ঢাকা ১০:১৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৫, ৬ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে যুগপৎ সঙ্গীদের সাথে আলোচনায় বিএনপি হামজার পর এবার আসছেন কানাডার সামিত সকল প্রকার অনিয়মের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিলের আহ্বান উপদেষ্টা আসিফের সরকারের মূল উদ্দেশ্য শিশুদের মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা : গণশিক্ষা উপদেষ্টা পাকিস্তানের কাছেও হার বাংলাদেশের; কঠিন সমীকরণে বিশ্বকাপ ভাগ্য পারমাণবিক ইস্যুতে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা হাসিনাসহ ১২ জনের নামে ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারির আবেদন মুসলিম সংখ্যলঘুদের নিয়ে বাংলাদেশের বক্তব্য ভারতের প্রত্যাখ্যান সংস্কার ও শেখ হাসিনার বিচারের আগে নির্বাচন নয় : গোলাম পরওয়ার

ভারতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পাকিস্তান থেকে গুড় আমদানী শুরু

ভারত ৫০ শতাংশ রপ্তানী শুল্ক বৃদ্ধি করায় প্রথমবারেরমতো পাকিস্তান থেকে মোংলা বন্দরে আমদানি হলো চিটাগুড় (মোলাসিস মিঠাই)। দীর্ঘদিন প্রায় ২০ বছর পর মোংলা বন্দরে প্রবেশ করেছে পাকিস্তানী পণ্য নিয়ে পানামা পতাকাবাহী “এমটি ডলভফিন-১৯” নামের বাণিজ্যিক জাহাজ। পাকিস্তানের করাচি বন্দর ৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন চিটাগুর পন্য নিয়ে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে জাহাজটি। যা খালাস করতে সময় লাগবে মাত্র দুই দিন, পরে পুনরায় বন্দর ত্যাগ করবে বিদেশী এ জাহাজ।
আমাদনীকারক প্রতিষ্ঠান ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানায়, মোংলা বন্দর দিয়ে এই প্রথম চিটাগুর  মোলাসিস মিঠাই) আমদানী করছে মেসার্স পি এন্ড পি ট্রেডিং লিঃ নামের একটি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। ভারতে ৫০ শতাংশ রপ্তানী শুল্ক বৃদ্ধি করার ফলে ব্যাবসায়ীক মুল্যে সমস্য দেখা দেয়ায় বিকল্প ও সহজলভ্য হিসেবে এবার পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানী করেছে বাংলাদেশ। যার প্রথম চালান নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে ভিড়েছে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এম,টি ডলফিন-১৯ নামের বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ। জাহাজটি গত ২২ জানুয়ারী পাকিস্তানের করাচী বন্দর থেকে ৫ হাজার ৫শ ৫০ মেট্টিক টন চিটাগুড় নিয়ে ছেড়ে আসে এবং ৬ ফেব্রæয়ারী রাতে মোংলা বন্দরে পৌছায়। জাহাজটি মোংলা বন্দরে পৌছাতে ১৫ দিন সময় লেগেছে। আর পন্যগুলো খালাস করতে সময় লাগবে মাত্র দুইদিন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে চিটাগুড় খালাস শুরু হয়। খালাস হওয়া এ চিটাগুড় মোংলা বন্দর থেকে রেল পথে নেয়া হবে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে। সেখান থেকে তা দেশের বিভিন্ন ফিড কোম্পানীতে সরবরাহ করা হবে বলেও জানায় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
আমদানীকৃত পণ্য ভারতের চেয়ে পানিস্তানে এর ক্রয় মুল্য সাশ্রয় হওয়ায় এখন থেকে পাকিস্তান থেকেই আমাদনী করা হবে এবং সড়ক পথ ভাল হওয়ায় তা মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হবে। পাকিস্তানের সাথে এই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে যাত্র শুরু হওয়ায় বিদেশী জাহাজের ক্যাপ্টেন, নাবিক, আমদানীকারক ও শিপিং এজেন্ট প্রতিনিধিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর জেটিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর শফিকুল ইসলাম সরকার, উপ-সচিব মাকরুজ্জামান সহ অন্যান্যরা কর্মকর্তারা।
আমদানীকারক মেসার্স পি এন্ড পি ট্রেডিং লিঃ এর সত্বাধিকারী মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন,  মোংলা বন্দরে কোন জাহাজ জট নেই। এদিকে ভারত আমদানী শুল্ক বৃদ্ধি করার পাকিস্তান থেকে প্রথম চিটাগুড় আমদানী শুরু করা হয়েছে। যদি ভারত সরকার শুল্ক কমায় তা হলে পুনরায় ব্যাবসা করা যায় কিনা তা দেখা যাবে। তবে আপাতত যে মুল্যে পাকিস্তান পন্য দিচ্ছে তাতে প্রতি কেজিতে ৪/৫ টাকা বেশী লাভবান হচ্ছে আমদানীকারকরা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (মেম্বার হারবার ও মেরিন) কমডোর মোঃ শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, নতুন পন্য চিটাগুর আমদানী হওয়ায় মোংলা বন্দরের স্বক্ষমতা আরো একদাপ এগিয়ে গেলো। তিনি পুর্বে তথ্যানুযায়ী আরো বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থ-বছরে প্রথম ৭ মাসে মোংলা বন্দরে ৪৯৬ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। ৬৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৩ শত মে.টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়। এর মধ্যে ২৩ টি কন্টেইনারবাহী জাহাজ থেকে ১২ হাজার ৮৩ টিইইউজ কন্টেইনার লোডিং-আনলোডিং এবং ১২ টি গাড়ির জাহাজ থেকে ৬,৭৫১ ইউনিট রিকন্ডিশন গাড়ি খালাস করা হয়। ২০২৫ সালের শুরুতে মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমন বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ বন্দর দিয়ে ৭৬ টি বিদেশি জাহাজ আগমন করেছিল যা ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ৮৩ টি জাহাজে উন্নিত হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ি, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। ফলে জাহাজ বাড়বে, কর্মস্থান বাড়বে, বাড়বে বন্দরের রাজস্বও।
২০২২ সালের ২৮ জুলাই প্রথম গার্মেন্টস পন্য রপ্তানী ও ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম হিমায়িত ফল (আপেল) আমদানী হয় মোংলা বন্দর দিয়ে।

