্রয়োজনীয় কাঁচা বাজার ও চাউল কিনতে হিমশীম খেতে হয়। শীতের কাপড় কিনব কি দিয়ে ?
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোফাখখারুল ইসলাম জানান, এখন পর্যন্ত উপজেলায় সরকারি ভাবে কোন শীতবস্ত্র বরাদ্দ পাওয়া যায়নি। বরাদ্দ আসলে তা পর্যায়ক্রমে বিতরণ করা হবে।
কুড়িগ্রাম আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার বলেন, গত ২ সপ্তাহ থেকে  এই অঞ্চলের তাপমাত্রা ১০-১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। চলতি মাসের মাঝামাঝি নাগাদ এ জেলার উপর দিয়ে বয়ে যাওয়ার মাঝারি ধরনের শত্য প্রবাহ বয়ে যাওয়ার  সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্রবার সকাল ৭ টায় জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা  রেকর্ড করা হয়েছে ১১ ডিগ্রি সেলসিয়াস।