ঢাকা ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে যুগপৎ সঙ্গীদের সাথে আলোচনায় বিএনপি হামজার পর এবার আসছেন কানাডার সামিত সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের আহ্বান উপদেষ্টা আসিফের সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা : গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের কাছেও হার বাংলাদেশের; কঠিন সমীকরণে বিশ্বকাপ ভাগ্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হাসিনাসহ ১২ জনের নামে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন মুসলিম সংখ্যলঘুদের নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের প্রত্যাখ্যান সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন নয় : গোলাম পরওয়ার

ফ্যাসিবাদ গণতন্ত্রকে গুম করেছে : সলিমুল্লাহ খান

১৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম থাকায় গণতন্ত্র শব্দটিই গুম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, দেশের সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে, গণতন্ত্র তিরোহিত করে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে কেবল নির্যাতন করে গেছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লবে কবিতা ও কবিদের কবিতা পাঠ’ শিরোনামের আয়োজনে প্রধান বক্তার ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে গণতন্ত্র শব্দটিকে অর্থহীন করে দিয়েছে্। গণতন্ত্র শব্দটির মর্মকথাই ফ্যাসিবাদ গুম করে দিয়েছে। যে শাসনব্যবস্থা দিনের পর দিন মানুষের অধিকার খর্ব করে, মানুষকে গুম করে রাখে, সেটি কি প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ছিল?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সেসব সমালোচকের প্রসঙ্গে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, অনেকে বলছেন এটি তো রাজনৈতিক সরকার নয়। এটি সংবিধানসম্মত সরকারও নয়। তাদের বলছি, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানই এই সরকারের বৈধতা দিয়েছে। আর যে সংবিধানের কথা বলা হচ্ছে, সেটিও নিজেই নিজেকে বিলুপ্ত করেছে। সংবিধানের মূল কথা ছিল, মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই তার প্রতিভা অনুসারে ফলাফল পাবে। সেটি কী হয়েছে?
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অনেকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও এনেছেন আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেন, এই আন্দোলন-সংগ্রামের হোতাদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের দুষ্কৃতকারী, জঙ্গি বলা হয়েছে। কিন্তু যারা ক্ষমতা ধরে রেখে দীর্ঘদিন জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে তারাই তো আসলে জঙ্গি।
জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে আন্দোলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা কী ছিল? তারা মানুষের মনের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারেননি। তারা তো আসলে কবি নন, হয়ে গেছেন আমলা। ২০০৯ সালে জাতীয় কবিতা পরিষদের জাতীয় কবিতা উৎসবে শামসুর রাহমানের ‘স্যামসন’ কবিতা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন সলিমুল্লাহ খান। সেদিন প্রয়াত কবি রফিক আজাদের নেতৃত্বে একদল তরুণ কবি তাকে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর থেকে সলিমুল্লাহ খান জাতীয় কবিতা পরিষদের কোনো আয়োজনে আসেননি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্যসচিব কবি রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন। বক্তা হিসেবে ছিলেন গীতিকবি শহীদুল্লাহ্ ফরাজী ও মনিরুল ইসলাম মনি।
কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সহযোগী কবিরা আজকে পালিয়ে গেছে। অথচ কবিদের পালিয়ে যাওয়ার কথা না। কবিরা তো জাতির বিবেকের প্রতীক। তারা সততা, প্রেম ও দ্রোহের প্রতীক। কবিরা এ দেশে স্বৈরাচারের পুনর্বাসন দেখতে চায় না। আমরা কোনো স্বৈরাচারের প্রেতাত্মাদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। শুধু কবিতা লিখেই ক্ষান্ত হবেন না কবিরা। তারা দেশ ও সমাজের পুনর্গঠনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।’
কবি মতিন বৈরাগী, কবি কামার ফরিদ, ছড়াকার আবু সালেহ, কবি শহিদুল্লাহর ফারায়জী, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি শাহীন রেজা, কবি নুরুল ইসলাম মনি, কবি শ্যামল জাকারিয়া, কবি শওকত হোসেন, কবি আসাদ কাজল, কবি মাহমুদুন্নবী জ্যোতি, কবি কামরুজ্জামান, কবি বাবু হাবিবুল, কবি এবিএম সোহেল, কবি রোকন জহুর, কবি সুমনা নাজনীনসহ অর্ধশত কবি কবিতা পড়েন।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ফ্যাসিবাদ গণতন্ত্রকে গুম করেছে : সলিমুল্লাহ খান

