ঠাকুরগাঁওয়ের রাণীশংকৈলে রয়েছে ইতিহাস ঐতিহ্য আর অগণিত পীর আউলিয়ার মাজার। এরমধ্যে অন্যতম হলো শিয়াল গাজির ২২ হাত লম্বা পীরের মাজার। এখানে যে কেউ মানত করলেই পূরণ হয় মনোবাসনা। কয়েক বিঘা জমি জুড়ে রয়েছে গোরস্থান,রয়েছে একটি পুকুর তার পাশে ২২ হাত লম্বা একটি কবর । এই কবরটিই মূলত গাজি পীরের মাজার।
ইতিহাসের সাক্ষী এই মাজারের প্রকৃত বয়স আজ অবধি কেউ বলতে পারে না। কেউ কেউ ধারণা করছে পাঁচ শত বছরের পুরনো আবার কেউ বলছে হাজার বছরের পুরনো এই মাজার । তবে এই পীরের জন্ম মৃত্যুর সঠিক তথ্য কারো জানা নেই। বছরের পর বছর ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এভাবেই মনের বিশ্বাস নিয়ে সুফল পাওয়ার আশায় মানত করে চলছে এই মাজারটিতে ।
মাজারটি দেখভাল করার জন্য রয়েছে একজন খাদেম, তিনি মাজারটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখেন। এ বিষয়ে ঐ মাজারের খাদেম মেহরাব আলী বলেন, আগে এই মাজারটি আমার বাবা দেখভাল করতো তারপর আমার বড় ভাই এরপর এখন আমি দেখাশোনা করছি ।
কথিত আছে এখানে যে কেউ সন্তান, চাকুরী, ব্যবসা, বিয়ে সাদী সহ যে কোন মানত করলে তা পূরণ হয়। যাদের মনোবাসনা পূর্ণ হয় তারা এখানে পরবর্তীতে গরু ছাগল দিয়ে মিলাদ মাহফিল করে এলাকার মানুষজনকে খাওয়ায় । আবার কেউ কেউ টাকা পয়সাও দিয়ে থাকেন এখানে ।
পথচারী আবুল বলেন, এটি একটা জ্যান্ত মাজার। এখানে অনেক লোকজন আসে প্রতিদিন। যে যার মতো করে মানত করে চলে যায়।
এ বিষয়ে পুকুরের মালিক মোহাম্মদ আলী বলেন, এই কবরটি আমার জন্মের পর থেকেই দেখছি। এটা স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানিরা এখানে ঘাঁটি নির্মাণ করেছিলো। পুরো এলাকাটি জঙ্গল ছিলো এই জঙ্গলের ভীতরে এই কবরটি ছিলো । তখন কয়েকজন পাকিস্তানি সেনা কবরটির পাশে প্রসাব করলে তাদের ঐদিন রাতেই নাকেমুখে রক্ত বের হয়। পরদিন তারা ক্যাম্প ছেড়ে দিয়ে পুরো কবরটি ইট দিয়ে নির্মাণ করে লাল কাপড় দিয়ে ঢেকে দেয় । পূর্বে কেউ এটা দেখভাল করতো কিনা তা জানিনা, তবে এটা এখন অনেক প্রসিদ্ধ অনেকেই এখানে মানত করতে আসে ।
এ বিষয়ে লেহেম্বা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল কালাম বলেন, এই মাজারটি আমরা ছোটবেলা থেকেই দেখে আসছি। পাকিস্তানিরা এটাকে ইট দিয়ে নির্মাণ করে দিয়ে গেছেন। অনেকেই মানছে অনেকেই মানছে না। যেহেতু ইসলাম মাজার সমর্থন করে না সেহেতু সবাই এটাকে গ্রহণ করে না । যাদের ইচ্ছে হচ্ছে তারা যাচ্ছে।