ঢাকা ০২:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১০ জানুয়ারী ২০২৫, ২৬ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কমিউনিটি গাইডলাইনে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা মেটার

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডস-এর স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মেটা সম্প্রতি তাদের কমিউনিটি গাইডলাইন বা কনটেন্ট মডারেশন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘোষণা করেছে, যার ফলে আরও বিতর্কিত এবং ক্ষতিকর ভাষার ব্যবহার অনুমোদিত হবে। বৈষম্যমূলক মন্তব্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যের ওপর থেকে কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে মেটা।

আজ (৮ জানুয়ারি) বুধবার এনডিটিভি’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটার নতুন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার জোয়েল কেপলান ব্লগ পোস্টে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, টিভি বা কংগ্রেসের মঞ্চে যে ধরনের কথা বলা যায়, তা সোশ্যাল মিডিয়াতে বলা না যাওয়ার বিষয়টি অন্যায়। মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো এমন জায়গা যেখানে মানুষ মুক্তভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। এটাই মুক্ত বক্তব্য।

মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গও এই পরিবর্তনকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, কোম্পানির পুরনো নিয়মগুলোতে মূলধারার আলোচনার সাথে অমিল ছিল। নতুন নিয়মগুলো আরও উন্মুক্ত আলোচনার সুযোগ প্রদান করবে, যদিও তাতে কিছু বিরূপ মন্তব্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

নতুন এই নীতির প্রধান পরিবর্তনগুলো হলো,
ভাষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া: মেটা নতুন নীতিতে জানিয়েছে যে, তারা এখন থেকে নারীদের ‘গৃহস্থালি সম্পদ বা প্রোপার্টি’ হিসেবে উল্লেখ করতে, কৃষ্ণাঙ্গদের ‘খামারের যন্ত্রপাতি’ হিসেবে সম্বোধন করতে এবং ট্রান্স জেন্ডারদের ‘নন-বাইনারী মানুষ’ হিসেবে আখ্যা দিতে কোনো বাধা রাখবে না।
ঘৃণামূলক আচরণ নীতির পরিবর্তন: আগের নীতিতে বলা ছিল, ঘৃণামূলক বক্তব্য অফলাইন সহিংসতার উত্স হতে পারে, সেটি এখন মেটার নতুন নীতির আওতায় আর থাকবে না। ফলে, এই ধরনের ভাষা ও বক্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো প্রক্রিয়া থাকছে না।
কোভিড-১৯ এবং জাতিগত বিদ্বেষ: নতুন নীতির আওতায়, ব্যবহারকারীরা এখন কোভিড-১৯ মহামারীকে বিশেষ জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত করতে পারবেন। যেমন, চীনা জনগণের সাথে করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
চলছে সমালোচনা
মেটার এই পরিবর্তনগুলো ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন এবং অনলাইন নিরাপত্তা কর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মেটার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক ভাষা এবং বৈষম্যের বৃদ্ধি করবে এবং এর ফলে বাস্তব জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। বিশেষত, ট্রান্স জেন্ডার, নারী, এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীসমূহের জন্য এই পরিবর্তনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়া, অনেকেই বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো মেটার সামাজিক দায়িত্বের পরিপন্থী, যা আগে বৈষম্যমূলক ভাষার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল।

মেটার অবস্থান
তবে মেটা এই সিদ্ধান্তকে মুক্ত মতামত এবং খোলামেলা আলোচনার প্রেরণা হিসেবে তুলে ধরছে। যেহেতু মেটা তাদের কনটেন্ট মডারেশন নীতি পুনর্বিবেচনা করছে, দেখা যাবে কিভাবে এই পরিবর্তনগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা এবং বৃহত্তর আলোচনার ওপর প্রভাব ফেলে।

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

কমিউনিটি গাইডলাইনে বড় পরিবর্তনের ঘোষণা মেটার

আপডেট সময় ০২:২৮:০৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ জানুয়ারী ২০২৫

ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং থ্রেডস-এর স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান মেটা সম্প্রতি তাদের কমিউনিটি গাইডলাইন বা কনটেন্ট মডারেশন নীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন ঘোষণা করেছে, যার ফলে আরও বিতর্কিত এবং ক্ষতিকর ভাষার ব্যবহার অনুমোদিত হবে। বৈষম্যমূলক মন্তব্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যের ওপর থেকে কিছু বিধিনিষেধ তুলে নেয়ায় যা ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে মেটা।

