ঢাকা ০৩:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ০৫ মে ২০২৫, ২১ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মোংলা বন্দর উন্নয়নে চীন সরকারের বড় ধরনের সহায়তা

মোংলা বন্দরকে আন্তজার্তিক বাজারে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বন্দরকে আধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব বন্দরে পরিনত করতে জাহাজ নোঙ্গর করার জেটি বর্দ্ধিতকরণ, কন্টেইনার ইয়ার্ড ও কার্গো হ্যান্ডিংয়ের জায়গা বর্ধিতকরণ, পন্য খালাস-বোঝাইয়ের জন্য নতুন ক্রেন ক্রয়, জলজান ক্রয় সহ এখনও যে সকল অবকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে তা পুরণ করার জন্যই এ বন্দরের সুদৃষ্টি রয়েছে বর্তমান সরকারের। সেই ঘাটতি পুরণে এরই মধ্যে চীন সরকারের সহায়তায় একটি বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তবে বন্দর ব্যাবহারে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা আর ব্যাবসায়ীদের আগ্রহ বাড়াতে না পারলে সকল উন্নয়নই বিফলে যাবে বলে ধারনা সংশ্লিষ্টদের।
বন্দর সুত্রে জানায়, মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে জিটুজি ভিত্তিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কার্য ও পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম সম্পাদনের নিমিত্তে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনষ্ট্রেকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে কমার্শিয়াল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর পক্ষে মি. কে চেংলিএং ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান এ চুক্তি সম্পাদন করেন।
বন্দর ব্যাবহারকারী  মাহবুবুর রহমান মানিক বলেন, বন্দর উন্নয়ন হবে এটা আমরাও চাই। কারণ, এ বন্দরে আমাদের বসবাস ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। সেই ১৯৫২ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠা হয়েছে কিন্ত বড় ধরণের কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এ বন্দরে। মোংলা বন্দর উন্নয়ন হউক তবে ব্যাবসায়ীদের আগ্রহ আর সুযোগ সুবিধা বাড়াতে না পারলে ব্যাবসায়ীরা এ বন্দর ব্যাবহার করবেনা। আর ব্যাবসায়ীরা যদি এ বন্দর ব্যাবহার না করে তবে উন্নয়ন করে কি হবে। প্রথমে অবকাঠানো সংগ্রহ, পাশাপাশী অন্য বন্দরের তুলনায় সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে ব্যাবসায়ীদের এ বন্দরের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।
মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মোংলা বন্দর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। মোংলা বন্দরকে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আর বন্দর উন্নয়নে যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দর একটি আধুনিক, স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) ও গ্রিন পোর্টে রূপান্তরিত হবে।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা, যা সরকারি অর্থায়ন ও প্রকল্প ঋণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। আর প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল শুরু হবে ২০২৫ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আধুনিক বন্দর সুবিধাসহ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি কন্টেইনার জেটি নির্মাণ, লোডেড এবং খালি কন্টেইনারের জন্য ইয়ার্ড নির্মাণ, জেটি এবং কন্টেইনার মজুত ও ইকুইপমেন্ট পরিচালন অটোমেশন সহ অন্যান্য সুবিধাদি এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তায়ন করা। প্রকল্পটি একনেক এবং উপদেষ্টা পরিষদের ক্রয়সংক্রান্ত কমিটিতে চলতি বছরের ২ ফেব্রæয়ারি এবং ১১ মার্চ অনুমোদিত হয়।
তিনি আরো বলেন, চিন সরকারের সহায়তা যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে, এটি বাস্তায়ন হলে মোংলা বন্দর আর পিছু তাকাতে হবে না। তখন এ বন্দর হবে বিশে^র বানিজ্যিক বাজারে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে একটি ব্যাবসা বান্ধব সমুদ্র বন্দর। ব্যাবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। যখনই বন্দর কর্মচঞ্চল বৃদ্ধি পাবে, এখানকার মানুষের কর্ম সংস্থান হবে, বৃদ্ধি পাবে সরকার ও বন্দরের রাজস্ব।
ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