আপডেট সময় ০৬:১৯:১০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৭ অক্টোবর ২০২৪
১৫ বছরের বেশি সময় ধরে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থা কায়েম থাকায় গণতন্ত্র শব্দটিই গুম হয়ে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান। তিনি বলেন, দেশের সংবিধানকে ক্ষতবিক্ষত করে, গণতন্ত্র তিরোহিত করে আওয়ামী লীগ সরকার জনগণকে কেবল নির্যাতন করে গেছে।
বুধবার (১৬ অক্টোবর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে জাতীয় কবিতা পরিষদ আয়োজিত ‘গণতান্ত্রিক বিপ্লবে কবিতা ও কবিদের কবিতা পাঠ’ শিরোনামের আয়োজনে প্রধান বক্তার ভাষণে তিনি এসব কথা বলেন।
অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে গণতন্ত্র শব্দটিকে অর্থহীন করে দিয়েছে্। গণতন্ত্র শব্দটির মর্মকথাই ফ্যাসিবাদ গুম করে দিয়েছে। যে শাসনব্যবস্থা দিনের পর দিন মানুষের অধিকার খর্ব করে, মানুষকে গুম করে রাখে, সেটি কি প্রকৃত গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থা ছিল?
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বৈধতা নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে। সেসব সমালোচকের প্রসঙ্গে অধ্যাপক সলিমুল্লাহ খান বলেন, অনেকে বলছেন এটি তো রাজনৈতিক সরকার নয়। এটি সংবিধানসম্মত সরকারও নয়। তাদের বলছি, ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানই এই সরকারের বৈধতা দিয়েছে। আর যে সংবিধানের কথা বলা হচ্ছে, সেটিও নিজেই নিজেকে বিলুপ্ত করেছে। সংবিধানের মূল কথা ছিল, মানুষে মানুষে কোনো বৈষম্য থাকবে না। সবাই তার প্রতিভা অনুসারে ফলাফল পাবে। সেটি কী হয়েছে?
ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনে অনেকে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগও এনেছেন আন্দোলনের সমন্বয়কদের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে সলিমুল্লাহ খান বলেন, এই আন্দোলন-সংগ্রামের হোতাদের বিরুদ্ধে সরকার উৎখাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। তাদের দুষ্কৃতকারী, জঙ্গি বলা হয়েছে। কিন্তু যারা ক্ষমতা ধরে রেখে দীর্ঘদিন জনগণের ওপর অত্যাচার করেছে তারাই তো আসলে জঙ্গি।
জুলাই-আগস্টের বিপ্লবে জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৫ আগস্টের আগে আন্দোলনে জাতীয় কবিতা পরিষদের ভূমিকা কী ছিল? তারা মানুষের মনের আকাঙ্ক্ষা বুঝতে পারেননি। তারা তো আসলে কবি নন, হয়ে গেছেন আমলা। ২০০৯ সালে জাতীয় কবিতা পরিষদের জাতীয় কবিতা উৎসবে শামসুর রাহমানের ‘স্যামসন’ কবিতা নিয়ে সমালোচনা করেছিলেন সলিমুল্লাহ খান। সেদিন প্রয়াত কবি রফিক আজাদের নেতৃত্বে একদল তরুণ কবি তাকে মারতে উদ্যত হয়েছিলেন। সেই ঘটনার পর থেকে সলিমুল্লাহ খান জাতীয় কবিতা পরিষদের কোনো আয়োজনে আসেননি।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের আহ্বায়ক কবি মোহন রায়হান। অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সদস্যসচিব কবি রেজাউদ্দিন স্ট্যালিন। বক্তা হিসেবে ছিলেন গীতিকবি শহীদুল্লাহ্ ফরাজী ও মনিরুল ইসলাম মনি।
কবি মোহন রায়হান বলেন, ‘আওয়ামী ফ্যাসিবাদের সহযোগী কবিরা আজকে পালিয়ে গেছে। অথচ কবিদের পালিয়ে যাওয়ার কথা না। কবিরা তো জাতির বিবেকের প্রতীক। তারা সততা, প্রেম ও দ্রোহের প্রতীক। কবিরা এ দেশে স্বৈরাচারের পুনর্বাসন দেখতে চায় না। আমরা কোনো স্বৈরাচারের প্রেতাত্মাদের ক্ষমতায় দেখতে চাই না। শুধু কবিতা লিখেই ক্ষান্ত হবেন না কবিরা। তারা দেশ ও সমাজের পুনর্গঠনেও সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন।’
কবি মতিন বৈরাগী, কবি কামার ফরিদ, ছড়াকার আবু সালেহ, কবি শহিদুল্লাহর ফারায়জী, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি শাহীন রেজা, কবি নুরুল ইসলাম মনি, কবি শ্যামল জাকারিয়া, কবি শওকত হোসেন, কবি আসাদ কাজল, কবি মাহমুদুন্নবী জ্যোতি, কবি কামরুজ্জামান, কবি বাবু হাবিবুল, কবি এবিএম সোহেল, কবি রোকন জহুর, কবি সুমনা নাজনীনসহ অর্ধশত কবি কবিতা পড়েন।
আরো পড়ুন : সাহিত্যে নোবেল পেলেন দক্ষিণ কোরিয়ার হান ক্যাং