মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটি (এমটিপিএস) মহাসচিব লায়ন এম.এস.খান, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে গনমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে বলেন, বিভিন্ন সেক্টরে সেবা নিতে গিয়ে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি দূর্নীতির শিকার হন। তিনি নারীর প্রতি সহিংসতা-নির্যাতন ও বৈষম্য প্রতিরোধে কার্যকর নিয়ন্ত্রণের পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান।
এম.এস.খান বলেন, মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটি মনে করে বাংলাদেশে প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার উপজাত হিসেবে অনলাইনে সহিংসতা ও নির্যাতন থেকে নারীর সুরক্ষা নিশ্চিতে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানের দক্ষতা ও সক্রিয়তা বৃদ্ধির পাশাপাশি দূর্নীতি বন্ধ করতে হবে। অন্যথায় প্রযুক্তিনির্ভর ডিজিটাল বাংলাদেশে নারীর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন সম্ভব হবে না, বরং নারীরা আরও পিছিয়ে পড়ার ঝুঁকি রয়েছে। প্রত্যাশিত মানের সমতা অর্জনে এখনও নারীরা অনেক পিছিয়ে রয়েছে, বিশেষ করে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনে নারীর অংশগ্রহণে লৈঙ্গিক বৈষম্য তো রয়েছেই।
তিনি বলেন, প্রযুক্তির বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে বেড়ে চলা অনলাইন সহিংসতাও নারীর প্রতি আতঙ্কজনক। ‘অনলাইনে অশ্লীল, যৌন হয়রানিমূলক বার্তা ও ছবি পাঠানো, ভুয়া আইডি তৈরির মাধ্যমে সহিংসতার শিকার হওয়ার ঘটনা প্রতিনিয়ত গণমাধ্যমের মাধ্যমে আমাদের সামনে আসছে। নির্ভরযোগ্য গবেষণা পর্যবেক্ষণ থেকে আমরা দেখছি, অনলাইনে প্রায় ৬৪ শতাংশ নারী সহিংসতার শিকার হচ্ছেন এবং তা ক্রমাগত বাড়ছে। অনলাইন সহিংসতার ফলে মানসিক আঘাত, হতাশা, উদ্বেগ, ট্রমার শিকার হচ্ছেন নারীরা। নারীকে অনলাইন সহিংসতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে না পারলে নারী ক্ষমতায়ন বা সমতা অর্জনের স্বপ্ন বাস্তবে রূপান্তর করা সম্ভব হবে না।
তিনি আরো বলেন, দুর্নীতির কারণে পুরুষের তুলনায় নারী অনেক বেশি ঝুঁকির সম্মুখীন হন,’দুর্নীতি নারীর প্রতি সহিংসতা রোধের বিপরীতে ন্যায়বিচারকে বাধাগ্রস্ত করার পাশাপাশি জেন্ডার সমতা ও নারীর ক্ষমতায়নের অঙ্গীকারকে ভূলুণ্ঠিত করে। আমাদের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, স্বাস্থ্যসেবা ও অন্যান্য খাতগুলো থেকে সেবা নিতে গিয়ে পুরুষদের তুলনায় নারীরা বেশি হারে দুর্নীতির শিকার হয়েছেন।
এম.এস.খান বলেন, অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, পুরুষের দুর্নীতিলব্ধ সম্পদ আড়াল করতে নারীকে ব্যবহার করা হয়। তাই দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধের জন্য অবিলম্বে সুনির্দিষ্ট জাতীয় রূপরেখা তৈরি করে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নিতে, মানবাধিকার তথ্য পর্যবেক্ষণ সোসাইটি’র পক্ষ থেকে সরকারকে আহ্বান জানান।
প্রতিনিয়ত জীবনযুদ্ধে নানা প্রতিবন্ধকতার শিকার হচ্ছেন নারীরা৷ তারপরও নিজ প্রচেষ্টায় এদেশের নারীদের অগ্রযাত্রা থেমে নেই।নারীরা জীবনের সকল ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠিত হোক আপন যোগ্যতায়, আপন মহিমায় এই কামনা করছি। তাদের সুন্দর, নিরাপদ ভবিষ্যৎ বিনির্মাণে আমরাও তাদের পাশে থাকতে চাই।