ঢাকা ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৮ জানুয়ারী ২০২৫, ২৫ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলন নিয়ে ৮ সিনেমা; নির্মাতা চূড়ান্ত বেশি সংস্কার না চাইলে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন : প্রেস সচিব পুলিশে চাকরি পাচ্ছেন আন্দোলনে আহত ১০০ জন: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ১৪৪ ধারা ভেঙে সচিবালয় ঘেরাওয়ের চেষ্টা, পুলিশের ধাওয়া অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার কাজের তালিকা দিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ সরকার গঠনের পর অভিযুক্ত কাউকে দেশত্যাগ করতে দেয়া হয়নি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ট্রুডো কেন হঠাৎ পদত্যাগের ঘোষণা দিলেন? কে হতে যাচ্ছে তার উত্তরসূরি? গঠিত হচ্ছে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান অধিদপ্তর’,  ইরানে হিজাব খুলে সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্বদের প্রতিবাদ শক্তিশালী ভূমিকম্পে তিব্বতে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫৩

মুক্তিযুদ্ধের গান সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই: শাহীন সামাদ

বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশ শত্রুমুক্ত করার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করতে কণ্ঠে তুলে নিয়েছিলেন গান। বিজয় দিবস এলেই এ কণ্ঠসৈনিক ফিরে যান সেই উত্তাল দিনগুলোতে। 

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার শিল্পীদের গানগুলো নিয়ে কথা হয় শাহীন সামাদের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুপ্রেরণাদায়ী সেই গান রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। গানগুলো শুধু ছায়ানটে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগটি আমি নিয়েছি। আমি ছায়ানটে এরই মধ্যে ৩৪টির মতো গান জমা দিয়েছি। অন্য কোথাও গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। গানগুলো নতুন করে কোথাও রেকর্ড করা হচ্ছে না। যারা দু’একজন এ গান করছেন, তা যথাযথ নিয়ম মেনে করছেন না। যারা এ গানগুলো গাইছে তারা ভুল সুর ও কথায় গাইছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’

নতুন প্রজন্মের দেশ নিয়ে জানতে চাইলে শাহীন সামাদ বলেন, ‘আমরা যেভাবে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করেছি, জানি না এখনকার প্রজন্ম সেভাবে দেশকে অন্তরে ধারণ করে কি না। তাদের প্রতি আমার পরামর্শ- স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের জন্মকথা জানতে হবে। তবেই দেশকে ভালোবাসা যাবে।’

গানগুলো সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়ে এ শিল্পী বলেন, ‘সেই সময়ের শিল্পীরা আমরা যারা বেঁচে আছি তাদের ডেকে নিয়ে গানগুলো গাওয়ানো উচিত। কেউ ভুল রেকর্ডিং করলে তা শুদ্ধ করে সংরক্ষণ করা দরকার।’

নিজের সংগীতচর্চা নিয়ে এ শিল্পী আরও বলেন, ‘আমি ৫ বছর বয়স থেকেই গান করছি। এখনও সংগীতচর্চার মধ্যে আছি। ছায়ানটের সঙ্গে সংযুক্ত আছি। ছাত্র-ছাত্রীদের গান শেখাচ্ছি। নতুন শিল্লী তৈরি করছি। এই প্রজন্মে নজরুল সংগীতের জন্য যেসব ছেলে-মেয়ে বেশ নাম করছে তারা আমার ছাত্র-ছাত্রী। এতে আমি অনেক গর্ব অনুভব করি।’

নজরুলসংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন শিল্পী ছিলেন। তিনি ৩৬টি দেশাত্মবোধক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘রক্তের প্রতিশোধ রক্তেই নেব আমরা’। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থায় যোগ দেন। তারা বিভিন্ন রিফিউজি ক্যাম্প এবং মুক্তাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গান শোনাতেন।

শিল্পী শাহীন সামাদকে নজরুলসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদক প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার।

রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মুক্তিযুদ্ধের গান সংরক্ষণের কোনো উদ্যোগ নেই: শাহীন সামাদ

