চলমান বার্তা অনলাইন ডেস্ক:
ঢাকার মোহাম্মদপুরে এক যুবকের কবজি বিচ্ছিন্নের পর সেই ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় সাত জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-২। র্যাবের দাবি, এর আগেও গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা চলাতেন। শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করতেন। এরপর সেই নৃশংসতার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিতেন তারা।
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) ঢাকা ও মুন্সীগঞ্জের বাগেরহাটে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে আজ শনিবার দুপুরে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন বাহিনীর আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন রাফিদুল ইসলাম রানা ওরফে রাফাত (২৩), তুষার হাওলাদার (২৩), আহমেদ খান (২২), হাসান ওরফে গুটি হাসান (২৪), হানিফ হোসেন জয় (২৪), রমজান (২৩) ও রাজু।
সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা একটি সংঘবদ্ধ সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্য। গ্রুপটি ৪ থেকে ৫ বছর ধরে পরিচালনা করছেন গ্রেপ্তার রাফাত, তুষার ও আনোয়ার।
খন্দকার আল মঈন বলেন, মোহাম্মদপুরে সম্প্রতি আরমান নামে এক যুবকের হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন করে গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা। এরপর সেই ভিডিও ধারণ করে তারা ফেসবুকে ভাইরাল করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা কবজি কাটা ও ভিডিও ভাইরালের কথা স্বীকার করেছেন।
র্যাব জানায়, চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে আরমানের কবজি বিচ্ছিন্ন করার ঘটনায় আরমান বাদী হয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর থানায় গত ২৭ আগস্ট হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন। এরপর জড়িতদের গ্রেপ্তারের লক্ষে র্যাব গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র্যাব-২ এর একটি দল ৫ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের দেওয়া তথ্যে রাফিদুল ইসলাম রানা ও তুষার হাওলাদারকে মুন্সীগঞ্জের বাগেরহাট থেকে র্যাব-৬ এর আভিযানিক দল গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারকৃতরা পূর্ব শত্রুতার জেরে আরমানের কবজি কাটার কথা র্যাবকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন।
খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তররা রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে আসছে। গ্রুপে ১৫-২০ জন সদস্য রয়েছে। তারা মোহাম্মদপুর, আদাবর, বেড়িবাঁধ ও ঢাকা উদ্যান এলাকায় চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতিসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনা করছিল। এই গ্রুপের সদস্যরা পথচারীদের একাকি পেলে আকস্মিকভাবে ঘিরে ধরে চাপাতিসহ ধারালো অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে জোরপূর্বক অর্থ ও মূল্যবান সামগ্রী ছিনতাই করে। তারা ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসী হিসেবেও কাজ করে থাকে। মাদক ব্যবসায়ও জড়িত।
জিজ্ঞাসাবাদে পাওয়া তথ্যের বরাত দিয়ে খন্দকার আল মঈন বলেন, গ্রেপ্তাররা ইতোপূর্বেও বিভিন্ন সময়ে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার, চাঁদাবাজি, ছিনতাইয়ের উদ্দেশে বিভিন্ন জনকে একই কায়দায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে নৃশংসভাবে হামলা চালিয়ে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ বিচ্ছিন্ন করেছে। এরপর সেই নৃশংসতার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে নিজেদের অবস্থান জানান দিত তারা।