ঢাকা ১০:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ অক্টোবর ২০২৪, ১৯ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম :
আবারো লেবাননে বিমান হামলা চালাল ইসরায়েল সাইবার নিরাপত্তাসহ সকল কালো আইন অবশ্যই বাতিল হবে : আসিফ নজরুল ১০ বছর পর বিশ্বকাপে জয় পেল বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দল টাইম ম্যাগাজিনের উদীয়মান ১০০ বিশ্বনেতার তালিকায় নাহিদ ইসলাম সরকারের সর্বত্র শেখ হাসিনার ভূতরা সক্রিয় : রিজভী শেখ হাসিনা দেশের বাইরে বসে এখনও ষড়যন্ত্র করছেন : শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী ১০ কোটিতে ডিসি নিয়োগ, কেলেঙ্কারির স্ক্রিনশট ফাঁস ড. ইউনূসের ৬৬৬ কোটি টাকা করের রায়ে বিব্রত হাইকোর্ট, নথি গেলো প্রধান বিচারপতির কাছে দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ৮ নির্দেশনা জামিন পেলেন মাহমুদুর রহমান

ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে,কিন্তু কেনে না: বিক্রেতা

কারওয়ানবাজারে ইলিশ মাছের দোকানে দাম শুনে বেশিরভাগ ক্রেতাই না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। বিক্রেতাদের কাছে এটি নতুন অভিজ্ঞতা। ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে,কিন্তু কেনে না বলেন এক  বিক্রেতা।বাজারে দোকানে ক্রেতাকে দাম জিজ্ঞেস করলেও কেনেননি কেউ। তারা সবাই দাম শুনে কিছু না বলে চলে যান।

বহু বছর ধরে মাছ বিক্রি করে আসা সুমনের কাছে এটি একটি নতুন অভিজ্ঞতা। ধনী মানুষ ছাড়া গত এক সপ্তাহে কারও কাছে ইলিশ বিক্রি করতে না পারার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এই বিক্রেতা বলেন, “কে গরিব আর কে ধনী, তা কাপড় দেখলেই বোঝা যায়। গরিব মানুষ দাম জিজ্ঞেস করে ঠিকই, কিন্তু কেনে না। বড়লোকরা একটু দামাদামি করলেও নেয়। তবে ইদানীং এ সংখ্যাটাও কমে গেছে। দাম বাড়ায় অনেক পরিচিত মধ্যবিত্ত কাস্টমারও হারাইছি।”

পরিচিত অনেকেই ১০ থেকে ১২ দিন আগেই বলে রেখেছে যেন, দাম যদি কমলে তারা কিনবে।

“কিন্তু দাম কমার খবরই তো নাই। তাদের আর কী ফোন দিমু ইলিশ নিতে?”

পাশের দোকানের বিক্রেতা হৃদয় আহমেদ বলেন, “মানুষ প্রচুর আগ্রহ নিয়ে এসে ইলিশের দাম জিগায়। কিন্তু দাম বলার পরে তাদের আর আগ্রহ দেখি না।

“ভাই, বিশ্বাস করেন এটা দেখতে আমাদেরও ভালো লাগে না। আমরা চাই যাতে মানুষ বেশি বেশি কিনতে পারে, এতে আমাদেরও বেচাকেনা বাড়বে। ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে, কেনে না।

জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে মাতামাতি আর গত কয়েক বছর ধরেই দামের ঊর্ধ্বগতি, দুটোই এখন তুমুল আলোচনায়। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের বক্তব্যে এ নিয়ে আলোচনা আরও বাড়ে।

তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই দফায় বলেছেন, এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে না। তবে সরকার সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এখনও রপ্তানি শুরু হয়নি, তবে গত শনিবার সিদ্ধান্ত আসার পর দাম দিয়েছে লাফ।

‘এত দাম! কেনা সম্ভব না’

কারওয়ানবাজারে দোকান ঘুরে ঘুরে দাম জিজ্ঞেস করছিলেন সরকারি কর্মকর্তা সাবিহা আক্তার। তবে কিনতে দেখা গেল না।

সুমনের দোকানে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ১৪০০ টাকা শুনে সাবিহা বলেন, “এত ছোট সাইজের ইলিশের এত দাম চাইলেন… নাহ! কেনা সম্ভব না।”

তিনি বলেন, “সরকার পতনের পর একবার ইলিশের দাম কমেছিল শুনেছিলাম। তখনও বাজারে এসে দেখেছি আসলে কমেনি। এরপর ইলিশ রপ্তানি করা হবে, এই তথ্যে দেখছি দাম আরও বেড়েছে।”

“দেশের মানুষ আগে ইলিশ পাবে, শুরুতে এটা বলা হলেও বাস্তবে তা দেখছি না। অতিরিক্ত দামের কারণে ইলিশ কিনতে পারছি না। আবার বাহিরে রপ্তানি করা হবে। এখন দাম তো আর কখনও নাগালে আসবে না।”

সুমনের দোকানে বুধবার ৭৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৪০০ টাকা কেজি দরে, ৯০০ গ্রাম ওজন হলে দাম ছিল ১৫০০ টাকা, ওজন ১ কেজি পার হলে দাম ১৬০০ টাকা।

পাশের হৃদয়ের দোকানে এক কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

হৃদয় বলেন, “ইলিশ যত বড় হবে, দাম তার তত বেশি। দাম এমনিতে বেশি ছিল। তার মধ্যে সরকারের রপ্তানির সিদ্ধান্তের পরে বাজার আরেকটু চড়া হইছে। প্রতি কেজিতে একশ টাকার উপরে বাড়ছে।”

সুমন বলেন, “দেশে চাহিদার তুলনায় যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশেই তো ইলিশের সংকট। এখন রপ্তানি হবে তাই ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়ছে। সামনে আরও বাড়তে পারে। কারণ, গরিবরা না কিনলেও বড়লোকরা ঠিকই ইলিশ কিনবে।”

দুই দোকানের ইলিশ নদীর দাবি করছেন সুমন ও হৃদয়। তবে ক্রেতারা তা মানছেন না।

আজিজ হাকিম নামে এক ক্রেতা বলেন, “আমি জীবনে প্রচুর ইলিশ কিনে খেয়েছি। কোনটা সাগরের আর কোনটা নদীর তা খুব ভালো করেই জানি। এখানে আসা বেশিরভাগ ইলিশ সাগরের। পদ্মার হলে দাম আরও বেশি হত।

“পদ্মার ইলিশ সিলভার কালারের, চিকচিক করবে। কিন্তু এগুলো তেমন না। আর গত সপ্তাহেও এখান থেকেই এক কেজির ইলিশ কিনছিলাম ১৫০০ টাকা দিয়ে। আজ ১৬০০ টাকার উপরে দাম চায়। পদ্মার হইলে তো দাম আরও দুই- তিনশ টাকা বেশি চাইত।”

জরিমানা করে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা

দাম যখন বেড়েই চলছে, তখন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ী আড়তে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে বুধবার।

কারওয়ান বাজার আড়তে ইলিশ ক্রয় সংক্রান্ত কোনো ক্রয় রসিদ না দেখে ৫ জন আড়তদারকে ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভবিষ্যতে ক্রয় এবং বিক্রয়ের রসিদ সংরক্ষণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

একই চিত্র যাত্রাবাড়ী আড়তেও। তবে সেখানে জরিমানা না করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘যৌক্তিক মূল্যে’ বিক্রি এবং সহজে দৃশ্যমান স্থানে মূল্যে তালিকা প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।

অভিযান হয়েছে চাঁদপুরেও। সেখানকার পাইকারি বাজার চাঁদপুরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ‘ন্যায্যমূল্যের’ চেয়ে অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি ৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছিলেন।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বলেন, “তার কাগজপত্র চেক করে দেখি তিনি কিনেছেন এক হাজার টাকা কেজি দরে।”

অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরকেও পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

ভারতে রপ্তানির ঘোষণার পর থেকে চাঁদপুরে কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে ইলিশের দাম। সেখানে এক কেজি ওজনের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ টাকায়। ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের দাম ১৪০০ থেকে ১৬৫০ টাকা, এক কেজির উপরে হলে মাছের দাম দুই হাজার টাকার বেশি।

তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরবরাহ করা ইলিশ মাছ কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

আরো পড়ুন:রপ্তানি বন্ধ, তবু কমছে না ইলিশের দাম

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে যাবে ৩ হাজার টন ইলিশ

লাগামছাড়া চালের বাজার,মুরগি-সবজিতে স্বস্তি

ট্যাগস

© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত

নামাজের প্রাণ ‘বিনয় ও একাগ্রতা’

সম্পাদক ও প্রকাশক

মোঃ মাহমুদুন্নবী জ্যোতি

অফিসঃ ২/২ আরকে মিশন রোড , ঢাকা।

ইমেলঃ chalomanbarta@yahoo.com, chalomanbarta@gmail.com

মোবাইলঃ ০১৭১১০৫৬৮৬৬, ০১৬৮১৯২৪০০০

ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে,কিন্তু কেনে না: বিক্রেতা

আপডেট সময় ০১:৪১:০১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪

কারওয়ানবাজারে ইলিশ মাছের দোকানে দাম শুনে বেশিরভাগ ক্রেতাই না কিনে ফিরে যাচ্ছেন। বিক্রেতাদের কাছে এটি নতুন অভিজ্ঞতা। ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে,কিন্তু কেনে না বলেন এক  বিক্রেতা।বাজারে দোকানে ক্রেতাকে দাম জিজ্ঞেস করলেও কেনেননি কেউ। তারা সবাই দাম শুনে কিছু না বলে চলে যান।

বহু বছর ধরে মাছ বিক্রি করে আসা সুমনের কাছে এটি একটি নতুন অভিজ্ঞতা। ধনী মানুষ ছাড়া গত এক সপ্তাহে কারও কাছে ইলিশ বিক্রি করতে না পারার কথা জানিয়েছেন তিনি।

এই বিক্রেতা বলেন, “কে গরিব আর কে ধনী, তা কাপড় দেখলেই বোঝা যায়। গরিব মানুষ দাম জিজ্ঞেস করে ঠিকই, কিন্তু কেনে না। বড়লোকরা একটু দামাদামি করলেও নেয়। তবে ইদানীং এ সংখ্যাটাও কমে গেছে। দাম বাড়ায় অনেক পরিচিত মধ্যবিত্ত কাস্টমারও হারাইছি।”

পরিচিত অনেকেই ১০ থেকে ১২ দিন আগেই বলে রেখেছে যেন, দাম যদি কমলে তারা কিনবে।

“কিন্তু দাম কমার খবরই তো নাই। তাদের আর কী ফোন দিমু ইলিশ নিতে?”

পাশের দোকানের বিক্রেতা হৃদয় আহমেদ বলেন, “মানুষ প্রচুর আগ্রহ নিয়ে এসে ইলিশের দাম জিগায়। কিন্তু দাম বলার পরে তাদের আর আগ্রহ দেখি না।

“ভাই, বিশ্বাস করেন এটা দেখতে আমাদেরও ভালো লাগে না। আমরা চাই যাতে মানুষ বেশি বেশি কিনতে পারে, এতে আমাদেরও বেচাকেনা বাড়বে। ইলিশ হয়ে গেছে জাদুঘরের মত, মানুষ দেখে, কেনে না।

জাতীয় মাছ ইলিশ নিয়ে মাতামাতি আর গত কয়েক বছর ধরেই দামের ঊর্ধ্বগতি, দুটোই এখন তুমুল আলোচনায়। গত ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতারের বক্তব্যে এ নিয়ে আলোচনা আরও বাড়ে।

তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর দুই দফায় বলেছেন, এবার দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে ইলিশ রপ্তানি করা হবে না। তবে সরকার সেই অবস্থান ধরে রাখতে পারেনি। তিন হাজার টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছে।

এখনও রপ্তানি শুরু হয়নি, তবে গত শনিবার সিদ্ধান্ত আসার পর দাম দিয়েছে লাফ।

‘এত দাম! কেনা সম্ভব না’

কারওয়ানবাজারে দোকান ঘুরে ঘুরে দাম জিজ্ঞেস করছিলেন সরকারি কর্মকর্তা সাবিহা আক্তার। তবে কিনতে দেখা গেল না।

সুমনের দোকানে ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ১৪০০ টাকা শুনে সাবিহা বলেন, “এত ছোট সাইজের ইলিশের এত দাম চাইলেন… নাহ! কেনা সম্ভব না।”

তিনি বলেন, “সরকার পতনের পর একবার ইলিশের দাম কমেছিল শুনেছিলাম। তখনও বাজারে এসে দেখেছি আসলে কমেনি। এরপর ইলিশ রপ্তানি করা হবে, এই তথ্যে দেখছি দাম আরও বেড়েছে।”

“দেশের মানুষ আগে ইলিশ পাবে, শুরুতে এটা বলা হলেও বাস্তবে তা দেখছি না। অতিরিক্ত দামের কারণে ইলিশ কিনতে পারছি না। আবার বাহিরে রপ্তানি করা হবে। এখন দাম তো আর কখনও নাগালে আসবে না।”

সুমনের দোকানে বুধবার ৭৫০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১৪০০ টাকা কেজি দরে, ৯০০ গ্রাম ওজন হলে দাম ছিল ১৫০০ টাকা, ওজন ১ কেজি পার হলে দাম ১৬০০ টাকা।

