কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলায় পাথরডুবী ইউনিয়নের পাথরডুবী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ উঠেছে ঐ বিদ্যালয়ের শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ২৫ শে নভেম্বর সোমবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অভিভাবকসহ স্থানীয় জনগন । যৌন হয়রানির শিকার ওই ছাত্রীর পরিবার অভিযুক্ত শিক্ষকের দৃষ্টান্তমূলক কঠোর শাস্তি দাবী করেছেন।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মোফাজ্জল হোসেন রোকন। তিনি ওই বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। এ ঘটনায় ২৭ নভেম্বর বুধবার দুপুরে অভিভাবক, শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিদ্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ করেন।
ঘটনা সূত্রে জানা যায়, সোমবার দুপুরে ওই বিদ্যালয়ের ফাকা ক্লাসরুমে উক্ত শিক্ষার্থীকে ডেকে নেয় অভিযুক্ত শিক্ষক। এ সময় তিনি কৌশলে ওই শিক্ষার্থীর শরীরের ষ্পর্শকাতর স্থানে হাত দেন। যৌন হয়রানির চেষ্টাও করেন। এরপর ওই ছাত্রী কান্নাকাটি করে তার সহপাঠীকে জানিয়ে স্কুল থেকে বাড়ী চলে যায়।
বাড়ি গিয়ে বিষয়টি পরিবারকে জানায়। পরদিন মঙ্গলবার অন্য শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসীদের মধ্যে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরপর বুধবার দুপুরে শিক্ষার্থীর অভিভাবকসহ স্থানীয়রা প্রধান শিক্ষকের কাছে বিচারের জোর দাবি জানায়।
ঘটনা শুনে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদ বিদ্যালয়ে ঘটনা তদন্তে এসে স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী নেতার সহযোগিতায় বিষয়টি ভিন্ন খাতে নেয়ার চেষ্টা করলে সহকারী শিক্ষা অফিসার আবুল কালাম আজাদকে ঐ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের রুমে প্রায় এক ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ করে রাখেন এবং বিক্ষোভ প্রদর্শন করেন।
খবর পেয়ে পাথরডুবি ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুস সবুর ঘটনাস্থলে গিয়ে অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জেমি, মারজানা, রিয়াদ, ইমরান বলেন, ওই ছাত্রী কান্না করতে করতে ক্লাশরুম থেকে বের হয়ে আমাদের জানান রোকন স্যার তাকে জোরপূর্বক গালে চুমু খেয়েছে ও গায়ে হাত দিয়েছে এবং ঘটনাটি কাউকে না বলতে বিভিন্ন প্রকার ভয় ভীতি দেখিয়ে হাতের মধ্যে একশ টাকা দেয়ার চেষ্টাও করেছে।
ছাত্রীর পরিবারের সদস্য শাহাদত ও জাকির হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে অভিযুক্ত শিক্ষকের আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ শাস্তির দাবী জানান।
ওই এলাকার তমছের, আব্দুস ছালাম, শামিম জানান, অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে এর আগেও ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগ রয়েছে। ফের তার বিরুদ্ধে একই অভিযোগ। এ ঘটনা তদন্ত সাপেক্ষে তার বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী জানান।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন রোকনের সঙ্গে যোগাযোগের করা হলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করেন।
এ বিষয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আনোয়ারা খাতুন বলেন, বিষয়টি নিয়ে শিক্ষা অফিসার তদন্তে এসেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আইগত ব্যবস্থা গ্রহন করবেন এটা আমি চাই।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার আখতারুল ইসলাম জানান, প্রাথমিক তদন্তে মনে হয়েছে ঘটনার সত্যতা আছে। পূর্নাঙ্গ তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।