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

আমরা যেন উদাহরণ সৃষ্টি করতে পারি : ড. ইউনূস

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ভারতে শুল্ক বৃদ্ধির ফলে পাকিস্তান থেকে গুড় আমদানী শুরু

আপডেট সময় ০৫:৪৯:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারী ২০২৫
ভারত ৫০ শতাংশ রপ্তানী শুল্ক বৃদ্ধি করায় প্রথমবারেরমতো পাকিস্তান থেকে মোংলা বন্দরে আমদানি হলো চিটাগুড় (মোলাসিস মিঠাই)। দীর্ঘদিন প্রায় ২০ বছর পর মোংলা বন্দরে প্রবেশ করেছে পাকিস্তানী পণ্য নিয়ে পানামা পতাকাবাহী “এমটি ডলভফিন-১৯” নামের বাণিজ্যিক জাহাজ। পাকিস্তানের করাচি বন্দর ৫ হাজার ৫৫০ মেট্রিক টন চিটাগুর পন্য নিয়ে মোংলা বন্দরের ৮ নম্বর জেটিতে এসে নঙ্গর করে জাহাজটি। যা খালাস করতে সময় লাগবে মাত্র দুই দিন, পরে পুনরায় বন্দর ত্যাগ করবে বিদেশী এ জাহাজ।
আমাদনীকারক প্রতিষ্ঠান ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সুত্রে জানায়, মোংলা বন্দর দিয়ে এই প্রথম চিটাগুর  মোলাসিস মিঠাই) আমদানী করছে মেসার্স পি এন্ড পি ট্রেডিং লিঃ নামের একটি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান। ভারতে ৫০ শতাংশ রপ্তানী শুল্ক বৃদ্ধি করার ফলে ব্যাবসায়ীক মুল্যে সমস্য দেখা দেয়ায় বিকল্প ও সহজলভ্য হিসেবে এবার পাকিস্তান থেকে চিটাগুড় আমদানী করেছে বাংলাদেশ। যার প্রথম চালান নিয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মোংলা সমুদ্র বন্দরের ৮নম্বর জেটিতে ভিড়েছে পানামা পতাকাবাহী জাহাজ এম,টি ডলফিন-১৯ নামের বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ। জাহাজটি গত ২২ জানুয়ারী পাকিস্তানের করাচী বন্দর থেকে ৫ হাজার ৫শ ৫০ মেট্টিক টন চিটাগুড় নিয়ে ছেড়ে আসে এবং ৬ ফেব্রæয়ারী রাতে মোংলা বন্দরে পৌছায়। জাহাজটি মোংলা বন্দরে পৌছাতে ১৫ দিন সময় লেগেছে। আর পন্যগুলো খালাস করতে সময় লাগবে মাত্র দুইদিন। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারী) সকাল থেকে চিটাগুড় খালাস শুরু হয়। খালাস হওয়া এ চিটাগুড় মোংলা বন্দর থেকে রেল পথে নেয়া হবে সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ীতে। সেখান থেকে তা দেশের বিভিন্ন ফিড কোম্পানীতে সরবরাহ করা হবে বলেও জানায় আমদানীকারক প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা।
আমদানীকৃত পণ্য ভারতের চেয়ে পানিস্তানে এর ক্রয় মুল্য সাশ্রয় হওয়ায় এখন থেকে পাকিস্তান থেকেই আমাদনী করা হবে এবং সড়ক পথ ভাল হওয়ায় তা মোংলা বন্দর দিয়ে খালাস করা হবে। পাকিস্তানের সাথে এই প্রথম বানিজ্যিক ভাবে যাত্র শুরু হওয়ায় বিদেশী জাহাজের ক্যাপ্টেন, নাবিক, আমদানীকারক ও শিপিং এজেন্ট প্রতিনিধিকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানিয়েছেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। বন্দর জেটিতে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সদস্য (হারবার ও মেরিন) কমডোর শফিকুল ইসলাম সরকার, উপ-সচিব মাকরুজ্জামান সহ অন্যান্যরা কর্মকর্তারা।
আমদানীকারক মেসার্স পি এন্ড পি ট্রেডিং লিঃ এর সত্বাধিকারী মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন,  মোংলা বন্দরে কোন জাহাজ জট নেই। এদিকে ভারত আমদানী শুল্ক বৃদ্ধি করার পাকিস্তান থেকে প্রথম চিটাগুড় আমদানী শুরু করা হয়েছে। যদি ভারত সরকার শুল্ক কমায় তা হলে পুনরায় ব্যাবসা করা যায় কিনা তা দেখা যাবে। তবে আপাতত যে মুল্যে পাকিস্তান পন্য দিচ্ছে তাতে প্রতি কেজিতে ৪/৫ টাকা বেশী লাভবান হচ্ছে আমদানীকারকরা।
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের (মেম্বার হারবার ও মেরিন) কমডোর মোঃ শফিকুল ইসলাম সরকার বলেন, নতুন পন্য চিটাগুর আমদানী হওয়ায় মোংলা বন্দরের স্বক্ষমতা আরো একদাপ এগিয়ে গেলো। তিনি পুর্বে তথ্যানুযায়ী আরো বলেন, ২০২৪-২০২৫ অর্থ-বছরে প্রথম ৭ মাসে মোংলা বন্দরে ৪৯৬ টি বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ আগমন করে। ৬৫ লক্ষ ৬২ হাজার ৩ শত মে.টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি করা হয়। এর মধ্যে ২৩ টি কন্টেইনারবাহী জাহাজ থেকে ১২ হাজার ৮৩ টিইইউজ কন্টেইনার লোডিং-আনলোডিং এবং ১২ টি গাড়ির জাহাজ থেকে ৬,৭৫১ ইউনিট রিকন্ডিশন গাড়ি খালাস করা হয়। ২০২৫ সালের শুরুতে মোংলা বন্দরে জাহাজ আগমন বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উল্লেখ্য ২০২৪ সালের জানুয়ারি মাসে এ বন্দর দিয়ে ৭৬ টি বিদেশি জাহাজ আগমন করেছিল যা ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে বৃদ্ধি পেয়ে ৮৩ টি জাহাজে উন্নিত হয়েছে।
দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নের প্রাণপ্রবাহ এ বন্দরটি লক্ষ লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বর্তমানে খাদ্যশস্য, সিমেন্ট ক্লিংকার, সার, মোটর গাড়ি, মেশিনারিজ, চাল, গম, কয়লা, তেল, পাথর, ভুট্টা, তেলবীজ, এলপিজি গ্যাস আমদানি এবং সাদামাছ চিংড়ি, পাট ও পাটজাত দ্রব্য, হিমায়িত খাদ্য, কাকড়া, ক্লে টাইলস, রেশমী কাপড় ও জেনারেল কার্গো রপ্তানির মাধ্যমে দেশের চলমান উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে। ফলে জাহাজ বাড়বে, কর্মস্থান বাড়বে, বাড়বে বন্দরের রাজস্বও।
২০২২ সালের ২৮ জুলাই প্রথম গার্মেন্টস পন্য রপ্তানী ও ২০২৩ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রথম হিমায়িত ফল (আপেল) আমদানী হয় মোংলা বন্দর দিয়ে।