পাশের হৃদয়ের দোকানে এক কেজি ১০০ গ্রাম ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ১ হাজার ৮০০ টাকা কেজি দরে ও দেড় কেজি ওজনের ইলিশ আড়াই হাজার টাকা দরে বিক্রি হতে দেখা গেছে।

হৃদয় বলেন, “ইলিশ যত বড় হবে, দাম তার তত বেশি। দাম এমনিতে বেশি ছিল। তার মধ্যে সরকারের রপ্তানির সিদ্ধান্তের পরে বাজার আরেকটু চড়া হইছে। প্রতি কেজিতে একশ টাকার উপরে বাড়ছে।”

সুমন বলেন, “দেশে চাহিদার তুলনায় যে পরিমাণ ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে, তাতে মনে হচ্ছে দেশেই তো ইলিশের সংকট। এখন রপ্তানি হবে তাই ১০০ থেকে ১৫০ টাকা বাড়ছে। সামনে আরও বাড়তে পারে। কারণ, গরিবরা না কিনলেও বড়লোকরা ঠিকই ইলিশ কিনবে।”

দুই দোকানের ইলিশ নদীর দাবি করছেন সুমন ও হৃদয়। তবে ক্রেতারা তা মানছেন না।

আজিজ হাকিম নামে এক ক্রেতা বলেন, “আমি জীবনে প্রচুর ইলিশ কিনে খেয়েছি। কোনটা সাগরের আর কোনটা নদীর তা খুব ভালো করেই জানি। এখানে আসা বেশিরভাগ ইলিশ সাগরের। পদ্মার হলে দাম আরও বেশি হত।

“পদ্মার ইলিশ সিলভার কালারের, চিকচিক করবে। কিন্তু এগুলো তেমন না। আর গত সপ্তাহেও এখান থেকেই এক কেজির ইলিশ কিনছিলাম ১৫০০ টাকা দিয়ে। আজ ১৬০০ টাকার উপরে দাম চায়। পদ্মার হইলে তো দাম আরও দুই- তিনশ টাকা বেশি চাইত।”

জরিমানা করে দাম নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা

দাম যখন বেড়েই চলছে, তখন জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর কারওয়ান বাজার ও যাত্রাবাড়ী আড়তে বিশেষ অভিযান চালিয়েছে বুধবার।

কারওয়ান বাজার আড়তে ইলিশ ক্রয় সংক্রান্ত কোনো ক্রয় রসিদ না দেখে ৫ জন আড়তদারকে ৪২ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়। ভবিষ্যতে ক্রয় এবং বিক্রয়ের রসিদ সংরক্ষণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।

একই চিত্র যাত্রাবাড়ী আড়তেও। তবে সেখানে জরিমানা না করে ব্যবসায়ীদের সতর্ক করা হয়েছে। সেই সঙ্গে ‘যৌক্তিক মূল্যে’ বিক্রি এবং সহজে দৃশ্যমান স্থানে মূল্যে তালিকা প্রদর্শনের কথা বলা হয়েছে।

অভিযান হয়েছে চাঁদপুরেও। সেখানকার পাইকারি বাজার চাঁদপুরের বড় স্টেশন মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে ‘ন্যায্যমূল্যের’ চেয়ে অতিরিক্ত দাম চাওয়ায় এক ব্যবসায়ীকে তিন হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। তিনি ৬০০ গ্রাম ইলিশের কেজি দেড় হাজার টাকায় বিক্রি করছিলেন।

জেলা ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক নুর হোসেন বলেন, “তার কাগজপত্র চেক করে দেখি তিনি কিনেছেন এক হাজার টাকা কেজি দরে।”

অন্যান্য ব্যবসায়ীদেরকেও পর্যবেক্ষণ করার পাশাপাশি সতর্ক করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আগামীতেও এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।”

ভারতে রপ্তানির ঘোষণার পর থেকে চাঁদপুরে কেজিতে ১০০-১৫০ টাকা বেড়েছে ইলিশের দাম। সেখানে এক কেজি ওজনের পদ্মা-মেঘনার ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ১৮০০ থেকে ১৮৫০ টাকায়। ৭০০-৯০০ গ্রাম ওজনের দাম ১৪০০ থেকে ১৬৫০ টাকা, এক কেজির উপরে হলে মাছের দাম দুই হাজার টাকার বেশি।

তবে দক্ষিণাঞ্চল থেকে সরবরাহ করা ইলিশ মাছ কেজিতে ২০০-৩০০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে।

আরো পড়ুন:রপ্তানি বন্ধ, তবু কমছে না ইলিশের দাম

দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে যাবে ৩ হাজার টন ইলিশ

লাগামছাড়া চালের বাজার,মুরগি-সবজিতে স্বস্তি