ঢাকা ১০:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোংলায় এনজিও  নবলোক’র পক্ষ থেকে গৃহহীন ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঘর

মোংলায় জমি আছে ঘর নেই, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে এলাকার অসহায় কর্মহীন ও হতদরিদ্র ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঠিকানা। সরকারের পাশাপাশী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে এসেছে উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষের মাথা গোজার ঠাই করে দিতে। তাই জলবায়ু সহনশীল এ পাকা ঘরের চাবী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় নবলোক পরিষদ এসকল কর্মহীন মানুষদের হাতে এ সব ঘরের চাবী তুলে দেন।
(২২ মে) দুপুরে মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া এলাকায় (আর এইচ এল) প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে জলবায়ু সহনশীল প্রথমে ২০টি ঘর হস্তান্তর করেণ। বাকি ঘরও পর্যাক্রমে দেয়া হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ তার ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্যের কারণে বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ প্রবণ দেশ। মোংলা সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিরিক্ত জোয়ার, নদীভাঙ্গন ও জলাবদ্ধতা এখানে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ অঞ্চলের মানুশষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী বারবার ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, নিরাপদ বাসস্থানের অভাবে চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে উপক’লবাসী।
এই বাস্তবতায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় নবলোক পরিষদ (আর এইচ এল) এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আর এ প্রকল্পের আওতায় মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা, চাঁদপাই, চিলা, মিঠাখালী ও সুন্দরবন ইউনিয়নের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য উঁচু জমিতে জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ঘর নির্মাণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
 তাই এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে (২২ মে) বৃহস্পতিবার মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড উলুবুনিয়া হতদরিদ্র রাবেয়া বেগমের বাড়িতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে ২০টি দুর্যোগ সহনশীল ঘর ২০ জন উপকারভোগী সদস্যের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নবলোক পরিষদের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন, বিশেষ অতিথি নবলোক পরিষদের জোনাল ম্যানেজার মোঃ মতিউর রহমান, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদ হাসান সহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মোঃ আব্দুল খালেক, আবু সাইদ সিদ্দিকী, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম সহ সহ (আর এইচ এল) প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাগন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী কাজী তোবারক হোসেন।
 অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবলোক পরিষদের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও (আর এইচ এল) প্রকল্পের ফোকাল পার্স মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন, এই প্রকল্প শুধু ঘর নির্মাণ নয়, বরং এটি দুর্যোগ মোকাবেলায় এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পথ দেখায়। এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি উপকারভোগীদের ঘর যথাযথভাবে ব্যবহারের ও সংরক্ষণের পরামর্শ দেন। সরকারের পাশাপাশী এই প্রকল্পের আয়োতায় ঘর পেয়ে মোংলার জনগণের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করে এটি আমাদের টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেসব পরিবার আগে বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাসে ঘরহীন হয়ে পড়ত, তারা আজ নিজের ঘরে নিরাপদে থাকবে। এটা যেন তাদের কাছে একটি স্বপ্নের  মতো।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের মাত্রা ও প্রকৃতি দ্রæত বদলাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে হতদরিদ্রদের জন্য নিরাপদ ঘর নির্মাণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবেলায় নবলোক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। (আর এইচ এল) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরগুলো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ও উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যা ঘরের স্থায়িত্ব ও দুর্যোগ প্রতিরোধক্ষমতা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি, ঘর নির্মাণ ছাড়াও উপকারভোগীদের জলবায়ু সহনশীল পদ্ধতিতে সবজি চাষ, ছাগল ও হাস-মুরগী পালন, বৃক্ষরোপণ, কাঁকড়া চাষের প্রশিক্ষণ সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা, এই ধরনের কার্যক্রম শুধু দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নয়, বরং সারাদেশে জলবায়ু অভিযোজন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

মোংলায় কোস্টগার্ডের আয়োজনে বিনামূল্যে চিকিৎসা সহায়তা ও ঔষধ বিতরণ 

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মোংলায় এনজিও  নবলোক’র পক্ষ থেকে গৃহহীন ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঘর

আপডেট সময় ১০:১৫:৫২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫
মোংলায় জমি আছে ঘর নেই, একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে এলাকার অসহায় কর্মহীন ও হতদরিদ্র ৯৪ পরিবার পেল স্বপ্নের ঠিকানা। সরকারের পাশাপাশী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনও এগিয়ে এসেছে উপকুলীয় অঞ্চলের মানুষের মাথা গোজার ঠাই করে দিতে। তাই জলবায়ু সহনশীল এ পাকা ঘরের চাবী স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় নবলোক পরিষদ এসকল কর্মহীন মানুষদের হাতে এ সব ঘরের চাবী তুলে দেন।
(২২ মে) দুপুরে মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের উলুবুনিয়া এলাকায় (আর এইচ এল) প্রকল্পের আওতায় হতদরিদ্রদের মাঝে জলবায়ু সহনশীল প্রথমে ২০টি ঘর হস্তান্তর করেণ। বাকি ঘরও পর্যাক্রমে দেয়া হবে বলে জানায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন কর্তৃপক্ষ জানায়, বাংলাদেশ তার ভৌগোলিক অবস্থান ও জলবায়ুগত বৈশিষ্ট্যের কারণে বিশ্বের অন্যতম দুর্যোগ প্রবণ দেশ। মোংলা সুন্দরবন সংলগ্ন উপকূলীয় অঞ্চলে ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, অতিরিক্ত জোয়ার, নদীভাঙ্গন ও জলাবদ্ধতা এখানে নিয়মিত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এ অঞ্চলের মানুশষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে উপকূলের দরিদ্র জনগোষ্ঠী বারবার ঘরবাড়ি হারাচ্ছে, নিরাপদ বাসস্থানের অভাবে চরম মানবিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছে উপক’লবাসী।
এই বাস্তবতায়, পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ)-এর সহায়তায় নবলোক পরিষদ (আর এইচ এল) এ প্রকল্পের কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। আর এ প্রকল্পের আওতায় মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা, চাঁদপাই, চিলা, মিঠাখালী ও সুন্দরবন ইউনিয়নের হতদরিদ্র জনগোষ্ঠীর জন্য উঁচু জমিতে জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীল ঘর নির্মাণের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
 তাই এই প্রকল্পের অংশ হিসেবে (২২ মে) বৃহস্পতিবার মোংলা উপজেলার সোনাইলতলা ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড উলুবুনিয়া হতদরিদ্র রাবেয়া বেগমের বাড়িতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রথমে ২০টি দুর্যোগ সহনশীল ঘর ২০ জন উপকারভোগী সদস্যের মাঝে হস্তান্তর করা হয়েছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে নবলোক পরিষদের উপ-নির্বাহী পরিচালক মোঃ আলতাফ হোসেন, বিশেষ অতিথি নবলোক পরিষদের জোনাল ম্যানেজার মোঃ মতিউর রহমান, সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার মাহমুদ হাসান সহ স্থানীয় ব্যাক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় ছিলেন মোঃ আব্দুল খালেক, আবু সাইদ সিদ্দিকী, মোঃ জাহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম সহ সহ (আর এইচ এল) প্রকল্পের সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তাগন। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রকল্প সমন্বয়কারী কাজী তোবারক হোসেন।
 অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নবলোক পরিষদের প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর ও (আর এইচ এল) প্রকল্পের ফোকাল পার্স মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান।
এসময় প্রধান অতিথি বলেন, এই প্রকল্প শুধু ঘর নির্মাণ নয়, বরং এটি দুর্যোগ মোকাবেলায় এক নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ও পথ দেখায়। এটি জাতীয় নিরাপত্তা ও টেকসই উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। তিনি উপকারভোগীদের ঘর যথাযথভাবে ব্যবহারের ও সংরক্ষণের পরামর্শ দেন। সরকারের পাশাপাশী এই প্রকল্পের আয়োতায় ঘর পেয়ে মোংলার জনগণের মাঝে নতুন আশার সঞ্চার করেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা করে এটি আমাদের টেকসই ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যেসব পরিবার আগে বৃষ্টি-জলোচ্ছ্বাসে ঘরহীন হয়ে পড়ত, তারা আজ নিজের ঘরে নিরাপদে থাকবে। এটা যেন তাদের কাছে একটি স্বপ্নের  মতো।
তিনি আরো বলেন, বাংলাদেশে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দুর্যোগের মাত্রা ও প্রকৃতি দ্রæত বদলাচ্ছে। এই প্রেক্ষাপটে হতদরিদ্রদের জন্য নিরাপদ ঘর নির্মাণ একটি বড় চ্যালেঞ্জ, যা মোকাবেলায় নবলোক নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে। (আর এইচ এল) প্রকল্পের আওতায় নির্মিত ঘরগুলো আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে ও উন্নতমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। যা ঘরের স্থায়িত্ব ও দুর্যোগ প্রতিরোধক্ষমতা নিশ্চিত করবে। পাশাপাশি, ঘর নির্মাণ ছাড়াও উপকারভোগীদের জলবায়ু সহনশীল পদ্ধতিতে সবজি চাষ, ছাগল ও হাস-মুরগী পালন, বৃক্ষরোপণ, কাঁকড়া চাষের প্রশিক্ষণ সহ আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হচ্ছে।
সংশ্লিষ্টরা ধারণা, এই ধরনের কার্যক্রম শুধু দুর্যোগপ্রবণ এলাকায় মানুষের জীবনমান উন্নয়নে নয়, বরং সারাদেশে জলবায়ু অভিযোজন ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।