ঢাকা ০১:২১ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ জুলাই ২০২৫, ২৯ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সিএনজি চালকদের বিআরটিএ ভবন ঘেরাও, আটকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

ঢাকা জেলার সিএনজি অটোরিকশা চালকরা তাদের অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রোববার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সদর দপ্তর ঘেরাও করে রেখেছেন। ভবনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পুলিশ আটকা পড়ে আছেন।

এদিন বিকেল ৫টায় অফিসের সময় শেষ হলেও কাউকে ভবন বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। সোয়া ৫টার দিকে বিআরটিএ ভবন থেকে একজন ব্যক্তি দেয়াল টপকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাকে ধাওয়া দেন। পরে তিনি আবার ভেতরে ঢুকে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর অপর একজন ভবনের সামনে থাকা ফুটওভার ব্রিজে ওঠার চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা তাকেও ধাওয়া দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেন।

সিএনজি চালকদের দাবি, ঢাকা জেলার অন্তর্গত সিএনজিগুলোকে ঢাকা মহানগরে চলতে দিতে হবে এবং এজন্য কোনো ধরনের মামলা দিতে পারবে না ঢাকা মহানগর পুলিশ।

সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নিলেও দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করে বিআরটিএ ভবন ঘেরাও করেন। এ অবরোধের ফলে ফার্মগেটমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, উত্তরাগামী যানবাহনগুলোও পড়েছে যানজটের কবলে।

অবরোধকারীরা মাইকে ঘোষণা দেন, ‘কেউ যেন বিআরটি ভবন থেকে বের হতে না পারেন। একটা মানুষকেও যেন বের হতে না দেওয়া হয়। এখানে সব স্বৈরাচারের দোসর বসে আছেন। বিআরটিএ ভবনের ভেতরে যে পুলিশ সদস্যরা ঢুকেছে, তারাও যেন বের হতে না পারেন। বিআরটিএর চেয়ারম্যানও যেন এখান থেকে বের হতে না পারেন। আমাদের দাবি আদায় হবে, তারপর অন্যকিছু।’

আন্দোলনরত সিএনজি অটোরিকশা চালকেরা জানান, সকাল থেকে বিআরটিএ ভবনের দুই গেট বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বেলা ১১টার দিকে দুটি গাড়ি বিআরটিএ ভবন থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও বের হতে দেওয়া হয়নি।

সিএনজি অটোরিকশা চালক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুরুতে বিআরটি ভবনের রাস্তার ফুটপাতে অবস্থান নিই। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বনানী থেকে ফার্মগেটমুখী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে উত্তরামুখী সড়কও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু, এয়ারপোর্টগামী যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমরা ঘণ্টাখানেক পর ওই সড়ক ছেড়ে দিই।’

জানা গেছে, ঢাকা-থ নেমপ্লেটের তিন হাজার সিএনজি অটোরিকশা চালকেরা ঢাকা মহানগরে চালাতে চান। তারা চান, এসব গাড়ি ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ এর নেমপ্লেটের মতো মহানগরের ভেতরে চলতে দিতে হবে।

নূরুল ইসলাম বলছিলেন, “আওয়ামী আমলে মাসিক চুক্তিতে টাকার বিনিময়ে পুলিশ আমাদের গাড়িগুলো ঢাকা মহানগরের মধ্যে ঢুকতে দিতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ‘ঢাকা-থ’ নেমপ্লেটের গাড়ি মহানগরের মধ্যে ঢুকলে মামলা দেওয়া হয়।”

সকাল থেকেই ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অন্তর্গত সিএনজিচালকরা বিআরটিএ ভবনের সামনে একত্রিত হন। তাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধান সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে মহাখালীগামী সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে দুর্ভোগে পড়েন ওই পথের সাধারণ যাত্রীরা।

মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি মো. জুয়েল মালতীয়া বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা থেকে এখানে অবস্থান করছি। ঢাকা জেলার দুই থেকে তিন হাজার গাড়ি (সিএনজি অটোরিকশা) মহানগরে চালানোর জন্য বারবার স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু বিআরটিএ বারবার আমাদের মিথ্য আশ্বাস দিয়েছে। গত ২০১৬ সালে আমাদের ২৬টি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ওয়ার্ড বানিয়েছে। মহানগর বড় বানিয়েছে। তাহলে আমরা যাব কোথায়? এখন আমার জায়গায়, আমাকে বলে অবৈধ।’

মো. জুয়েল মালতীয়া আরও বলেন, ‘আজকে আমরা বিআরটিএ ঘেরাও করেছি। আজকে বিআরটিএর একটি লোককেও বাইরে বের হতে দেবো না। কারণ, এরাই রাষ্ট্রের দুষ্টু লোক। এরা ঘুষ খেয়ে এ ধরনের কাজ করে।’

সন্ত্রাসীদের ধরতে শুরু হচ্ছে চিরুনি অভিযান : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারিয়ে সিরিজে সমতা আনলো বাংলাদেশ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

সিএনজি চালকদের বিআরটিএ ভবন ঘেরাও, আটকা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা

আপডেট সময় ০৬:১৬:১৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৩ জুলাই ২০২৫

ঢাকা জেলার সিএনজি অটোরিকশা চালকরা তাদের অবরোধ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজ রোববার (১৩ জুলাই) সকাল থেকে রাজধানীর বনানীতে বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটির (বিআরটিএ) সদর দপ্তর ঘেরাও করে রেখেছেন। ভবনে থাকা কর্মকর্তা-কর্মচারী ও পুলিশ আটকা পড়ে আছেন।

