কাশ্মীর বিরোধকে কেন্দ্র করে ভারতের সঙ্গে তীব্র উত্তেজনার মধ্যেই দ্বিতীয় দফা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালিয়েছে পাকিস্তান। পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সোমবার (৫ মে) উৎক্ষেপণ করা এই ‘ফাতাহ’ ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা ছিল ১২০ কিলোমিটার। উত্তেজনার মধ্যে দুদিন আগে প্রথম ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালানোর পর আজ দ্বিতীয় দফা ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা চালালো দেশটি। খবর এএফপির।
দিল্লি গত মাসে ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে সন্ত্রাসী হামলার জন্য পাকিস্তানকে দোষারোপ করার পর থেকে দুই পরমাণু অস্ত্রধারী দেশের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে নতুন করে পাকিস্তানের এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা উত্তেজনায় নতুন মাত্রা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণের লক্ষ্য ছিল সেনাসদস্যদের অপারেশনাল প্রস্তুতি নিশ্চিত করা। এছাড়া, ক্ষেপণাস্ত্রের উন্নত নেভিগেশন ব্যবস্থা ও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যস্থলে আঘাতের প্রযুক্তিগত পরিমিতি যাচাই করাও ছিল এর উদ্দেশ্য।
এর আগে শনিবার পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী জানিয়েছিল, তারা ৪৫০ কিলোমিটার পাল্লার ভূমি থেকে ভূমিতে আঘাত করার মতো ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। তবে, এই দুটি পরীক্ষা ঠিক কোথায় চালানো হয়েছে তা উল্লেখ করেনি দেশটির সামরিক বাহিনী।
এদিকে, এতোসব সামরিক তৎপরতার পর পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরীফ জাতীয় প্রতিরক্ষায় সামরিক বাহিনীর পূর্ণ প্রস্তুতিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। এক বিবৃতিতে তিনি বলেছেন, ক্ষেপণাস্ত্রের এই সফল উৎক্ষেপণ পরিষ্কারভাবে এই চিত্রই তুলে ধরছে যে, পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা শক্ত হাতে রয়েছে।
কাশ্মীরের পেহেলগামে গত ২২ এপ্রিল সংঘটিত ওই সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি জানিয়েছিলেন, তিনি তার দেশের সামরিক বাহিনীকে যেকোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছেন। এই ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পেহেলগাম হামলার পাল্টা জবাব দেওয়ার জন্য। তবে পাকিস্তান এই অভিযোগের বিষয়ে শুরু থেকেই বলে আসছে এতে তাদের কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।
এরপর গত সপ্তাহে ইসলামাবাদ ভারতের সম্ভাব্য বিমান হামলার বিষয়ে সতর্ক করে দিয়ে বলেছিল, আগ্রাসনের এই ঘটনা ঘটলে তার সমুচিত জবাব দেওয়ার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছে।
বিরোধপূর্ণ কাশ্মীর ভূখণ্ড নিয়ে বেশ কয়েকবার যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া এই দুই প্রতিবেশীর প্রতি এরপর থেকেই আন্তর্জাতিকভাবে উত্তেজনা হ্রাসে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গন থেকে চাপ সৃষ্টি করা হয় দিল্লি ও ইসলামাবাদের ওপর।
তবে দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত ভূস্বর্গ হিসেবে পরিচিত কাশ্মীরকে নিয়ে উত্তেজনা কমেনি বরং বেড়েছে, যার প্রভাবে দুদেশের সীমান্তে সুসজ্জিত সামরিক বাহিনী সীমান্তের নিয়ন্ত্রণ রেখায় একে অপরের দিকে রাতের বেলায় গুলিবর্ষণ করছে। গত এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলছে গুলি বিনিময়ের এই ঘটনা।