ঈদের পর এপ্রিল মাসে দেশে প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এসেছে ২৭৫ কোটি ১৯ লাখ ৪০ হাজার মার্কিন ডলার। যা দেশীয় মুদ্রায় দাঁড়ায় ৩৩ হাজার ৪৩৬ কোটি সাত লাখ ১০ হাজার টাকা (প্রতি ডলার ১২১ টাকা ৫০ পয়সা হিসেবে)। আগের বছরের এপ্রিল তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। মাসের হিসাবে দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো এই এপ্রিলে। আজ রোববার (৪ মে) প্রকাশিত বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
পবিত্র রমজানে প্রবাসী আয়ের পালে হাওয়া লেগেছিল জানিয়ে ব্যাংক সংশ্লিষ্টরা বলেন, সেই হাওয়ায় গত মার্চ মাসে দেশে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় এসেছে। কিন্তু এপ্রিলে প্রবাসী আয়ের গতি কমেছে। কারণ পবিত্র ঈদুল ফিতরের টানা ছুটি ছিল ৯ দিন। এর মধ্যে এপ্রিলের পাঁচদিনও ছিল। এই প্রথম পাঁচ দিনে প্রবাসী আয়ে ভাটা পড়ে। কিন্তু এপ্রিল মাসের শেষ দিনগুলোতে প্রবাসী আয়ের গতি বেড়েছে। তারা বলেন, গত মার্চের তুলনায় বিদায়ী এপ্রিলে প্রবাসী আয় কমেছে। তবে আগের বছরের এপ্রিল তুলনায় চলতি বছরের এপ্রিলে প্রবাসী আয় বেড়েছে ৩৪ দশমিক ৬২ শতাংশ। দেশের ইতিহাসে গত মার্চের এই প্রবাসী আয় ছিল স্মরণকালের সেরা। আর ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এলো এই এপ্রিলে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় দেশে এসেছে ৯ কোটি ১৭ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আগের বছরের (২০২৪ সাল) এপ্রিলে প্রবাসী আয় এসেছিল ২০৪ কোটি ৪২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর মাসটিতে দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় এসেছিল ছয় কোটি ৮১ লাখ ৪১ হাজার ডলার। এই সময়ের ব্যবধানে বিদায়ী এপ্রিল মাসে দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় বেড়েছে দুই কোটি ৩৫ লাখ ৮৯ হাজার ডলার। অন্যদিকে চলতি বছরের মার্চে প্রবাসী আয় এসেছিল ৩২৯ কোটি ৫৬ লাখ ৩০ হাজার ডলার। মাসটিতে দৈনিক গড়ে প্রবাসী আয় দেশে এসেছিল ১০ কোটি ৬৩ লাখ ১০ হাজার ৬৪৫ ডলার। মার্চের এই প্রবাসী আয় ছিল স্মরণকালের সেরা।
গত এপ্রিলে বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ১৬১ কোটি ১০ লাখ ১০ হাজার মার্কিন ডলার। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৯৮ কোটি ৮৪ লাখ ৫০ হাজার ডলার এবং বিশেষায়িত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে ১৪ কোটি ৬৫ লাখ ১০ হাজার ডলার। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে দেশে প্রবাসী আয় এসেছে ৫৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
দেশের ব্যাংকগুলোর মধ্যে এপ্রিলে একক ব্যাংক হিসেবে সবচেয়ে বেশি প্রবাসী আয় এসেছে ইসলামী ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংকটির মাধ্যমে প্রবাসী আয় এসেছে ৪১ কোটি ১১ লাখ ১০ হাজার ডলার। প্রবাসী আয় আসার দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে সোনালী ব্যাংক। ব্যাংকটির মাধ্যমে এসেছে ৩৫ কোটি ৭২ লাখ ৭০ হাজার ডলার। এরপর অগ্রণী ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ কোটি ১৯ লাখ ৮০ হাজার ডলার, জনতা ব্যাংকের মাধ্যমে ২৩ কোটি ২৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ১৯ কোটি ৮৫ লাখ ৪০ হাজার ডলার দেশে এসেছে।