পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে বড় ভুমিকা রাখছে পার্টনার ফিল্ড স্কুল। কৃষকদের বাড়ির ওঠানে বা জমির পাশেই কোনো জায়গায় এই স্কুল পরিচালিত হয়ে থাকে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের স্মার্ট কৃষকে পরিণত করা। উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করা, ফসলের নিবিড়তা এবং বৃদ্ধি ও জলবায়ু সহিষ্ণু প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা। প্রোগ্রাম অন এগ্রিকালচারাল এন্ড রুরাল ট্রান্সফার সেশন ফর নিউট্রিশন এন্টারপ্রেনরশিপ এন্ড রেসিলিয়েন্স ইন বাংলাদেশ (পার্টনার) প্রকল্পের আওতায় এই স্কুলগুলো পরিচালিত হচ্ছে।
রাস্তার পাশে ও খোলা জায়গায় বসে ক্লাস করছেন একদল মানুষ। হাতে বই-খাতা বিভিন্ন বয়সের এই নারী-পুরুষরা হচ্ছেন কৃষক-কৃষাণি। হাতে কলমে শেখানো হচ্ছে পুষ্টি উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরী ও পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদের নানা উপায়। কৃষিতে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার ও উৎপাদন বৃদ্ধিতে এই পার্টনার ফিল্ড স্কুলের কার্যক্রম চলছে পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে ঘুরলেই চোখে পড়বে গ্রামের প্রান্তিক কৃষকদের এমন ব্যতিক্রমী স্কুল। কৃষি বিভাগের এমন স্কুলে হাতে-কলমে শেখানো হচ্ছে পুষ্টি উন্নয়ন, উদ্যোক্তা তৈরী ্র পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদের নানা কলাকৌশল। কৃষক-কৃষাণিদের অভিনয়ের মাধ্যমে শেখানো হয় সারের গুনাগুন ও ব্যবহার। ফসলের মাঠের পাশেই কিংবা বাগানের খোলা জায়গায় হয় এই বিদ্যালয়ের ক্লাস। এখান থেকে শিক্ষা নিয়ে ফসলের রোগ বালাই দমন ও উৎপাদন বৃদ্ধির পাশাপাশি পারিবারিক পুষ্টির চাহিদা মেটাতে ভূমিকা রাখছেন কৃষক-কৃষাণিরা।
উপজেলার প্রতিটি স্কুলে ২৫ জন কৃষক-কৃষাণি সপ্তাহে এক দিন তিন ঘন্টা করে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ পার্টনার ফিল্ড স্কুল পরিচালনায় সহযোগিতা করেন। উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পরিচালিত হচ্ছে পার্টনার ফিল্ড স্কুল। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে শুরু হওয়া প্রকল্প চলবে ২০২৮ সালের জুন পর্যন্ত। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হলো কৃষকদের স্মার্ট করে তোলা। পুষ্টি উন্নয়ন , উদ্যোক্তা তৈরী ও পরিবেশ বান্ধব চাষাবাদের নানা প্রযুক্তি সম্প্রসারণ করা। উপজেলা কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে এই প্রকল্প শুরু হয়েছে। বর্তমানে উপজেলার মির্জাপুর, তোড়িয়া, আলোয়াখোয়া, বলরামপুর ইউনিয়নে পার্টনার ফিল্ড স্কুল চলমান রয়েছে। অতিরিক্ত কৃষি অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান, পার্টনার প্রকল্পের আওতায় উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধিনে পার্টনার ফিল্ড স্কুলের কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
উপজেলা কৃষি অফিসার মোস্তাক আহমেদ জানান, কৃষকদের স্মার্ট করতে প্রায় প্রতিটি ইউনিয়নে পার্টনার ফিল্ড স্কুল পরিচালিত হচ্ছে। ২৫জন কৃষক-কৃষাণির অংশগ্রহণে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন কলাকৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ সবজি এবং ধানের বীজ থেকে শুরু করে যে কোন ফসলের বীজ উৎপাদন ও নিরাপদ পদ্ধতিতে কিভাবে ফসল উৎপাদন করতে পারে সেই বিষয়ে শেখানো হয়। এই স্কুলে সপ্তাহে এক দিন করে দশটি সেশনে তিন ঘন্টা করে প্রশিক্ষণ প্রদান করা হয়।
প্রশিক্ষণার্থী কৃষক-কৃষাণিরা বলেন, এখান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে আমরা কৃষিতে ফসল উৎপাদন বৃদ্ধির বিষয় অবগত হয়েছি। ফলে কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন বৃদ্ধি করে আমরা আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছি। কৃষক-কৃষাণিরা আরো বলেন, আগে সনাতন পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হতো। এই প্রশিক্ষণ পাওয়ার পর স্মার্ট কৃষকে পরিণত হয়েছি। এখন কৃষিতে উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে অধিক ফসল উৎপাদন করতে সক্ষম হবো।