ড্রেজিংয়ে বালু ফেলে ফসলি জমি, চিংড়ী ঘের ও লক্ষ লক্ষ টাকার মাছ মেরে ফেলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন পালন করেছে এলাকাবাসী।
শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি কাটাখালী এলাকায় পুলিশ প্রশাসনের মাধ্যমে ড্রেজার বন্ধ করে এসকল কর্মসুচি পালন করে তারা। ফলে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান একরম কর্মকান্ডে মোংলা বন্দরের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। এতে নারী-পুরুষ ও শিশু সহ হাজারও এলাকাবাসী অংশ নেয়।
পশুর নদী থেকে বল্কহেড বোঝাই ড্রেজিংয়ের বালু ডাম্পিং করছে “মেসার্স এ জেড” নামের একটি ড্রেজিং কোম্পানী। তাদের প্রতিনিধিরা বন্দরের অধিগ্রহন করা (ডাইক) জায়গা রেখে মালিকানা কৃষি জমিতে বালু ফেলে ফসল, মাছ ও চিংড়ী ঘের নষ্ট করছে বলে অভিযোগ করে ভুক্তভোগীরা। তাই নষ্ট করা কৃষি জমি রক্ষা ও ক্ষতিপুরণের দাবীতে ক্ষতিগ্রস্ত জমির পাশে কৃষকরা সমোবেত হয়ে মানববন্ধনের আয়োজন করেন।
এলাকাবাসীর দাবী, চিলা এলাকার হাজারো অসহায় মানুষদের কৃষি জমিতে ধান ও মৎস্য খামার করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করে আসছে। কিন্ত ড্রেজিং কোম্পানীর কিছু লোক বন্দর কর্তৃপক্ষের নিজেস্ব অধিগ্রহনকৃত জমি (ডাইক) রেখে মালিকানা ফসলি ও মাছ চাষের ঘেরের জমিতে অনুমতি বিহিন বালু ফেলে ভরাট করে ফেলছে বলে দাবী এলাকাবাসীর। কিন্ত এসকল অসহায় মানুষগুলোর জমি নষ্ট করে ক্ষতিপুরন না দিয়ে জোরপূর্বক বালু ডাম্পিংয়ের ফলে ফসলি জমি ও জলাভূমির ব্যাপক ক্ষতি করছে। যার ফলে তারা চরম ক্ষতির মুখে পরছে, হুমকির মুখে পড়তে যাচ্ছে পরিবেশ ও জীববৈচিত্র। অদুর ভবিষ্যাতে বালু ঝড়ের আগ্রাসনে বসবাসের অনুপযোগি পরিবেশের শংঙ্কায় চরম হতাশার মধ্যে রয়েছেন এলাকার ভুক্তভোগীরা। ক্ষতিগ্রস্তরা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ দিলেও প্রশাসনের নির্দেশনাও মানছেন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন। তাই পুলিশ প্রশাসন, এলাকার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও এলাকাবাসীর সম্মিলিত ভাবে এ বিক্ষোভ ও মানববন্ধন কর্মসুচি পালন করেছে।
তবে ড্রেজিং কোম্পানীর ঠিকাদারের প্রতিনিধি ডাইক সুপারভাইজার গনি শেখ বলেন, মালিকানা জমিতে নয়, বন্দরের চিহ্ণিত করা জমিতেই বালু ফেলা হচ্ছে। তবে মেশিন বসানোর সময় সামান্য কিছু ক্ষতি হলেও তা পরবর্তীতে তা সামাধান করা হয়েছে।
স্থানীয় বিএনপি নেতা ও চিলা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মোঃ আবু তালেব বলেন, মোংলা বন্দর আমাদের সচল রাখতে হবে, কিন্ত এলাকার অসহায় মানুষদের ক্ষতি করে নয়। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের লোকজন রাতের অন্ধকারে ড্রেজিংয়ের পাইপ খুলে বারু ভরাটের নামে সাধারন মানুষের ব্যাপক ক্ষতি করেছে। এসকল মানুষের ক্ষতিপুরন সহ অধিগ্রহনকৃত জমিছাড়া অন্য মালিকানা জমিতে বালু না ফেলার ব্যাপারে জোর দাবী জানায় তিনি।
দেশী-বিদেশী বানিজ্যিক জাহাজ আগামন-নির্গমনে চ্যানেল সচল রাখতে আর মোংলা সমুদ্র বন্দরকে উন্নয়নে প্রায় এক হাজার কোটি কোটি টাকা ব্যায় পশুর নদীতে ইনার বার ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই ড্রেজিংয়ের বালু উত্তেলনের কাজ করছে “ এ জেড কোম্পানী নামে,র একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। ২০২১ সালের ১৩ মার্চ এ কাজের শুভ উদ্বোধন করেণ তৎকালীন নৌ-পরিবহন মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী।