ঢাকা ০২:১২ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৭ জানুয়ারী ২০২৫, ২৩ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রায় বাধা কোথায়?

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য কবে বিদেশ যাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা। কারো কারো মতে এটা ধুম্রজাল। পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের সময়  নানা রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার দাবিতে রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছে বিএনপি। সে আন্দোলন এখনো অব্যাহত আছে। কিন্তু কারণটা কী। এখন তো আর আওয়ামী লীগ সরকার নেই যারা তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার পর সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাননি। কিন্তু মুক্ত খালেদা জিয়া এতদিনেও কেন বিদেশে গেলেন না সে প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাত্রার স্বাস্থ্যগত দিক যেমন আছে তেমনি একটি রাজনৈতিক দিকও রয়েছে। তিনি তো এখন মুক্ত। সুতরাং তিনি যে কোনও সময় বাইরে যেতে পারেন। তিনি যদি বাইরে যেতে দেরি করেন বা না যান তাহলে বুঝতে হবে যে এর পেছনে কোনও না কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকের চাওয়া হচ্ছে অনিবার্য না হলে খালেদা জিয়া দেশেই থাকুক। কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এমন অবস্থানের কারণে বিএনপির অনেকের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপির রাজনীতি। উনি যদি চোখের সামনে না থাকেন তাহলে বিএনপি অনেকটা দুর্বল হয়ে যাবে। যতদিন বেগম জিয়া দৃশ্যপটে আছেন ততদিন তিনিই কিন্তু বিএনপির রাজনীতির কেন্দ্র। সুতরাং তার উপস্থিতি বিএনপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। বিদেশে দীর্ঘ যাত্রার জন্য খালেদা জিয়ার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয় জড়িত এখানে। ওনার মাল্টিপল কোমর্বিডিটিজ আছে তো। কাজেই সব জিনিস বিবেচনায় নিয়েই প্ল্যানিং করতে হয়। আমরা ইচ্ছা করলেই আমরা অন্য পেশেন্টের জন্য যেমন একটা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এনে তিন ঘণ্টায় সিঙ্গাপুর বা ব্যাংকক নিয়ে গেলাম আমাদের ইস্যুটাতো এরকম না।

বিএনপি’র মুখপাত্র এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার সমস্ত আয়োজন মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। তবে দূরপাল্লার যাওয়ার মতো এয়ার অ্যাম্ব্যুলেন্স সংগ্রহ করাটার জন্য কিছুদিন বিলম্ব হচ্ছে।

জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনীতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের বড় দাবি রয়েছে আন্দোলনকারীদের। ২০০৭ সালে এক এগারোর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারও রাজনীতিতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় আলোচিত হয়েছিল ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। যদিও মহিউদ্দিন আহমদ রচিত এক এগারো সরকার নিয়ে রচিত গ্রন্থে বিগ্রেডিয়ার চৌধুরী ফজলুল বারীর উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন, সেটি মাইনাস টু ফর্মুলা ছিল না, ছিল মাইনাস ফোর ফর্মুলা। ‘মাইনাস টু’ বলতে প্রধান দুই দলের শীর্ষ নেত্রীদের বোঝানো হয়। তবে ‘মাইনাস ফোর’র বাকি দু’জন কারা সেটি পরিষ্কার না হলেও মহিউদ্দিন আহমদ ধারণা পান যে বাকি দু’জন হলেন দুই নেত্রীর পুত্র তারেক রহমান এবং সজীব ওয়াজেদ জয়।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা জনগণের সরকার। এটা গণঅভ্যুত্থান, গণবিল্পব-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট জনগণের সরকার। সুতরাং এখানে মাইনাস ফর্মুলার কোনো অস্তিত্ব এখানে নেই। এই সরকার জনগণের সরকার। আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করি।

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

আন্দোলনকারীর বাবার নামে মামলা; অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

খালেদা জিয়ার বিদেশ যাত্রায় বাধা কোথায়?

আপডেট সময় ০৫:১৩:৫৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া চিকিৎসার জন্য কবে বিদেশ যাবেন, তা নিয়ে শুরু হয়েছে অনিশ্চয়তা। কারো কারো মতে এটা ধুম্রজাল। পতিত ফ্যাসিস্ট হাসিনার সরকারের সময়  নানা রোগে আক্রান্ত খালেদা জিয়াকে বিদেশে পাঠিয়ে চিকিৎসার দাবিতে রাজপথে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করেছে বিএনপি। সে আন্দোলন এখনো অব্যাহত আছে। কিন্তু কারণটা কী। এখন তো আর আওয়ামী লীগ সরকার নেই যারা তাকে বিদেশ যেতে অনুমতি দেয়নি। শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হবার পর সাড়ে তিন মাস অতিবাহিত হলেও খালেদা জিয়া বিদেশে চিকিৎসার জন্য যাননি। কিন্তু মুক্ত খালেদা জিয়া এতদিনেও কেন বিদেশে গেলেন না সে প্রশ্ন উঠেছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, খালেদা জিয়ার বিদেশে যাত্রার স্বাস্থ্যগত দিক যেমন আছে তেমনি একটি রাজনৈতিক দিকও রয়েছে। তিনি তো এখন মুক্ত। সুতরাং তিনি যে কোনও সময় বাইরে যেতে পারেন। তিনি যদি বাইরে যেতে দেরি করেন বা না যান তাহলে বুঝতে হবে যে এর পেছনে কোনও না কোনও রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের অনেকের চাওয়া হচ্ছে অনিবার্য না হলে খালেদা জিয়া দেশেই থাকুক। কারণ হচ্ছে রাজনৈতিক। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সংস্কারের পর নির্বাচন হবে- অন্তর্বর্তী সরকারের এমন অবস্থানের কারণে বিএনপির অনেকের মধ্যে সংশয় তৈরি হয়েছে।

খালেদা জিয়াকে নিয়েই বিএনপির রাজনীতি। উনি যদি চোখের সামনে না থাকেন তাহলে বিএনপি অনেকটা দুর্বল হয়ে যাবে। যতদিন বেগম জিয়া দৃশ্যপটে আছেন ততদিন তিনিই কিন্তু বিএনপির রাজনীতির কেন্দ্র। সুতরাং তার উপস্থিতি বিএনপির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

খালেদা জিয়ার ব্যক্তিগত চিকিৎসক এবং বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর স্বাস্থ্যগত বিভিন্ন জটিলতা রয়েছে। বিদেশে দীর্ঘ যাত্রার জন্য খালেদা জিয়ার শারীরিক ও মানসিক প্রস্তুতিসহ বিভিন্ন বিষয় জড়িত এখানে। ওনার মাল্টিপল কোমর্বিডিটিজ আছে তো। কাজেই সব জিনিস বিবেচনায় নিয়েই প্ল্যানিং করতে হয়। আমরা ইচ্ছা করলেই আমরা অন্য পেশেন্টের জন্য যেমন একটা এয়ার অ্যাম্বুলেন্স এনে তিন ঘণ্টায় সিঙ্গাপুর বা ব্যাংকক নিয়ে গেলাম আমাদের ইস্যুটাতো এরকম না।

বিএনপি’র মুখপাত্র এবং স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলেন, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশ যাওয়ার সমস্ত আয়োজন মোটামুটি সম্পন্ন হয়েছে। তবে দূরপাল্লার যাওয়ার মতো এয়ার অ্যাম্ব্যুলেন্স সংগ্রহ করাটার জন্য কিছুদিন বিলম্ব হচ্ছে।

জুলাই-আগষ্ট আন্দোলনে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী বাংলাদেশে রাজনীতি ও রাষ্ট্র সংস্কারের বড় দাবি রয়েছে আন্দোলনকারীদের। ২০০৭ সালে এক এগারোর সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারও রাজনীতিতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছিল। সে সময় আলোচিত হয়েছিল ‘মাইনাস টু ফর্মুলা’। যদিও মহিউদ্দিন আহমদ রচিত এক এগারো সরকার নিয়ে রচিত গ্রন্থে বিগ্রেডিয়ার চৌধুরী ফজলুল বারীর উদ্ধৃতিতে উল্লেখ করেছেন, সেটি মাইনাস টু ফর্মুলা ছিল না, ছিল মাইনাস ফোর ফর্মুলা। ‘মাইনাস টু’ বলতে প্রধান দুই দলের শীর্ষ নেত্রীদের বোঝানো হয়। তবে ‘মাইনাস ফোর’র বাকি দু’জন কারা সেটি পরিষ্কার না হলেও মহিউদ্দিন আহমদ ধারণা পান যে বাকি দু’জন হলেন দুই নেত্রীর পুত্র তারেক রহমান এবং সজীব ওয়াজেদ জয়।

বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এটা জনগণের সরকার। এটা গণঅভ্যুত্থান, গণবিল্পব-গণতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে সৃষ্ট জনগণের সরকার। সুতরাং এখানে মাইনাস ফর্মুলার কোনো অস্তিত্ব এখানে নেই। এই সরকার জনগণের সরকার। আমরা এই সরকারকে সহযোগিতা করি।