এদিন বিকেল ৫টায় অফিসের সময় শেষ হলেও কাউকে ভবন বের হতে দেওয়া হচ্ছে না। সোয়া ৫টার দিকে বিআরটিএ ভবন থেকে একজন ব্যক্তি দেয়াল টপকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাকে ধাওয়া দেন। পরে তিনি আবার ভেতরে ঢুকে পড়েন। এর কিছুক্ষণ পর অপর একজন ভবনের সামনে থাকা ফুটওভার ব্রিজে ওঠার চেষ্টা করেন। আন্দোলনকারীরা তাকেও ধাওয়া দিয়ে ভেতরে ঢুকিয়ে দেন।

সিএনজি চালকদের দাবি, ঢাকা জেলার অন্তর্গত সিএনজিগুলোকে ঢাকা মহানগরে চলতে দিতে হবে এবং এজন্য কোনো ধরনের মামলা দিতে পারবে না ঢাকা মহানগর পুলিশ।

সকাল ১০টা থেকে আন্দোলনকারীরা সড়কে অবস্থান নিলেও দুপুর সোয়া ১২টার দিকে অটোরিকশা চালকরা সড়ক অবরোধ করে বিআরটিএ ভবন ঘেরাও করেন। এ অবরোধের ফলে ফার্মগেটমুখী সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। অন্যদিকে, উত্তরাগামী যানবাহনগুলোও পড়েছে যানজটের কবলে।

অবরোধকারীরা মাইকে ঘোষণা দেন, ‘কেউ যেন বিআরটি ভবন থেকে বের হতে না পারেন। একটা মানুষকেও যেন বের হতে না দেওয়া হয়। এখানে সব স্বৈরাচারের দোসর বসে আছেন। বিআরটিএ ভবনের ভেতরে যে পুলিশ সদস্যরা ঢুকেছে, তারাও যেন বের হতে না পারেন। বিআরটিএর চেয়ারম্যানও যেন এখান থেকে বের হতে না পারেন। আমাদের দাবি আদায় হবে, তারপর অন্যকিছু।’

আন্দোলনরত সিএনজি অটোরিকশা চালকেরা জানান, সকাল থেকে বিআরটিএ ভবনের দুই গেট বন্ধ করে দিয়েছেন তারা। বেলা ১১টার দিকে দুটি গাড়ি বিআরটিএ ভবন থেকে বের হতে চেষ্টা করলেও বের হতে দেওয়া হয়নি।

সিএনজি অটোরিকশা চালক নূরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা শুরুতে বিআরটি ভবনের রাস্তার ফুটপাতে অবস্থান নিই। দুপুর সোয়া ১২টা থেকে বনানী থেকে ফার্মগেটমুখী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়। পরে উত্তরামুখী সড়কও বন্ধ করে দেওয়া হয়। কিন্তু, এয়ারপোর্টগামী যাত্রীদের কথা চিন্তা করে আমরা ঘণ্টাখানেক পর ওই সড়ক ছেড়ে দিই।’

জানা গেছে, ঢাকা-থ নেমপ্লেটের তিন হাজার সিএনজি অটোরিকশা চালকেরা ঢাকা মহানগরে চালাতে চান। তারা চান, এসব গাড়ি ‘ঢাকা মেট্রো-থ’ এর নেমপ্লেটের মতো মহানগরের ভেতরে চলতে দিতে হবে।

নূরুল ইসলাম বলছিলেন, “আওয়ামী আমলে মাসিক চুক্তিতে টাকার বিনিময়ে পুলিশ আমাদের গাড়িগুলো ঢাকা মহানগরের মধ্যে ঢুকতে দিতো। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ‘ঢাকা-থ’ নেমপ্লেটের গাড়ি মহানগরের মধ্যে ঢুকলে মামলা দেওয়া হয়।”

সকাল থেকেই ঢাকা জেলা সিএনজি অটোরিকশা মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির অন্তর্গত সিএনজিচালকরা বিআরটিএ ভবনের সামনে একত্রিত হন। তাদের উপস্থিতি বাড়তে থাকলে দুপুর সোয়া ১২টার দিকে প্রধান সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে করে মহাখালীগামী সড়কে তীব্র যানজট দেখা দিয়েছে। সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকায় তপ্ত রোদের মধ্যে দুর্ভোগে পড়েন ওই পথের সাধারণ যাত্রীরা।

মালিক-শ্রমিক কল্যাণ সোসাইটির সভাপতি মো. জুয়েল মালতীয়া বলেন, ‘আমরা সকাল ১০টা থেকে এখানে অবস্থান করছি। ঢাকা জেলার দুই থেকে তিন হাজার গাড়ি (সিএনজি অটোরিকশা) মহানগরে চালানোর জন্য বারবার স্মারকলিপি দিয়েছি। কিন্তু বিআরটিএ বারবার আমাদের মিথ্য আশ্বাস দিয়েছে। গত ২০১৬ সালে আমাদের ২৬টি ইউনিয়ন কেটে নিয়ে ওয়ার্ড বানিয়েছে। মহানগর বড় বানিয়েছে। তাহলে আমরা যাব কোথায়? এখন আমার জায়গায়, আমাকে বলে অবৈধ।’

মো. জুয়েল মালতীয়া আরও বলেন, ‘আজকে আমরা বিআরটিএ ঘেরাও করেছি। আজকে বিআরটিএর একটি লোককেও বাইরে বের হতে দেবো না। কারণ, এরাই রাষ্ট্রের দুষ্টু লোক। এরা ঘুষ খেয়ে এ ধরনের কাজ করে।’

সন্ত্রাসীদের ধরতে শুরু হচ্ছে চিরুনি অভিযান : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা