ঢাকা ১২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২১ জুন ২০২৫, ৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল, হামাসের প্রত্যাখান

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা। এই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে। তবে, হামাস এই প্রস্তাবকে ‘স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা না থাকায় পুরোপুরি গ্রহণ করেনি। তাদের মূল দাবি—যুদ্ধের সম্পূর্ণ ও স্থায়ী অবসান। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা এখনও চলছে, তবে উভয় পক্ষের শর্তের ভিন্নতা চুক্তি বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি করছে। খবর সিএনএনের।

এই প্রস্তাবটি ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে উত্থাপিত হয়েছে।

ইসরায়েল এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানালেও হামাসের দাবি, যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি নিয়ে আলোচনায় এখনো কোনো স্পষ্টতা নেই, যা আলোচনার জটিলতা বাড়াচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, ১০ জন জীবিত ও ১৮ জন মৃত জিম্মির মুক্তির কথা বলা হয়েছে। তবে, যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির জন্য আলোচনা শুরু করার বিষয়ে ইসরায়েল বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। এ বিষয়ে হামাসের দাবি—ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।

এদিকে হামাস জানিয়েছে, সর্বশেষ প্রস্তাবটি ইসরায়েলের কাছ থেকে এসেছে। এটি তাদের ‘জনগণের কোনো দাবির প্রতি সাড়া দেয় না, যার মধ্যে প্রধান হলো যুদ্ধ এবং দুর্ভিক্ষ বন্ধ করা।’ এমনটাই জানিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম। তবে তিনি ফেসবুকে যোগ করেছেন, ‘আন্দোলনের নেতৃত্ব সমস্ত জাতীয় দায়িত্ব নিয়ে, আমাদের জনগণ যে গণহত্যার শিকার হচ্ছে তার আলোকে প্রস্তাবটির প্রতি সাড়া দেওয়ার বিষয়ে অধ্যয়ন করছে।’

হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মতে, উইটকফের সর্বশেষ প্রস্তাবের তিনটি পাল্টা জবাব দিয়েছে হামাস। এই কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামাস মার্কিন প্রস্তাবে বর্ণিত জিম্মিদের মুক্তি এবং ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে, তবে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাস চায় যে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং ৬০ দিনের পরে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হবে না।

হামাস আরও চায় যে, জাতিসংঘের চ্যানেলের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হোক। তারা চায় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার আগে এই বছরের ২ মার্চ যে অবস্থানে ছিল সেখানে ফিরে যাক। হামাসের পাল্টা প্রস্তাবের সঙ্গে পরিচিত অন্য একজন ব্যক্তিও এই তিনটি দফা নিশ্চিত করেছেন।

নেতানিয়াহু ও হোয়াইট হাউসের বক্তব্য
হোস্টেজস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরামের মতে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগের দিন জিম্মি পরিবারগুলোকে বলেছিলেন যে, তিনি উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তার ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট নিশ্চিত করেছেন যে, ‘বিশেষ দূত উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট হামাসের কাছে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন, যা ইসরায়েল সমর্থিত এবং অনুমোদিত’। এটি নিয়ে আলোচনা চলছে।

লিভিট আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হবে। যাতে আমরা জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পারি। এটি শুরু থেকেই এই প্রশাসনের জন্য একটি অগ্রাধিকার ছিল।’

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ আরও ৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

দুই মাসের যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইসরায়েল, হামাসের প্রত্যাখান

আপডেট সময় ১১:০৩:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৩০ মে ২০২৫

গাজা যুদ্ধবিরতি নিয়ে নতুন মার্কিন প্রস্তাব গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন এক ইসরায়েলি কর্মকর্তা। এই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি বিনিময়ের কথা বলা হয়েছে। তবে, হামাস এই প্রস্তাবকে ‘স্থায়ী’ যুদ্ধবিরতির নিশ্চয়তা না থাকায় পুরোপুরি গ্রহণ করেনি। তাদের মূল দাবি—যুদ্ধের সম্পূর্ণ ও স্থায়ী অবসান। মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে আলোচনা এখনও চলছে, তবে উভয় পক্ষের শর্তের ভিন্নতা চুক্তি বাস্তবায়নে জটিলতা সৃষ্টি করছে। খবর সিএনএনের।