আপডেট সময় ১১:৩৯:১৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৪

বিশিষ্ট নজরুল সংগীতশিল্পী শাহীন সামাদ মুক্তিযুদ্ধের সময় দেশ শত্রুমুক্ত করার স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে যোগ দিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে জীবন বাজি রেখে মুক্তিযোদ্ধাদের উদ্বুদ্ধ করতে কণ্ঠে তুলে নিয়েছিলেন গান। বিজয় দিবস এলেই এ কণ্ঠসৈনিক ফিরে যান সেই উত্তাল দিনগুলোতে। 

মুক্তিযুদ্ধের সময় স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র ও বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থার শিল্পীদের গানগুলো নিয়ে কথা হয় শাহীন সামাদের সঙ্গে। তিনি আক্ষেপের সুরে বলেন, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় অনুপ্রেরণাদায়ী সেই গান রক্ষণাবেক্ষণের কোনো ব্যবস্থা নেই। গানগুলো শুধু ছায়ানটে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এ উদ্যোগটি আমি নিয়েছি। আমি ছায়ানটে এরই মধ্যে ৩৪টির মতো গান জমা দিয়েছি। অন্য কোথাও গান সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হচ্ছে না। গানগুলো নতুন করে কোথাও রেকর্ড করা হচ্ছে না। যারা দু’একজন এ গান করছেন, তা যথাযথ নিয়ম মেনে করছেন না। যারা এ গানগুলো গাইছে তারা ভুল সুর ও কথায় গাইছে। বিষয়টি খুবই দুঃখজনক।’

নতুন প্রজন্মের দেশ নিয়ে জানতে চাইলে শাহীন সামাদ বলেন, ‘আমরা যেভাবে দেশপ্রেম নিয়ে কাজ করেছি, জানি না এখনকার প্রজন্ম সেভাবে দেশকে অন্তরে ধারণ করে কি না। তাদের প্রতি আমার পরামর্শ- স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের জন্মকথা জানতে হবে। তবেই দেশকে ভালোবাসা যাবে।’

গানগুলো সংরক্ষণের পরামর্শ দিয়ে এ শিল্পী বলেন, ‘সেই সময়ের শিল্পীরা আমরা যারা বেঁচে আছি তাদের ডেকে নিয়ে গানগুলো গাওয়ানো উচিত। কেউ ভুল রেকর্ডিং করলে তা শুদ্ধ করে সংরক্ষণ করা দরকার।’

নিজের সংগীতচর্চা নিয়ে এ শিল্পী আরও বলেন, ‘আমি ৫ বছর বয়স থেকেই গান করছি। এখনও সংগীতচর্চার মধ্যে আছি। ছায়ানটের সঙ্গে সংযুক্ত আছি। ছাত্র-ছাত্রীদের গান শেখাচ্ছি। নতুন শিল্লী তৈরি করছি। এই প্রজন্মে নজরুল সংগীতের জন্য যেসব ছেলে-মেয়ে বেশ নাম করছে তারা আমার ছাত্র-ছাত্রী। এতে আমি অনেক গর্ব অনুভব করি।’

নজরুলসংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের একজন শিল্পী ছিলেন। তিনি ৩৬টি দেশাত্মবোধক গানে কণ্ঠ দিয়েছেন। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ‘মোরা একটি ফুলকে বাঁচাবো বলে যুদ্ধ করি’, ‘তীর হারা এই ঢেউয়ের সাগর’, ‘রক্তের প্রতিশোধ রক্তেই নেব আমরা’। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী বাংলাদেশ মুক্তি সংগ্রামী শিল্পী সংস্থায় যোগ দেন। তারা বিভিন্ন রিফিউজি ক্যাম্প এবং মুক্তাঞ্চলে ঘুরে ঘুরে মুক্তিযোদ্ধা ও সাধারণ মানুষকে গান শোনাতেন।

শিল্পী শাহীন সামাদকে নজরুলসংগীতে অসামান্য অবদানের জন্য ২০১৬ সালে একুশে পদক প্রদান করে বাংলাদেশ সরকার।

রবীন্দ্রসংগীতশিল্পী পাপিয়া সারোয়ার মারা গেছেন