মোংলা বন্দর উন্নয়নে চীন সরকারের বড় ধরনের সহায়তা

আপডেট সময় ১০:১৭:৪২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ মে ২০২৫
মোংলা বন্দরকে আন্তজার্তিক বাজারে বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। এ বন্দরকে আধুনিক ও পরিবেশ বান্ধব বন্দরে পরিনত করতে জাহাজ নোঙ্গর করার জেটি বর্দ্ধিতকরণ, কন্টেইনার ইয়ার্ড ও কার্গো হ্যান্ডিংয়ের জায়গা বর্ধিতকরণ, পন্য খালাস-বোঝাইয়ের জন্য নতুন ক্রেন ক্রয়, জলজান ক্রয় সহ এখনও যে সকল অবকাঠামোর ঘাটতি রয়েছে তা পুরণ করার জন্যই এ বন্দরের সুদৃষ্টি রয়েছে বর্তমান সরকারের। সেই ঘাটতি পুরণে এরই মধ্যে চীন সরকারের সহায়তায় একটি বড় প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। তবে বন্দর ব্যাবহারে পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা আর ব্যাবসায়ীদের আগ্রহ বাড়াতে না পারলে সকল উন্নয়নই বিফলে যাবে বলে ধারনা সংশ্লিষ্টদের।
বন্দর সুত্রে জানায়, মোংলা বন্দরের সুবিধাদির সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ প্রকল্পের অধীনে জিটুজি ভিত্তিক সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে (ডিপিএম) কার্য ও পণ্য সরবরাহ কার্যক্রম সম্পাদনের নিমিত্তে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কনষ্ট্রেকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি) এবং মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মধ্যে কমার্শিয়াল চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আয়োজনে চায়না সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং কন্সট্রাকশন করপোরেশন (সিসিইসিসি)-এর পক্ষে মি. কে চেংলিএং ও মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের পক্ষে মোংলা বন্দরের চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান এ চুক্তি সম্পাদন করেন।
বন্দর ব্যাবহারকারী  মাহবুবুর রহমান মানিক বলেন, বন্দর উন্নয়ন হবে এটা আমরাও চাই। কারণ, এ বন্দরে আমাদের বসবাস ও ব্যাবসা প্রতিষ্ঠান। সেই ১৯৫২ সালে মোংলা বন্দর প্রতিষ্ঠা হয়েছে কিন্ত বড় ধরণের কোন উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি এ বন্দরে। মোংলা বন্দর উন্নয়ন হউক তবে ব্যাবসায়ীদের আগ্রহ আর সুযোগ সুবিধা বাড়াতে না পারলে ব্যাবসায়ীরা এ বন্দর ব্যাবহার করবেনা। আর ব্যাবসায়ীরা যদি এ বন্দর ব্যাবহার না করে তবে উন্নয়ন করে কি হবে। প্রথমে অবকাঠানো সংগ্রহ, পাশাপাশী অন্য বন্দরের তুলনায় সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করে ব্যাবসায়ীদের এ বন্দরের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে হবে।
মোংলা বন্দর চেয়ারম্যান রিয়ার এডমিরাল শাহীন রহমান বলেন, মোংলা বন্দর দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র বন্দর। মোংলা বন্দরকে আঞ্চলিক বাণিজ্যিক কেন্দ্রে পরিণত করতে বর্তমান সরকার আন্তরিকভাবে কাজ করছে। আর বন্দর উন্নয়নে যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে, এ প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্য দিয়ে মোংলা বন্দর একটি আধুনিক, স্বয়ংক্রিয় (অটোমেশন) ও গ্রিন পোর্টে রূপান্তরিত হবে।
প্রকল্পের প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা, যা সরকারি অর্থায়ন ও প্রকল্প ঋণের মাধ্যমে বাস্তবায়ন করা হবে। আর প্রকল্পের বাস্তবায়নকাল শুরু হবে ২০২৫ সালের জানুয়ারী থেকে ২০২৮ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এ প্রকল্পের প্রধান উদ্দেশ্য হলো, আধুনিক বন্দর সুবিধাসহ কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। এছাড়া প্রকল্পের প্রধান প্রধান কাজের মধ্যে রয়েছে ৩৬৮ মিটার দৈর্ঘ্যের দুটি কন্টেইনার জেটি নির্মাণ, লোডেড এবং খালি কন্টেইনারের জন্য ইয়ার্ড নির্মাণ, জেটি এবং কন্টেইনার মজুত ও ইকুইপমেন্ট পরিচালন অটোমেশন সহ অন্যান্য সুবিধাদি এ প্রকল্পের মাধ্যমে বাস্তায়ন করা। প্রকল্পটি একনেক এবং উপদেষ্টা পরিষদের ক্রয়সংক্রান্ত কমিটিতে চলতি বছরের ২ ফেব্রæয়ারি এবং ১১ মার্চ অনুমোদিত হয়।
তিনি আরো বলেন, চিন সরকারের সহায়তা যে প্রকল্প গ্রহন করা হয়েছে, এটি বাস্তায়ন হলে মোংলা বন্দর আর পিছু তাকাতে হবে না। তখন এ বন্দর হবে বিশে^র বানিজ্যিক বাজারে সুন্দর ও মনোরম পরিবেশে একটি ব্যাবসা বান্ধব সমুদ্র বন্দর। ব্যাবসায়ীদের সময় ও অর্থ দুটোই সাশ্রয় হবে। যখনই বন্দর কর্মচঞ্চল বৃদ্ধি পাবে, এখানকার মানুষের কর্ম সংস্থান হবে, বৃদ্ধি পাবে সরকার ও বন্দরের রাজস্ব।