এই প্রস্তাবটি ইসরায়েলে নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে উত্থাপিত হয়েছে।

ইসরায়েল এই প্রস্তাবকে সমর্থন জানালেও হামাসের দাবি, যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তি নিয়ে আলোচনায় এখনো কোনো স্পষ্টতা নেই, যা আলোচনার জটিলতা বাড়াচ্ছে।

ইসরায়েলি কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, এই প্রস্তাবে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতি, ১০ জন জীবিত ও ১৮ জন মৃত জিম্মির মুক্তির কথা বলা হয়েছে। তবে, যুদ্ধের স্থায়ী সমাপ্তির জন্য আলোচনা শুরু করার বিষয়ে ইসরায়েল বিস্তারিত তথ্য দেয়নি। এ বিষয়ে হামাসের দাবি—ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।

এদিকে হামাস জানিয়েছে, সর্বশেষ প্রস্তাবটি ইসরায়েলের কাছ থেকে এসেছে। এটি তাদের ‘জনগণের কোনো দাবির প্রতি সাড়া দেয় না, যার মধ্যে প্রধান হলো যুদ্ধ এবং দুর্ভিক্ষ বন্ধ করা।’ এমনটাই জানিয়েছেন হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য বাসেম নাইম। তবে তিনি ফেসবুকে যোগ করেছেন, ‘আন্দোলনের নেতৃত্ব সমস্ত জাতীয় দায়িত্ব নিয়ে, আমাদের জনগণ যে গণহত্যার শিকার হচ্ছে তার আলোকে প্রস্তাবটির প্রতি সাড়া দেওয়ার বিষয়ে অধ্যয়ন করছে।’

হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার মতে, উইটকফের সর্বশেষ প্রস্তাবের তিনটি পাল্টা জবাব দিয়েছে হামাস। এই কর্মকর্তা সিএনএনকে জানিয়েছেন, হামাস মার্কিন প্রস্তাবে বর্ণিত জিম্মিদের মুক্তি এবং ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে, তবে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আশ্বাস চায় যে, স্থায়ী যুদ্ধবিরতির বিষয়ে আলোচনা অব্যাহত থাকবে এবং ৬০ দিনের পরে যুদ্ধ পুনরায় শুরু হবে না।

হামাস আরও চায় যে, জাতিসংঘের চ্যানেলের মাধ্যমে মানবিক সহায়তা প্রদান করা হোক। তারা চায় ইসরায়েল প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) পুনরায় সামরিক অভিযান শুরু করার আগে এই বছরের ২ মার্চ যে অবস্থানে ছিল সেখানে ফিরে যাক। হামাসের পাল্টা প্রস্তাবের সঙ্গে পরিচিত অন্য একজন ব্যক্তিও এই তিনটি দফা নিশ্চিত করেছেন।

নেতানিয়াহু ও হোয়াইট হাউসের বক্তব্য
হোস্টেজস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরামের মতে, ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু আগের দিন জিম্মি পরিবারগুলোকে বলেছিলেন যে, তিনি উইটকফের প্রস্তাব গ্রহণ করেছেন।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) তার ব্রিফিংয়ে হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিভিট নিশ্চিত করেছেন যে, ‘বিশেষ দূত উইটকফ এবং প্রেসিডেন্ট হামাসের কাছে একটি যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব জমা দিয়েছেন, যা ইসরায়েল সমর্থিত এবং অনুমোদিত’। এটি নিয়ে আলোচনা চলছে।

লিভিট আরও বলেন, ‘আমরা আশা করি, গাজায় একটি যুদ্ধবিরতি হবে। যাতে আমরা জিম্মিদের বাড়িতে ফিরিয়ে আনতে পারি। এটি শুরু থেকেই এই প্রশাসনের জন্য একটি অগ্রাধিকার ছিল।’

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় শিশুসহ আরও ৫৪ ফিলিস্তিনি নিহত