আজ (৮ জানুয়ারি) বুধবার এনডিটিভি’র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়, মেটার নতুন গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স অফিসার জোয়েল কেপলান ব্লগ পোস্টে এই সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে বলেন, টিভি বা কংগ্রেসের মঞ্চে যে ধরনের কথা বলা যায়, তা সোশ্যাল মিডিয়াতে বলা না যাওয়ার বিষয়টি অন্যায়। মেটার প্ল্যাটফর্মগুলো এমন জায়গা যেখানে মানুষ মুক্তভাবে নিজেদের মতামত প্রকাশ করতে পারে। এটাই মুক্ত বক্তব্য।

মেটা প্রধান মার্ক জাকারবার্গও এই পরিবর্তনকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, কোম্পানির পুরনো নিয়মগুলোতে মূলধারার আলোচনার সাথে অমিল ছিল। নতুন নিয়মগুলো আরও উন্মুক্ত আলোচনার সুযোগ প্রদান করবে, যদিও তাতে কিছু বিরূপ মন্তব্য ও ঘৃণামূলক বক্তব্যও অন্তর্ভুক্ত হতে পারে।

নতুন এই নীতির প্রধান পরিবর্তনগুলো হলো,
ভাষার ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া: মেটা নতুন নীতিতে জানিয়েছে যে, তারা এখন থেকে নারীদের ‘গৃহস্থালি সম্পদ বা প্রোপার্টি’ হিসেবে উল্লেখ করতে, কৃষ্ণাঙ্গদের ‘খামারের যন্ত্রপাতি’ হিসেবে সম্বোধন করতে এবং ট্রান্স জেন্ডারদের ‘নন-বাইনারী মানুষ’ হিসেবে আখ্যা দিতে কোনো বাধা রাখবে না।
ঘৃণামূলক আচরণ নীতির পরিবর্তন: আগের নীতিতে বলা ছিল, ঘৃণামূলক বক্তব্য অফলাইন সহিংসতার উত্স হতে পারে, সেটি এখন মেটার নতুন নীতির আওতায় আর থাকবে না। ফলে, এই ধরনের ভাষা ও বক্তব্যের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার কোনো প্রক্রিয়া থাকছে না।
কোভিড-১৯ এবং জাতিগত বিদ্বেষ: নতুন নীতির আওতায়, ব্যবহারকারীরা এখন কোভিড-১৯ মহামারীকে বিশেষ জাতিগত গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্কিত করতে পারবেন। যেমন, চীনা জনগণের সাথে করোনা ভাইরাসের সম্পর্ক তৈরি করার ক্ষেত্রে আর কোনো নিষেধাজ্ঞা থাকবে না।
চলছে সমালোচনা
মেটার এই পরিবর্তনগুলো ব্যাপক সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। মানবাধিকার সংগঠন এবং অনলাইন নিরাপত্তা কর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন যে, মেটার এই সিদ্ধান্ত সামাজিক মাধ্যমে বিদ্বেষমূলক ভাষা এবং বৈষম্যের বৃদ্ধি করবে এবং এর ফলে বাস্তব জীবনে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। বিশেষত, ট্রান্স জেন্ডার, নারী, এবং সংখ্যালঘু গোষ্ঠীসমূহের জন্য এই পরিবর্তনগুলো ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এছাড়া, অনেকেই বলছেন, এই পরিবর্তনগুলো মেটার সামাজিক দায়িত্বের পরিপন্থী, যা আগে বৈষম্যমূলক ভাষার বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিল।

মেটার অবস্থান
তবে মেটা এই সিদ্ধান্তকে মুক্ত মতামত এবং খোলামেলা আলোচনার প্রেরণা হিসেবে তুলে ধরছে। যেহেতু মেটা তাদের কনটেন্ট মডারেশন নীতি পুনর্বিবেচনা করছে, দেখা যাবে কিভাবে এই পরিবর্তনগুলো সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা এবং বৃহত্তর আলোচনার ওপর প্রভাব ফেলে।