‘জুলাই থেকে জুলাই : কি পেয়েছে বাংলাদেশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবির চেয়ারম্যান মোমিন মেহেদী বলেছেন, এক বছরেও লাশের রাজনীতি থেকে মুক্তি পায়নি দেশ। ৫ আগস্টের আন্দোলনের সময় জনগণ চেয়েছিলো লাশের রাজনীতি বন্ধ হবে। কিন্তু তা না হয়ে এক জুলাই থেকে আরেক জুলাই এসে সাধারণ মানুষ প্রতারিত হয়েছে।
১৮ জুলাই শুক্রবার বেলা ১১ টায় তোপখানা রোডস্থ বিজয় মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত কর্মসূচিতে তিনি আরো বলেন, দুঃখের সাথে বলতে হচ্ছে- ছাত্ররা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বিমূখ, শিক্ষকরা রাজনীতিমুখি, ব্যবসায়ীরা জনগণকে ঠকাতে ব্যস্ত, রাজনীতিকদের একটি অংশ সহিংসতা করে হলেও টাকা-ক্ষমতার পিছে ছুটছে, মধ্যিখানে নিন্মবিত্ত-মধ্য নিন্মবিত্তরা দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি-দুর্নীতি-সন্ত্রাস-চাঁদাবাজীর কষাঘাতে আহত। দেখার কেউ নেই, শোনার কেউ নেই’ বরং কোনো একটি বিশেষ জেলার মানুষ কেন নিজেদের জেলার সম্মান রক্ষায় প্রতিবাদ করেছে, সেই অপরাধে মানচিত্র থেকে সেই জেলার নাম-নিশানাই মুছে দিতে চাইছে একটি চক্র।
কর্মসূচিতে নতুনধারা বাংলাদেশ এনডিবির প্রেসিডিয়াম মেম্বার বীর মুক্তিযোদ্ধা ফজলুল হক, সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান শান্তা ফারজানা, ভাইস চেয়ারম্যান ডা. নূরজাহান নীরা, ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব কাজী মুন্নি আলম, যুগ্ম মহাসচিব মনির জামান, সাংগঠনিক সম্পাদক (বরিশাল) হরিদাস সরকার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আল আমিন বৈরাগী প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এসময় নেতৃবৃন্দ বলেন, এই সরকারের মুখপত্র প্রথম আলো শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ৫ আগস্ট থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে হামলা, সহিংসতা ও সংঘাতের ঘটনার সংবাদ ছেপেছে। তারা জানিয়েছিলো মাত্র ১৩ দিনে ২৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। শুধু কি এখানেই শেষ সারাদেশে গত বছরের ১৬ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত আন্দোলনে নিহত ৮৬৫ জন ছাড়াও পরবর্তীতে নিহত হয়েছে ৬ হাজার ৩ শ’রও বেশি মানুষ। যার অধিকাংশেরই ময়নাতদন্ত বা মামলা হয়নি। নিরবে দাফন করেছে, কোনো কোনো স্থানে জানাজাও দিয়েছে গোপনে, পাছে আবার পুরো পরিবারকেই না প্রাণ হারাতে হয়।
এসময় মোমিন মেহেদী আরো বলেন, শুধু কি মৃত্যু? লক্ষাধিক চুরি-ডাকাতির ঘটনার পাশাপাশি সাড়ে ৪ হাজারেরও অধিক ধর্ষণ-নিপীড়নের ঘটনা ঘটেছে। যার ১০ ভাগও রাজনৈতিক কারণে আইন-আদালত বা গণমাধ্যমে আসেনি। নতুনধারার রাজনীতির ১২ বছরের ধারাবাহিকতায় আমি গুমের শিকারও হয়েছি ২০১৮ সালে ফ্যাসিস্ট সরকারের রোষাণলে পড়ে, তারপরও বলতে বাধ্য হচ্ছি- আমরা এক ফ্যাসিস্ট থেকে মুক্তি পেতে গিয়ে আরেক ফ্যাসিস্টের কবলে পড়েছি। দেশের মানুষের মুক্তির সকল পথ আজ বন্ধ। দেশ চলছে রেমিটেন্স-এর উপর ভিত্তি করে; অথচ কয়দিন আগেও আশিক চৌধুরী নামক এক নব্য বাটপারের গুণাগুন গাইতে গাইতে গণমাধ্যমকে ক্লান্ত করে ফেলা হয়েছিলো। কোথায় আজ শান্তিতে নোবেল জয়ী ইউনূস, সারাদেশে যখন অশান্তির আগুন? অনতিবিলম্বে বাংলাদেশের মানুষের জন্য ন্যয্যতার জীবন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পদক্ষেপ না নিলে সাধারণ মানুষ প্রতিবিপ্লবের পথে অগ্রসর হবে, তখন আর কোনো বিদেশী ইউটিউবার, প্রবাসী নেতা অথবা ধর্মকে পূজি করে রাজনীতিতে সফল হওয়ার অপচেষ্টাকারী দলগুলোর ফাকাআওয়াজে জনগণ কান দেবে না। নিজেদের রাষ্ট্রিয় সমতা প্রতিষ্ঠায় স্বাধীনতা-স্বার্বভৌমত্ব-ধর্ম-মানবতা-সুশিক্ষা-সভ্যতা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় নিজেরাই বেছে নেবে বাংলাদেশকে-বাংলাদেশের মানুষকে বেছে নেয়ার জন্য নিবেদিত নেতৃত্ব।