কোটা সংস্কারপন্থিদের আন্দোলনে উত্তাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এখন ছাত্রলীগের হামলায় হয়ে উঠেছে উত্তপ্ত। চলেছে পাল্টাপাল্টি হামলা। যদিও ছাত্রলীগের দাবি, উসকানিমূলক স্লোগান-বক্তব্য ও হলের শিক্ষার্থীদের ওপর আন্দোলনকারীরা হামলা চালালে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা আন্দোলনকারীদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে। যদিও হামলার পর এখন পর্যন্ত কোটা সংস্কারপন্থিদের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য আসেনি। আর ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলে আমরা সহযোগিতা করব।
আন্দোলনে থাকা শিক্ষার্থীদের অবমাননা করা হয়েছে দাবিতে রাত থেকেই ক্যাম্পাস জড়ো হতে থাকেন কোটা সংস্কারপন্থিরা। দুপুর ১২টার মধ্যে বক্তব্য প্রত্যাহারের আল্টিমেটাম দেন তারা। এরপর আজ সোমবার (১৫ জুলাই) বেলা ৩টার দিকে শিক্ষার্থীদের ওপর শুরু হয় হামলা। হেলমেট পরে হাতে লাঠি, হকিস্টিক, ব্যাট, রামদা ইত্যাদি নিয়ে চালানো এই হামলায় আহত হন অনেকে। তাদের মধ্যে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী চিকিৎসা নিচ্ছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে।
ছাত্রলীগ সভাপতি বলেন, শুরু থেকেই আমরা দেশবিরোধী বিভিন্ন স্লোগান দেখতে পাচ্ছি। আজও তারা পূর্বপরিকল্পিত এবং উসকানিমূলকভাবে কর্মসূচি দিয়েছে। তারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন হলে গিয়ে হামলা চালিয়েছে। ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা যারা শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিল, তাদের ওপর নারকীয়ভাবে হামলা চালিয়েছে। পরে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা এবং সাধারণ শিক্ষার্থীরা একত্রিত হয়ে রাজাকারের প্রেতাত্মাদের ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করেছে।
সাদ্দাম আরও বলেন, আমরা প্রশাসনকে আহ্বান জানাব, যারা এই ক্যাম্পাসের শান্তিপূর্ণ অবস্থানকে বিনষ্ট করতে চায়, তাদের ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নিক। আর ছাত্রলীগ তাদেরকে রাজপথে শায়েস্তা করার জন্য প্রস্তুত আছে।
ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেছেন, দলীয় কর্মীদের বাঁচাতে নয়, বরং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অংশ হিসেবেই আমরা রাস্তায় নেমেছি। সন্ত্রাসীরা কমপক্ষে ১০০ জন শিক্ষার্থীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তারা যখন হলে হামলা চালিয়েছে, তখন ছাত্রছাত্রীরা বেরিয়ে এসে এই অপকর্মের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। আমরা খুবই অবাক হয়েছি, আশপাশের এলাকা থেকেও মানুষজন এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।
আজ সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন পয়েন্টে পুলিশের অবস্থান দেখা যায়। দোয়েল চত্বর থেকে ডিএমপির যুগ্ম পুলিশ কমিশনার (অপারেশনস) বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, আমরা প্রস্তুত। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি আমাদের সহযোগিতা কামনা করেন, তাহলে আমরা তাদের সহযোগিতা করব। আমাদের সঙ্গে দাঙ্গা পুলিশও রয়েছে। আমরা একটু সামনে এগোব।
আরো পড়ুন : কোটা আন্দোলনকারীদের ওপর হেলমেট পরে হামলা, আহত দেড় শতাধিক